ঢাকা , রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

দুই ওসির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, আসামি লাপাত্তা

জসীমউদ্দীন ইতিঃ

 

ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ভূল্লী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার দাবি করেছেন, তিনি আটক এক আসামিকে সদর থানায় হস্তান্তর করেছেন। অথচ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলছেন, তারা এমন কোনো আসামি গ্রহণ করেননি। এ ঘটনায় পুলিশের স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব পালন নিয়ে জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলীকে আটক করে ভূল্লী থানা পুলিশ।

 

ভূল্লী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সরকার শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানান, ওই দিন দুপুর ২টায় আটক ব্যক্তিকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কিন্তু (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভূল্লী থানা আমাদের কাছে কোনো আসামি হস্তান্তর করেনি। আমরা এমন কাউকে আটকও করিনি।

 

ভুল্লী থানার ওসির কথা বলতেই তিনি আরিফ নামে এক ব্যক্তি দেখিয়ে দেন কথা বলার জন্য। আরিফকে এমন প্রশ্ন করাতেই তিনি উগ্র আচরণ করে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।

 

এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে- তাহলে আসামি গেল কোথায়?

 

এ বিষয়ে জানতে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম এর সঙ্গে রাতেই যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। ওসির সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি। পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামের রহস্যজনক নীরবতা।

 

গোপন সূত্রের দাবি, মোহাম্মদ আলীকে আসলে সদর থানায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে গোপনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও সদর থানায় এমন অভিযোগ উঠেছিল।

 

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক দিন ধরেই শুনছি, টাকা দিলেই আসামি ছাড়া যায়। এর আগেও এমন এক ঘটনায় এক এএসআইকে বদলি করা হয়েছিল।

 

পুলিশের এমন ভূমিকা আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। অনেকেরই প্রশ্ন, আইনের শাসন কি কেবল দুর্বলদের জন্য? প্রভাবশালী হলে কি পুলিশও অসহায় হয়ে পড়ে?

 

এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায়, পুলিশের প্রতি জনসাধারণের আস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

দুই ওসির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, আসামি লাপাত্তা

আপডেট টাইম : ০৮:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
জসিমউদ্দীন ইতি, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি :

জসীমউদ্দীন ইতিঃ

 

ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ভূল্লী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সরকার দাবি করেছেন, তিনি আটক এক আসামিকে সদর থানায় হস্তান্তর করেছেন। অথচ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান বলছেন, তারা এমন কোনো আসামি গ্রহণ করেননি। এ ঘটনায় পুলিশের স্বচ্ছতা ও দায়িত্ব পালন নিয়ে জনমনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলীকে আটক করে ভূল্লী থানা পুলিশ।

 

ভূল্লী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সরকার শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানান, ওই দিন দুপুর ২টায় আটক ব্যক্তিকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কিন্তু (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভূল্লী থানা আমাদের কাছে কোনো আসামি হস্তান্তর করেনি। আমরা এমন কাউকে আটকও করিনি।

 

ভুল্লী থানার ওসির কথা বলতেই তিনি আরিফ নামে এক ব্যক্তি দেখিয়ে দেন কথা বলার জন্য। আরিফকে এমন প্রশ্ন করাতেই তিনি উগ্র আচরণ করে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।

 

এই পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে- তাহলে আসামি গেল কোথায়?

 

এ বিষয়ে জানতে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম এর সঙ্গে রাতেই যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। ওসির সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখছি। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি। পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামের রহস্যজনক নীরবতা।

 

গোপন সূত্রের দাবি, মোহাম্মদ আলীকে আসলে সদর থানায় নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে গোপনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও সদর থানায় এমন অভিযোগ উঠেছিল।

 

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক দিন ধরেই শুনছি, টাকা দিলেই আসামি ছাড়া যায়। এর আগেও এমন এক ঘটনায় এক এএসআইকে বদলি করা হয়েছিল।

 

পুলিশের এমন ভূমিকা আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করছে। অনেকেরই প্রশ্ন, আইনের শাসন কি কেবল দুর্বলদের জন্য? প্রভাবশালী হলে কি পুলিশও অসহায় হয়ে পড়ে?

 

এ বিষয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায়, পুলিশের প্রতি জনসাধারণের আস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।


প্রিন্ট