মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে জুলাই আগস্ট ছাত্র গণ অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার বেলা ১১ টায় সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাসে উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এনামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আব্দুল হালিম।
বক্তব্য রাখেন উপাধ্যাক্ষ ওবায়দুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এস এম শহিদুল ইসলাম, ইসলামের ইতিহাসের সহযোগি অধ্যাপক মোস্তফা সাইফুজ্জামান, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নুরুল কাদের, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ফরিদপুর জেলা শাখার সভাপতি জিহাদুল ইসলাম রত্ন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সোহেল রানা, ছাত্রদল নেতা মামুনুর রহমান মামুন রাজেন্দ্র কলেজে শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান শহিদুল আবরার শিহাব প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে।এ আন্দোলনে দেশে অসংখ্য মানুষ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই এখনো আহত অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
বক্তারা বলেন স্বাধীন দেশে বাস করেও আমরা পরাধীন ছিলাম। আমাদের কোন অধিকার ছিল না আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতারা আমাদের জিম্মি করে ফেলেছিল। আমরা আজ স্বাধীন ভাবে কথা বলতে পারছি । বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকার ও তার সংগঠনগুলো সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর অত্যাচার করেছিল।
জুলুম করেছিল নির্যাতন করেছিল।
বক্তারা বলেন এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই । এখনো বিদেশে বসে শেখ হাসিনা একের পর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। ভারতীয় কিছু মিডিয়া প্রোপাগান্ডা সৃষ্টি করছে। সেদিক থেকে সচেতন থাকতে হবে।
আমাদের দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগ যাতে কোনদিন রাজনীতি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এছাড়া সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যাতে কোনদিন রাজনীতি করতে না পারে। সে ব্যাপারে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এ সময় ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজেন্দ্র কলেজে সাধারণ ছাত্র ছাত্রীদের উপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচারের কথা তুলে ধরা হয়। বক্তারা বলেন হাজার শহীদের রক্তে পাওয়া এই স্বাধীনতা বৃথা যেতে পারবেনা।
আমাদের আন্দোলন ছিল বৈষম্য বিরোধী এই আন্দোলনে সর্বস্তরের জনতা অংশগ্রহণ করেছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ শহীদ হয়েছেন। নতুন বাংলাদেশ নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছেন তাদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে। অনুষ্ঠানে শহীদদের পরিবারের আজীবন ভরণপোষণের দায়িত্ব অন্তবর্তী কালীন সরকারকে নিতে হবে। আহতদের বিনামূল্যে সুচিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই একসাথে বসবাস করছি । এদেশের প্রতি সবার দায়িত্ব রয়েছে। আর তাই দেশে যাতে কোন রকম সাম্প্রদায়িকতার বিষ বপন করতে না পারে সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখার জন্য আহ্বান করা হয়।
অনুষ্ঠানে পরবর্তী পর্বে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন ময়েজ মঞ্জিল জামে মসজিদের পেশ ইমাম মওলানা কবির হোসেন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিকে এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে কলেজ ক্যাম্পাসে জুলাই আগস্ট এর বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ সময় কলেজের কলেজে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকা সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্ট