আলিফ হোসেনঃ
রাজশাহীর তানোর ও মোহনপুরের সীমান্ত সংলগ্ন শিবনদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরিপক্ক তাল গাছ নিধন এবং পানি প্রবাহের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বাগান বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার সকালে এই গাছ কাটা হয়েছে। মোহনপুর উপজেলার ঘাষিগ্রাম ইউনিয়নের (ইউপি) মেলান্দী গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, মেলান্দী গ্রামের মৃত ইয়াকুব মৃধার পুত্র প্রভাবশালী হাফেজ মৃধা পুকুর পুনঃখননের মাটি দিয়ে কৃষি জমি ভরাট ও বাগান বাড়ি করছে, সেখানে যাতায়াতের জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের তাজা পরিপক্ক তাল গাছ কেটে রাস্তা করা হচ্ছে। এছাড়াও বাঁধের ধার কেটে ড্রেন করা হয়েছে এবং ফসলি জমি ভরাট করায় পানি নিষ্কাশনের পথে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু বিত্তবান এই প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে তারা প্রকাশ্যে কোনো প্রতিবাদ করতে পারছেন না। সরেজমিন তদন্ত করলেই এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, তাজা গাছ একটা কাটলেও যে অপরাধ, দশটা কাটলেও সেই অপরাধ। তিনি বলেন, এ গাছ কাটার অপরাধে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত যা দেখে অন্যরা ভয় পায়, তা না হলে অন্যরাও বাঁধের গাছ কাটতে উৎসাহী হয়ে উঠবে।
স্থানীয়রা জানান, প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কৃষি জমি, কোনো পুকুর, জলাশয়, খাল ও লেক ভরাট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেও (২০১০ সালে সংশোধিত) যেকোনো ধরনের কৃষি জমি জলাশয় ভরাট করা ও তাজা গাছ কাটা নিষিদ্ধ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাফেজ মৃধা বলেন, গ্রাম তাদের, তারা এখানে বসবাস করবেন, গ্রামের ভালো মন্দ তারা দেখবেন। তিনি বলেন, গ্রামে যাবার রাস্তা নাই, তাই তিনি নিজ উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ করছেন। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মৌখিক অনুমতি নিয়ে গাছ কেটেছেন এবং গাছের খুঁটি দিয়ে জনগণের বসার মাচান করে দিবেন।
এ বিষয় মুঠোফোনে জানতে চাইলে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, তিনি বাঁধের গাছ কাটার কোনো অনুমতি দেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, বাঁধের গাছ কাটা বা বাঁধ কেটে কাজ করার কোনো সুযোগ নাই, তিনি বলেন, উপসহকারী প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে ঘটনা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাউবো উপ-সহকারী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, লোকমুখে ঘটনা শুনেছি, আগামিকাল সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাঁধের ক্ষতি ও গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা করা হবে।
প্রিন্ট