রাজশাহীর তানোরে আদালতের ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে বিরোধপূর্ণ সম্পত্তিতে রাতের আঁধারে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। তানোর পৌরসভার পালপাড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, তাদের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানো হচ্ছে কারণ তারা সনাতন ধর্মাবলম্বী। তিনি আরও জানান, উসমান আলী ও তার পুত্র বাবু স্থানীয় বাহিনীসহ বহিরাগত ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে রাতের অন্ধকারে বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আদালতের ১৪৪ ধারার নোটিশ প্রদান করলেও দখলকারীরা তা উপেক্ষা করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে ভুক্তভোগী পরিবার চরম অসহায় হয়ে পড়েছে।
জমির ইতিহাস: জানা গেছে, তানোর পৌরসভার জেল নম্বর ১৪৪, মৌজা তানোর, আরএস খতিয়ান নম্বর ৩৩৭ এবং প্রস্তাবিত খতিয়ান নম্বর ১৬৫৯-এর ৯৩ শতক জমির মূল মালিক নারায়ন চন্দ্র দাস। তিনি এই জমি ১৯৭৫ সালের ২১ এপ্রিল শ্রীমতি হারানী রানী দাসের কাছে বিক্রি করেন। পরবর্তীতে ওয়ারিশ সূত্রে জমি চলে যায় তাদের একমাত্র সন্তান নিমাই কান্ত দাসের কাছে। নিমাই কান্ত দাসের কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করেন গোল্লাপাড়া মহল্লার মৃত করুনা কান্ত সাহার পুত্র বিশ্বনাথ চন্দ্র সাহা, যিনি খাজনা খারিজ ও হোল্ডিং খুলে ডিসিআর সম্পূর্ণ করে জমিটি ভোগদখল করে আসছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৬ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ চন্দ্র সাহার দখলীয় জমি জবরদখল করতে গিয়ে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করেন পাশ্ববর্তী জমির মালিক উসমান আলী ও তার পুত্র বাবু। এই সময় বর্গাদার আবুল কালাম নিষেধ করতে গেলে, প্রতিপক্ষের পক্ষ থেকে তাকে মারধর করা হয় এবং রক্তাক্ত করা হয়।
এ ঘটনায় বিশ্বনাথ চন্দ্র সাহা রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারা মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (১৪৪ ধারা) জারি করে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। কিন্তু তাও, বিবাদীরা আদালতের আদেশ অমান্য করে রাতের অন্ধকারে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করে।
পুলিশের অবস্থান: তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান জানান, আদালতের আদেশ জারি করতে তানোর থানার এএসআই খাইরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই খাইরুল ইসলাম জানান, আদালতের আদেশ জারি করা হয়েছে এবং বিবাদীদের কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, যদি কেউ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
আরও পড়ুনঃ মোহনপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন
এ ব্যাপারে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উসমান আলী ও তার পুত্র বাবুর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রিন্ট