ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ডেন অ্যাসোসিয়েশনের পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় হুমায়রা তৃতীয় Logo তানোর পৌরসভা দাখিল মাদরাসা সভাপতি মালেককে সংবর্ধনা Logo তিল চাষে আগ্রহ হারিয়েছে আত্রাইয়ের কৃষকরা Logo রাস-আল-খাইমাহ চেম্বার এর চেয়ারম্যান মোঃ আলী আল নুয়াইমির সঙ্গে কনসাল জেনারেলের সাক্ষাৎ Logo নলছিটিতে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতির নামে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিক রিয়াজ হোসেনের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন Logo তানোরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে রুগ্ন গরু বিতরণ Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জ খাদ্যবিভাগে জান ও সাকিলা সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে Logo আলফাডাঙ্গা থানার ওসি স্ট্যান্ড রিলিজ Logo থানা থেকে পালিয়েও রক্ষা পাননি আ’লীগ নেতাঃ ‘ধরে’ আনলো পুলিশ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

২২টি মিলের মধ্যে অধিকাংশ মিলেরই অস্তিত্ব নেই

কুষ্টিয়ায় মিল বন্ধ দীর্ঘদিন, তবুও বরাদ্দ তালিকায় মিলের নাম

ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ায় ২২টি চাল মিলের মধ্যে অধিকাংশ মিলেরই অস্তিত্ব নেই । মিল বন্ধ দীর্ঘদিন,তবুও বরাদ্দ তালিকায় মিলের নাম। জেলায় অস্তিত্বহীন মিলের নামে চালের বরাদ্দ আজ নতুন নয়। বছরের পর বছর এমন অনিয়ম হয়ে আসলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না ওই সমস্ত মিলের বিরুদ্ধে। আর এমন অনিয়মের ফাঁকেই সংশ্লিষ্ট খাদ্য কর্মকর্তারা লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এর সঙ্গে খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার পাশাপাশি জড়িত প্রভাবশালী চালকল মালিকেরাও।

 

কুষ্টিয়ায় হাস্কিং এবং অটো মিলিয়ে সর্বমোট রাইস মিলের সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক। এসব মিলারদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করা হয়। সরকারের আপদকালীন চাল। চাল সরবরাহে চালকল মালিকদের যেপরিমান বরাদ্দ আসে তাতে বিপুল অর্থ পকেটে যায় মিলার অর্থাৎ চালকল মালিকদের। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চাল সরবরাহ লাভজনক হওয়ায় অস্তিত্বহীন মিলের নামেও দেয়া হয় চালের বরাদ্দ। যার সংখ্যাও কম নয়।

 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের বড়ইটুপি গ্রামের ‘ভাই ভাই’ রাইস মিল। ওই মিলের কোনো অস্তিত্ব নেই প্রায় এক যুগেরও বেশি সময়। অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়ায় মালিক সামসুল আলম মিলটি বন্ধ করে দিয়েছেন। বছরের পর বছর এই মিলের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাতে জন্মেছে আগাছা। বয়লারেরও অস্তিত্ব নেই। সাইনবোর্ড না থাকায় চেনারও উপায় নেই। অথচ বন্ধ এই মিলের নামে বছরের পর বছর আসে চালের বরাদ্দ। এবারের বিভাজনেও দেয়া হয়েছে ১৩ দশমিক ২৯০ মেট্রিক টন চালের বরাদ্দ।

 

মিলটির মালিক সামসুল আলম জানান, হাস্কিং মিলের ব্যবসা এখন আর নেই। অটো মিলের দাপটে মিলটি বন্ধ করা হয়েছে। তবে তার মিলের নামে বরাদ্দের বিষয়ে তিনি জানান, আমার মিলের নামে কে গুদামে চাল দেন তা আমি জানি না।

 

স্থানীয় বাসিন্দা শফিউল্লাহ জানান, এক সময় মিলটি বেশ জাকজমক ছিল। কিন্তু অর্থাভাবে মিলটি আর চালাতে পারেন না। চাতাল, বয়লার, বন্ধ প্রায় ১৫ বছর।

