মাগুরা সদরের শত্রুজিৎপুরে একজন পুরোহিতের খামারে ঢুকে ৪৭ টি বিদেশি জাতের গাভী এবং ১২ টি বাছুরসহ মোট ৫৬ টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। যার বাজার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা। পিটিয়ে আহত করেছে খামার মালিক ও তার স্ত্রীকে এবং করেছে এলাকা ছাড়া। প্রায় দেড় মাস প্রাণভয়ে পালিয়ে ছিলেন পুরো পরিবার।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে অভিযোগ দেওয়ার প্রায় আড়াই মাস অতিবাহিত হলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার। এমনি অভিযোগ ভুক্তভুগি পুরোহিতের। গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাময়িক স্থগিত হয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। এ সুযোগ শতভাগ কাজে লাগায় দুর্বৃত্তরা। শহীদের রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশের উপর শকুনের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা।
হামলা ও লুটপাট চালায় মাগুরা সদর উপজেলার শত্রুজিৎপুরের স্বপন ভট্টাচার্যের মালিকানাধীন শুভ ডেইরি ফার্মে তান্ডব চলে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত। পিটিয়া আহত করা হয় খামার মালিক স্বপন ঠাকুর ও তার স্ত্রীকে। সেদিন নিরব দর্শকের মত তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না স্বপন ও তার পরিবারের। লুটপাট প্রতিহত করার প্রাথমিক চেষ্টা করেছিলেন প্রতিবেশীরাও। কিন্তু দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত বিশাল বাহিনীকে রুখে দেওয়ার মত সক্ষমতা ছিলনা তাদের। লুটপটে নেতৃত্ব দানে অভিযুক্ত সুরমান আলী মুঠোফোনে জানান, ঘটনার দিন তিনি এলাকার বাইরে ছিলেন, ফিরে এসে জানতে পেরেছেন স্বপন ঠাকুরের ফার্ম থেকে গরু লুট হয়েছে। তিনি এ লুট পাটের সাথে জড়িত নন।
সামাজিকভাবে ভিন্ন দল করায় প্রতিপক্ষ তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। ঘটনার প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গেছে। কিন্তু সেদিনের সেই স্মৃতি আজও দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেই চলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারি স্বপন ভট্টাচার্য এবং তার স্ত্রী শীলা ভট্টাচার্য জানান, গত ৫ আগস্ট উপজেলার শত্রুজিতপুর ইউনিয়নের কালু পাড়ার হুমায়ূন, সুরমান, এবং কোরবানের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জনের একদল দুর্বৃত্ত সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাদের ফার্ম থেকে গরু লুট করে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদেরকে মারধর শুরু করলে তারা প্রাণভয়ে পালিয়ে যান। বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ দিয়েও এখন পর্যন্ত সুরাহা পাননি তারা। গরু গুলো হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে চরম বিপাকে দিন কাটাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারি স্বপন ঠাকুর ও তার পরিবার।
লুটপাট এর খবর শুনে এগিয়ে আসলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাদেরকে তাড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা, বলছেন স্বপন ঠাকুরের প্রতিবেশীরা, খবরটি শোনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত খামারি ও তার পরিবারকে সান্তনা দিয়েছি, বলছেন শত্রুজীতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফতি ওসমান গনি মুসাপুরী,মধ্যযুগীয় কায়দায় ঘটানো এ নৃশংস ঘটনার সুষ্ট তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি লুট হওয়া গরুগুলোর উদ্ধার নিশ্চিত করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা ক্ষতিগ্রস্ত খামারি, তার পরিবার এবং সচেতন এলাকাবাসীর।
এঘটনাই ভুক্তভুগি পুরোহিত স্বপন কুমার ভুট্রাচার্য বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় গত১৬/১০/২৪ তারিখে ১৫ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৩০ থেকে ৪০ আসামি করে, ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩৭৯/৩৫৪/ ১১৪ পেনাল কোডে মামলা করেন যাহার মামলা নং১৩ এবিষয়ে ওসি অপারেশন জানান,আমার কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছি কিন্তু আসামি পলাতক থাকায় আসামি ও লুট হওয়া গরু ও মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। আসামিদের ধরতে এবং মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান চলমান রয়েছে।
প্রিন্ট