ঢাকা , রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রায়পুরায় মিথ্যা মামলা পত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ভুক্তভোগী পরিবার Logo গোমস্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিতহ ১ Logo রূপগঞ্জে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টায় যুবক গ্রেফতার Logo সালথায় গাজা ও রাফায় ইসরায়েলি বর্বরোচিত নৃশংসতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ Logo রূপগঞ্জের পূর্বাচল থেকে দেলোয়ার হোসেন নয়ন নামে এক যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার Logo গোপালগঞ্জ সহকারী কর কমিশনারের বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ Logo নগরকান্দায় জুট মিলে যৌথ  বাহিনীর অভিযান, অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার জব্দ, গ্রেফতার-১ Logo কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য গ্রেফতার Logo হাতিয়ায় ছোট ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে বড় ভাই খুন Logo ফরিদপুরে অবৈধ গ্যাস কবরখানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান, গ্রেফতার-১
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ওসি জিডিতে লিখতে বাধ্য করলেন ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নাই’!

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুনিরুল ইসলাম অভিনব কায়দায় এক ভুক্তভোগী বাদীর সাধারণ ডাইরি (জিডি) গ্রহণ করেছেন। প্রথমে জিডি নিতে অস্বীকার করলেও পরে ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই’ লিখে দেওয়ার শর্তে জিডি নথিভুক্ত করেন তিনি। এভাবে জিডি গ্রহণকে আইনের ব্যত্যয় এবং ওসির স্ববিরোধী অবস্থান বলে দাবি করেছেন আইনজীবীরা।

 

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) ভূরুঙ্গামারী থানায় জিডিটি নথিভুক্ত করা হয়, যার নং ৬৭৬। ওসি মুনিরুল ইসলাম এভাবে জিডি নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

 

ঘটনার পটভূমি:
জিডিকারী মো. সাজু মিয়া, কুড়িগ্রামের পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিট পাইকেরছড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট ব্যবসায়ী, গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে একটি ভুল নাম্বারে ১০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করেন। তিনি ওই নাম্বারে ফোন করে টাকা ফেরত চাইলে অপর প্রান্ত থেকে অস্বীকৃতি জানানো হয়। এরপর তিনি বিষয়টি নগদ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা থানায় জিডি করার পরামর্শ দেয়।

 

রবিবার সাজু মিয়া জিডি করতে ভূরুঙ্গামারী থানায় যান, কিন্তু ওসি প্রথমে জিডি নিতে অস্বীকার করেন। পরে সাজু মিয়া বারবার অনুরোধ করার পর ওসি শর্তসাপেক্ষে জিডি নিতে সম্মত হন। তবে, কম্পিউটার টাইপ করা আবেদনপত্র দেখে ওসি তাকে ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই’ লিখতে বলেন। সাজু মিয়া ওই কথাটি হাতে লিখে দিয়ে আবেদনটি জমা দেন। এরপর, জিডি অনলাইনে নথিভুক্ত হয়।

 

আইনি প্রতিবাদ:
এ বিষয়ে আইনজ্ঞরা বলেন, “এভাবে জিডি গ্রহণ করা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।” তারা বলছেন, “অভিযোগকারী যখন থানায় এসে জিডি করেন, তখন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য।” সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও সাবেক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুর রহমান দুলু বলেন, “এভাবে জিডি গ্রহণ করে ওসি নিজেই অপরাধ করেছেন।”

 

ওসির বক্তব্য:
এ বিষয়ে ওসি মুনিরুল ইসলাম বলেন, “জিডি করতে আসা ব্যক্তি তদন্ত চাননি, তাই তাকে লিখতে বলেছি। যেসব লোক জিডি করতে আসেন, তাদের আইনগত বিষয়গুলি বুঝাতে আমি কিছু করতে পারি না।” তবে, তিনি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আইনি ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

 

জিডির পরবর্তী পরিস্থিতি:
জিডির কপিতে, ওসি যে ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই’ লিখেছেন, সেখানে তদন্ত কর্মকর্তা নির্দেশ পেয়েছেন, “এই ডাইরি সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।” এতে থানা পুলিশকে দ্বৈত অবস্থান নিতে দেখা যায়।

 

আরও পড়ুনঃ মোহনপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন

 

বাদী সাজু মিয়া বলেন, “আমার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যই আমি থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম। আর কোনো আইনগত বাধা ছিল না। আমার টাকা লোকসান হয়ে গেছে, আমি সেটা ফেরত চাই।”


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রায়পুরায় মিথ্যা মামলা পত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ভুক্তভোগী পরিবার

error: Content is protected !!