 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আরেকটি ‘রহমত’ রাইস মিল। এই মিলটিও বন্ধ হয়েছে প্রায় বছর তিনেক আগে। চালাতে না পারায় বিক্রি করে দিয়েছেন মালিক রেজাউল করিম। খাদ্য বিভাগের হিসেব বলছে রেজাউল করিম নিজেই সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন। তবে রেজাউল করিম বলেন তিনি এবিষয়ে কিছু জানেন না।

 

সদরের চেয়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা কুমারখালীর। ২২টি মিলের মধ্যে অধিকাংশ মিলেরই অস্তিত্ব নেই। ধানের চাতাল আছে, কার্যক্রম নেই। বছরের পর বছর ধরে বয়লারে আগুন জ্বলে না। চাল মিলে, ডাল, চিড়া-মুড়ি উৎপাদনে ব্যস্ত। কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় শরিফ রাইস মিল। প্রায় ১৫ বছর আগে চালের কারবার বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে ওই মিল হয়ে গেছে ডাল মিল। মিলের মালিক আবু ওয়ালী নোমান ডাল ব্যবসায়ে প্রতিষ্ঠিত। অথচ তার মিলের নামে বছরের পর বছর চালের বরাদ্দ দেয়া হয়। এবারও পেয়েছেন ১৩ দশমিক ৬৮০ মেট্রিক টন বরাদ্দ। তিনি জানান হাস্কিং মিলের ব্যবসা নেই। তাই বাধ্য হয়েই ডালের ব্যবসায়ে ঝুঁকেছেন তিনি। তবে খাদ্য গুদামে তিনি চাল সরবরাহ করেন না বলে জানান।

 

কুমারখালীর কাঞ্চনপুর ও নগর সাঁওতা এলাকার মোতালেব ও ওয়াসেল রাইস মিলের অবস্থাও অনেকটা একই রকম। মিল বন্ধ দীর্ঘদিন। তবুও বরাদ্দ তালিকায় তাদের মিলের নাম।

 

কীভাবে এবং কেনইবা অস্তিত্বহীন মিলের নামে বরাদ্দ দেয়া হয় চালের? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো মিলের নামে চালের বরাদ্দ দেয়ার আগে ওই সমস্ত মিল বরাদ্দ পাবার যোগ্য কিনা সেবিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে দেয়া হয় বরাদ্দ। কিন্তু খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা দায়সারা প্রতিবেদনে বন্ধ এবং অস্তিত্বহীন মিলের নামেও বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। বিনিময়ে এসব মিলারদের কাছ থেকে নির্দিষ্টহারে কমিশন পান। যার পরিমাণও কম নয়। কয়েক কোটি টাকা। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আল ওয়াজিউর রহমান ।

 

তিনি নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে জানান, অস্তিত্বহীন মিলের নাম বরাদ্দ তালিকায় নেই। যেসব মিল বন্ধ রয়েছে সেসব মিলের সঙ্গে চুক্তি করা হয়নি। তবে এর বাইরেও যদি কোনো মিলের অসঙ্গতি থাকলে ওইসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন এই খাদ্য কর্মকর্তা।

 

বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতা ও কুষ্টিয়া দেশ এগ্রো ফুডের স্বত্বাধিকারী এমএ খালেক জানান, সরকার কোনো মিলের সঙ্গে চুক্তি করার আগে মিলগুলো চাল সরবরাহের যোগ্য কিনা তা যাচাই বাছাই করে থাকে। যদি সঠিকভাবে তদন্ত করা হয় সেক্ষেত্রে এমন অনিয়ম হবার কথা নয়।

 

কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান জানান, চাল বরাদ্দের সঙ্গে আমাদের সংগঠন জড়িত নয়। তবে কেউ যদি এমন অনিয়মে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

 

সচেতন নাগরিক কমিটি কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু জানান, বছরের পর বছর অস্তিত্বহীন মিলের নামে চালের বরাদ্দের অভিযোগ শুনে আসছি কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট মিল মালিক এবং খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

 

চলতি আমন মৌসুমে জেলার প্রায় দুই শতাধিক মিলারদের কাছে ৪৭ টাকা কেজি দরে প্রায় ১৯ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ডেন অ্যাসোসিয়েশনের পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় হুমায়রা তৃতীয়

error: Content is protected !!

