আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট চক্রের কারণে খ্রিষ্টান ধর্মালম্বী জনগোষ্ঠী নায্যমূল্যে চাল থেকে বঞ্চিত হয়েছে, যা তাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সচেতন মহল এসব সিন্ডিকেট চক্রের গডফাদারদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, তানোর উপজেলায় খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ১২৭টি গীর্জা রয়েছে। চলতি বছরে ২৫ ডিসেম্বর যিশু খ্রিস্টের জন্মদিন (বড়দিন) উদযাপনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি গীর্জাকে পাঁচশ’ কেজি করে মোট ৬৩ দশমিক ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে খোলা বাজারে যেখানে মোটা চালের দাম ৫৫ টাকা কেজি, সেখানে এই চালগুলো আওয়ামী সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা ৩৮ টাকা কেজি দরে হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য অবস্থান নেন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুনিল কুমার দাস, কামারগাঁ ইউপি আওয়ামী লীগের সম্পাদক সুফি কামাল মিন্টু, ইউপি চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি মিজান ও নাজিম মন্ডলসহ তাদের লোকজন গীর্জা সভাপতিদের কাছ থেকে চালের ডিওলেটার (প্রতিনিধিত্বমূলক কাগজ) ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় উপকারভোগীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গীর্জা সভাপতি বলেন, “খাদ্য কর্মকর্তা আমাদের কাছে চাল বিক্রির কথা বলেছেন, না হলে পরবর্তীতে চাল বরাদ্দ পেতে সমস্যা হতে পারে। তাই, কম দাম জানলেও তাদের কাছে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “সিন্ডিকেটের সঙ্গে খাদ্য অফিসের গোপন সমঝোতা রয়েছে।”
এছাড়াও, কলমা ও কামারগাঁ ইউপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গীর্জা কমিটির সদস্যরা জানান, খাদ্য অফিস থেকে ডিওলেটার নিয়ে বের হওয়ার পর সিন্ডিকেট সদস্যরা তা ছিনিয়ে নেন এবং তাদের কাছে পানির দামে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হন। এছাড়া, খাদ্য অফিসে প্রতি ডিওলেটারের জন্য ৫০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ মধুখালীতে বাস থেকে পড়ে নারী যাত্রীর মৃত্যু
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (টিসিএফ) মলিউজ্জামান সজিব এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “ডিও হোল্ডারগণ কোথায় এবং কত দামে চাল বিক্রি করছেন, সেটা আমাদের দেখার দায়িত্ব নয়। তবে জোরপূর্বক ডিও ছিনিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই, যদি এমন অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রিন্ট