গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলা সদরের প্রায় সব সড়ক এখন ভোগান্তির আরেক নাম। একদিকে যানজট, অন্যদিকে ফুটপাত দখল—এ পরিস্থিতিতে নিত্যদিনের চলাচল অনেকের জন্য দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। অথচ, চরম ভোগান্তি থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি, এমন অভিযোগ করছেন সচেতন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুকসুদপুর উপজেলার প্রধান সড়কগুলোতে নির্ধারিত সীমানার বাইরে ব্যবসা চলছে। এভাবে সড়ক দখল করা হলেও প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। দিনদিন অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষের মতে, “নির্দিষ্ট বাজার এলাকা না থাকায়” এ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তবে, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ফুটপাত দখল, যা যানজট সৃষ্টি এবং চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
এ বিষয়ে অনেক স্থানীয় ব্যক্তির মত, দীর্ঘদিন ধরে সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা এই সমস্যার কথা আর প্রকাশ করতে চান না। ফুটপাত দখলে নেওয়া এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অব্যাহত অবহেলা ও অনীহা দেখে তারা হতাশ। জনমনে প্রশ্ন উঠছে, “এটা প্রশাসনের অবহেলা নাকি ক্ষমতার প্রভাবে ঘটছে?”
এছাড়া, মুকসুদপুরের সদর বাজারে ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছেন। এসব ব্যবসায়ী জানাচ্ছেন যে, তারা দৈনিক বা প্রতি হাটবার কিছু টাকা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন, তবে চাদাবাজি হওয়ার কথা তারা অস্বীকার করছেন। সড়কে যানজটের চিত্র আরও ভিন্নভাবে ফুটে উঠেছে।
মুকসুদপুরের কমলাপুর স্ট্যান্ড থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত পুরো সড়কেই ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। সদর বাজারে প্রবেশের প্রধান সড়কগুলোও দখলে রেখেছে ইঞ্জিন চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক। এসব কারণে সড়কে জটলা সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে যানবাহন চলাচলে বিরাট সমস্যা তৈরি হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে থানার দিকে যাওয়ার সময় চৌরঙ্গির দুই পাশে দাড়িয়ে থাকা ইজিবাইক ও অটো বাইকের কারণে যানজট আরও বাড়ছে।
এছাড়া, মুকসুদপুরের মন্দির সড়কের একপাশে সবজির দোকান স্থায়ীভাবে দখলে নেওয়ার কারণে, ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করা এখন একেবারে দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সড়কটিতে একাধিক ভ্যান ঢুকলেই দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। বাজার করতে আসা একাধিক ব্যক্তি জানাচ্ছেন, “চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কিছু করার নেই। এখানে কিছু দেখার লোক নেই।”
এদিকে, স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা তাদের দুর্ভোগের কথা জানান। পাইলট স্কুলের সামনে দুই পাশের সড়ক দখলে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক সময় বড় দুর্দশায় পড়তে হয়। ফুটপাত দিয়ে চলাচল করার সুযোগ না থাকায়, তারা প্রায়ই বিপদের সম্মুখীন হন।
আরও পড়ুনঃ নওগাঁর আত্রাইয়ের ৬টি বধ্যভূমি অবহেলিত ও অরক্ষিত
এলাকার মানুষসহ সবাই এক মত, যে, লোক দেখানো অভিযান নয়, স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে।
প্রিন্ট