২২টি মিলের মধ্যে অধিকাংশ মিলেরই অস্তিত্ব নেই

কুষ্টিয়ায় মিল বন্ধ দীর্ঘদিন, তবুও বরাদ্দ তালিকায় মিলের নাম

আপডেট টাইম : ১১:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৫
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :

ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার

কুষ্টিয়ায় ২২টি চাল মিলের মধ্যে অধিকাংশ মিলেরই অস্তিত্ব নেই । মিল বন্ধ দীর্ঘদিন,তবুও বরাদ্দ তালিকায় মিলের নাম। জেলায় অস্তিত্বহীন মিলের নামে চালের বরাদ্দ আজ নতুন নয়। বছরের পর বছর এমন অনিয়ম হয়ে আসলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না ওই সমস্ত মিলের বিরুদ্ধে। আর এমন অনিয়মের ফাঁকেই সংশ্লিষ্ট খাদ্য কর্মকর্তারা লুটে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এর সঙ্গে খাদ্য বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার পাশাপাশি জড়িত প্রভাবশালী চালকল মালিকেরাও।

 

কুষ্টিয়ায় হাস্কিং এবং অটো মিলিয়ে সর্বমোট রাইস মিলের সংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক। এসব মিলারদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করা হয়। সরকারের আপদকালীন চাল। চাল সরবরাহে চালকল মালিকদের যেপরিমান বরাদ্দ আসে তাতে বিপুল অর্থ পকেটে যায় মিলার অর্থাৎ চালকল মালিকদের। তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, চাল সরবরাহ লাভজনক হওয়ায় অস্তিত্বহীন মিলের নামেও দেয়া হয় চালের বরাদ্দ। যার সংখ্যাও কম নয়।

 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের বড়ইটুপি গ্রামের ‘ভাই ভাই’ রাইস মিল। ওই মিলের কোনো অস্তিত্ব নেই প্রায় এক যুগেরও বেশি সময়। অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়ায় মালিক সামসুল আলম মিলটি বন্ধ করে দিয়েছেন। বছরের পর বছর এই মিলের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাতে জন্মেছে আগাছা। বয়লারেরও অস্তিত্ব নেই। সাইনবোর্ড না থাকায় চেনারও উপায় নেই। অথচ বন্ধ এই মিলের নামে বছরের পর বছর আসে চালের বরাদ্দ। এবারের বিভাজনেও দেয়া হয়েছে ১৩ দশমিক ২৯০ মেট্রিক টন চালের বরাদ্দ।

 

মিলটির মালিক সামসুল আলম জানান, হাস্কিং মিলের ব্যবসা এখন আর নেই। অটো মিলের দাপটে মিলটি বন্ধ করা হয়েছে। তবে তার মিলের নামে বরাদ্দের বিষয়ে তিনি জানান, আমার মিলের নামে কে গুদামে চাল দেন তা আমি জানি না।

 

স্থানীয় বাসিন্দা শফিউল্লাহ জানান, এক সময় মিলটি বেশ জাকজমক ছিল। কিন্তু অর্থাভাবে মিলটি আর চালাতে পারেন না। চাতাল, বয়লার, বন্ধ প্রায় ১৫ বছর।

 

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আরেকটি ‘রহমত’ রাইস মিল। এই মিলটিও বন্ধ হয়েছে প্রায় বছর তিনেক আগে। চালাতে না পারায় বিক্রি করে দিয়েছেন মালিক রেজাউল করিম। খাদ্য বিভাগের হিসেব বলছে রেজাউল করিম নিজেই সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেন। তবে রেজাউল করিম বলেন তিনি এবিষয়ে কিছু জানেন না।

 