ওসি জিডিতে লিখতে বাধ্য করলেন ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নাই’!

আপডেট টাইম : ০৪:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
আরিফুল ইসলাম জয়, ভুরঙ্গমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুনিরুল ইসলাম অভিনব কায়দায় এক ভুক্তভোগী বাদীর সাধারণ ডাইরি (জিডি) গ্রহণ করেছেন। প্রথমে জিডি নিতে অস্বীকার করলেও পরে ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই’ লিখে দেওয়ার শর্তে জিডি নথিভুক্ত করেন তিনি। এভাবে জিডি গ্রহণকে আইনের ব্যত্যয় এবং ওসির স্ববিরোধী অবস্থান বলে দাবি করেছেন আইনজীবীরা।

 

রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) ভূরুঙ্গামারী থানায় জিডিটি নথিভুক্ত করা হয়, যার নং ৬৭৬। ওসি মুনিরুল ইসলাম এভাবে জিডি নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

 

ঘটনার পটভূমি:
জিডিকারী মো. সাজু মিয়া, কুড়িগ্রামের পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিট পাইকেরছড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট ব্যবসায়ী, গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে একটি ভুল নাম্বারে ১০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন করেন। তিনি ওই নাম্বারে ফোন করে টাকা ফেরত চাইলে অপর প্রান্ত থেকে অস্বীকৃতি জানানো হয়। এরপর তিনি বিষয়টি নগদ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা থানায় জিডি করার পরামর্শ দেয়।

 

রবিবার সাজু মিয়া জিডি করতে ভূরুঙ্গামারী থানায় যান, কিন্তু ওসি প্রথমে জিডি নিতে অস্বীকার করেন। পরে সাজু মিয়া বারবার অনুরোধ করার পর ওসি শর্তসাপেক্ষে জিডি নিতে সম্মত হন। তবে, কম্পিউটার টাইপ করা আবেদনপত্র দেখে ওসি তাকে ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই’ লিখতে বলেন। সাজু মিয়া ওই কথাটি হাতে লিখে দিয়ে আবেদনটি জমা দেন। এরপর, জিডি অনলাইনে নথিভুক্ত হয়।

 

আইনি প্রতিবাদ:
এ বিষয়ে আইনজ্ঞরা বলেন, “এভাবে জিডি গ্রহণ করা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।” তারা বলছেন, “অভিযোগকারী যখন থানায় এসে জিডি করেন, তখন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য।” সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও সাবেক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুর রহমান দুলু বলেন, “এভাবে জিডি গ্রহণ করে ওসি নিজেই অপরাধ করেছেন।”

 

ওসির বক্তব্য:
এ বিষয়ে ওসি মুনিরুল ইসলাম বলেন, “জিডি করতে আসা ব্যক্তি তদন্ত চাননি, তাই তাকে লিখতে বলেছি। যেসব লোক জিডি করতে আসেন, তাদের আইনগত বিষয়গুলি বুঝাতে আমি কিছু করতে পারি না।” তবে, তিনি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আইনি ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

 

জিডির পরবর্তী পরিস্থিতি:
জিডির কপিতে, ওসি যে ‘আপাতত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন নেই’ লিখেছেন, সেখানে তদন্ত কর্মকর্তা নির্দেশ পেয়েছেন, “এই ডাইরি সংক্রান্তে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।” এতে থানা পুলিশকে দ্বৈত অবস্থান নিতে দেখা যায়।

 

আরও পড়ুনঃ মোহনপুরে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন

 

বাদী সাজু মিয়া বলেন, “আমার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্যই আমি থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম। আর কোনো আইনগত বাধা ছিল না। আমার টাকা লোকসান হয়ে গেছে, আমি সেটা ফেরত চাই।”


প্রিন্ট