ঢাকা , সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo সিংড়ায় বাস ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষ: নিহত ২, আহত ২ Logo দৌলতপুর প্রেসক্লাবের প্রয়াত সভাপতির স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত Logo বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ফরিদপুর জেলা শাখার সদস্য সমাবেশ ও আংশিক কমিটি গঠন Logo দুধ দিয়ে গোসল করে যুবক বললেন, জীবনে আর কোনো দিন প্রেম করব না Logo বাঘায় বিএনপি’র দু’গ্রুপে দ্বন্দ্বে সংঘর্ষে, আহত-৭ Logo রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম, প্রতিবাদে বিক্ষোভ Logo তানোরে নছির কান্ডে নিঃস্ব কৃষক Logo ফরিদপুরে চার দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে ম্যাটস এর শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি Logo ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo স্কুলের সবাই কৃষক শিখছেন আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পদ্মার চরে অতিথি পাখি শিকারে ব্যস্ত শিকারীরা!

মোঃ জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

শীতে প্রতিবছরই অতিথি বা পরিযায়ী পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বাংলাদেশে আসে। প্রতি বছরের মতো এবারও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরে পরিযায়ী পাখিরা ভীড় করছে। তবে, অসাধু কিছু শিকারি এসব পাখি ধরে বাজারে বিক্রি করছেন বলে স্থানীয় পরিবেশ সংগঠকেরা অভিযোগ করেছেন। তাঁরা পদ্মার চরে প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার দাবি করেছেন।

 

এবার পদ্মার চরে বুনো হাঁস, ছোট সারস পাখি, বড় সারস পাখি, শামুকখোল, বালিহাঁস, হরিয়াল, কাদাখোঁচা, রাজসরালি, পাতিকুট, রামঘুঘু, নিশাচর, ডুবুরি পাখিসহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আশ্রয় নিয়েছে। তবে, জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে ও দেশীয় যন্ত্র ব্যবহার করে অবাধে এসব পাখি শিকার চলছে। এছাড়া চখা, পানকৌড়ি, দেশী বক ও শিকারিদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

 

জানা গেছে, উপজেলার মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এই ইউনিয়নের পদ্মার চরে এবার বিপুল পরিমাণে পরিযায়ী পাখি এসেছে। শিকারিরা বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চরে এসব পাখি শিকার করে আসছেন। পরে তাঁরা ভোরে বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য পাখিগুলো নিয়ে আসেন।

 

উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের পদ্মার চরে সরেজমিনে দেখা যায়, পাখি শিকারিরা জাল পেতে পাখি ধরতে বসে আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, প্রতিদিন বিকেল হলেই চরে পাখি ধরতে বড় জাল পাতা হয়। জালে পাখি আটকা পড়লে শিকারিরা তা ধরে বিক্রি করে দেয়। আবার অনেক সময় নিজেরাই রান্না করে খায়। পদ্মার চরে পাখি শিকারিদের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্র থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 

বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি এস আই সোহেল জানান, পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। শিকার প্রতিরোধে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এগুলো আমাদের পরিবেশের সম্পদ।

 

এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বর্তমানে পদ্মার চরাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। এ সময় পুঁটি, খলশে, দারকিনাসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ ও পোকা-মাকড় দেখা যায়। এ সময় অতিথি পাখিরা খাবারের জন্য অপেক্ষাকৃত শীত থেকে বাঁচতে নদীর চরে আসে।

 

পাখি শিকারের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

 


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

সিংড়ায় বাস ও মোটরসাইকেল সংঘর্ষ: নিহত ২, আহত ২

error: Content is protected !!

পদ্মার চরে অতিথি পাখি শিকারে ব্যস্ত শিকারীরা!

আপডেট টাইম : ০৩:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২৫
মোঃ জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

মোঃ জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

শীতে প্রতিবছরই অতিথি বা পরিযায়ী পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে বাংলাদেশে আসে। প্রতি বছরের মতো এবারও কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মার চরে পরিযায়ী পাখিরা ভীড় করছে। তবে, অসাধু কিছু শিকারি এসব পাখি ধরে বাজারে বিক্রি করছেন বলে স্থানীয় পরিবেশ সংগঠকেরা অভিযোগ করেছেন। তাঁরা পদ্মার চরে প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার দাবি করেছেন।

 

এবার পদ্মার চরে বুনো হাঁস, ছোট সারস পাখি, বড় সারস পাখি, শামুকখোল, বালিহাঁস, হরিয়াল, কাদাখোঁচা, রাজসরালি, পাতিকুট, রামঘুঘু, নিশাচর, ডুবুরি পাখিসহ নানা প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আশ্রয় নিয়েছে। তবে, জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে ও দেশীয় যন্ত্র ব্যবহার করে অবাধে এসব পাখি শিকার চলছে। এছাড়া চখা, পানকৌড়ি, দেশী বক ও শিকারিদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।

 

জানা গেছে, উপজেলার মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এই ইউনিয়নের পদ্মার চরে এবার বিপুল পরিমাণে পরিযায়ী পাখি এসেছে। শিকারিরা বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চরে এসব পাখি শিকার করে আসছেন। পরে তাঁরা ভোরে বিভিন্ন বাজারে বিক্রির জন্য পাখিগুলো নিয়ে আসেন।

 

উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের পদ্মার চরে সরেজমিনে দেখা যায়, পাখি শিকারিরা জাল পেতে পাখি ধরতে বসে আছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক বলেন, প্রতিদিন বিকেল হলেই চরে পাখি ধরতে বড় জাল পাতা হয়। জালে পাখি আটকা পড়লে শিকারিরা তা ধরে বিক্রি করে দেয়। আবার অনেক সময় নিজেরাই রান্না করে খায়। পদ্মার চরে পাখি শিকারিদের সঙ্গে দেশীয় অস্ত্র থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে তাঁদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

 

বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি এস আই সোহেল জানান, পাখি শিকার দন্ডনীয় অপরাধ। শিকার প্রতিরোধে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এগুলো আমাদের পরিবেশের সম্পদ।

 

এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বর্তমানে পদ্মার চরাঞ্চলের পানি কমতে শুরু করেছে। এ সময় পুঁটি, খলশে, দারকিনাসহ বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ ও পোকা-মাকড় দেখা যায়। এ সময় অতিথি পাখিরা খাবারের জন্য অপেক্ষাকৃত শীত থেকে বাঁচতে নদীর চরে আসে।

 

পাখি শিকারের বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা বন কর্মকর্তা আবুবকর সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

 


প্রিন্ট