সদরের চেয়ে আরও ভয়াবহ অবস্থা কুমারখালীর। ২২টি মিলের মধ্যে অধিকাংশ মিলেরই অস্তিত্ব নেই। ধানের চাতাল আছে, কার্যক্রম নেই। বছরের পর বছর ধরে বয়লারে আগুন জ্বলে না। চাল মিলে, ডাল, চিড়া-মুড়ি উৎপাদনে ব্যস্ত। কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় শরিফ রাইস মিল। প্রায় ১৫ বছর আগে চালের কারবার বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে ওই মিল হয়ে গেছে ডাল মিল। মিলের মালিক আবু ওয়ালী নোমান ডাল ব্যবসায়ে প্রতিষ্ঠিত। অথচ তার মিলের নামে বছরের পর বছর চালের বরাদ্দ দেয়া হয়। এবারও পেয়েছেন ১৩ দশমিক ৬৮০ মেট্রিক টন বরাদ্দ। তিনি জানান হাস্কিং মিলের ব্যবসা নেই। তাই বাধ্য হয়েই ডালের ব্যবসায়ে ঝুঁকেছেন তিনি। তবে খাদ্য গুদামে তিনি চাল সরবরাহ করেন না বলে জানান।

 

কুমারখালীর কাঞ্চনপুর ও নগর সাঁওতা এলাকার মোতালেব ও ওয়াসেল রাইস মিলের অবস্থাও অনেকটা একই রকম। মিল বন্ধ দীর্ঘদিন। তবুও বরাদ্দ তালিকায় তাদের মিলের নাম।

 

কীভাবে এবং কেনইবা অস্তিত্বহীন মিলের নামে বরাদ্দ দেয়া হয় চালের? খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোনো মিলের নামে চালের বরাদ্দ দেয়ার আগে ওই সমস্ত মিল বরাদ্দ পাবার যোগ্য কিনা সেবিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে দেয়া হয় বরাদ্দ। কিন্তু খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা দায়সারা প্রতিবেদনে বন্ধ এবং অস্তিত্বহীন মিলের নামেও বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। বিনিময়ে এসব মিলারদের কাছ থেকে নির্দিষ্টহারে কমিশন পান। যার পরিমাণও কম নয়। কয়েক কোটি টাকা। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আল ওয়াজিউর রহমান ।

 

তিনি নিজেদের পক্ষে সাফাই গেয়ে জানান, অস্তিত্বহীন মিলের নাম বরাদ্দ তালিকায় নেই। যেসব মিল বন্ধ রয়েছে সেসব মিলের সঙ্গে চুক্তি করা হয়নি। তবে এর বাইরেও যদি কোনো মিলের অসঙ্গতি থাকলে ওইসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন এই খাদ্য কর্মকর্তা।

 

বাংলাদেশ অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতা ও কুষ্টিয়া দেশ এগ্রো ফুডের স্বত্বাধিকারী এমএ খালেক জানান, সরকার কোনো মিলের সঙ্গে চুক্তি করার আগে মিলগুলো চাল সরবরাহের যোগ্য কিনা তা যাচাই বাছাই করে থাকে। যদি সঠিকভাবে তদন্ত করা হয় সেক্ষেত্রে এমন অনিয়ম হবার কথা নয়।

 

কুষ্টিয়া জেলা চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন প্রধান জানান, চাল বরাদ্দের সঙ্গে আমাদের সংগঠন জড়িত নয়। তবে কেউ যদি এমন অনিয়মে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

 

সচেতন নাগরিক কমিটি কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু জানান, বছরের পর বছর অস্তিত্বহীন মিলের নামে চালের বরাদ্দের অভিযোগ শুনে আসছি কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট মিল মালিক এবং খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

 

চলতি আমন মৌসুমে জেলার প্রায় দুই শতাধিক মিলারদের কাছে ৪৭ টাকা কেজি দরে প্রায় ১৯ হাজার মেট্রিক টন চাল কেনার চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কুষ্টিয়া খাদ্য বিভাগ।


প্রিন্ট