পার্বত্য বান্দরবান জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৭০ টির বেশি ইট ভাটা রয়েছে, ইট ভাটা গুলো দীর্ঘ বছর ধরে ইট প্রস্তুত করে আসছে সরকারি বা স্থানীয়দের চাহিদা পূরনে। ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পরে অন্তরভর্তী সরকারের বন ও জলবায়ু পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজুয়ানা হাসান এক বিবভ্রীতিতে বলেন দেশের সমস্ত অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করতে হবে এবং পরিবেশ বান্ধব ব্লগ ইট তৈরি করার নির্দেশাও দেওয়া হয়েছে।
ইট ভাটা বন্ধের কার্যক্রম জানতে বান্দরবান জেলার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিমের সাথে মুঠোফোনে কথাহলে তিনি জানান বান্দরবান জেলার ইট ভাটা মালিকদের সমস্ত ইট ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ আইন অমান্য করে ইট ভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যায় তার বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে হঠাৎ সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিপদে পড়েছে ইট ভাটা মালিক পক্ষ, বান্দরবান জেলার ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস জানান পার্বত্য বান্দরবান জেলার ইট ভাটা গুলোতে স্থানীয় পাহাড়ি বাঙালি মিলে প্রায় ৫-৭ হাজার শ্রমিক কাজ করে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা আরো ৪০ হাজার মতো শ্রমিক কাজ করে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে।
তিনি আরো বলেন বান্দরবান জেলার সরাসরি এবং স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ করছে এই-সব ইট ভাটা, বান্দরবানে প্রায় ৭০ টি ইট ভাটা রয়েছে। ২০২৪ সালের জুন মাসে প্রতিটা ইট ভাটা মালিক দের সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শ্রমিকদের ২৪/২৫ অর্থ বছরের কাজ করার জন্য মাথাপিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে প্রায় ৪২০ কোটি টাকার চুক্তি বদ্ধ হয়েছে, চুক্তিতে এটাও উল্লেখযে যদি কাজ বন্ধ থাকে সমস্ত টাকা ফেরত দিতে বাধ্য থাকিবে। যদি এইসব ইট ভাটা বন্ধ থাকে শ্রমিকদেন টাকা ফেরত দিতে ভিটা’বাড়ি বিক্রি করছাড়া কোনো উপায় থাকবেনা।
তিনি আরো বলেন ইট ভাটা পরিচালনা করতে গিয়ে মালিকরা বিভিন্ন ব্যাংক এবং ইট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা লোন নিয়েছে। যদি সরকারের কাছ থেকে আমাদের’কে ১ বছর সময় দেওয়া হয় আমরা ১ বছরে যে টাকা গুলো আসবে সেই টাকা দিয়ে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবেশ বান্ধব ব্লগ ইট তৈরির কারখানা সহ সমস্ত কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সক্ষম হবো।
তবে বিভিন্ন বিশ্লেষকদের সাথে কথ বলে জানাযায়, হঠাৎ ইট ভাটা বন্ধ হলে মালিক পক্ষ সহ শ্রমিকরা পথে বসেযাবে, কারণ হিসেবে তারা বলেন পূর্বের সরকারের সময় এ-সব ইট ভাটায় বড় ধরনের কোনো বাধার সম্মোহিত হয়নি এবং বন্ধের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকাও দেখাননি। তারই ধারাবাহিকতায় এ-সব ইট ভাটা প্রতি বছরের মতো মালিকদের সর্বোচ্চ অর্থ দিয়ে ২৪/২৫ অর্থবছরের সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েছিল, যদি এ-সব ইট ভাটা বন্ধ হয় সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী ব্লগ ইট তৈরি করার কারখানা ও বিভিন্ন উপকরণ ক্রয় করতে যে অর্থ প্রযোজন তা তাদের মধ্যে অবশিষ্ট নেই।
তাই বর্তমান সরকার যদি মালিকদের অর্থনৈতিক এবং শ্রমিকদের বেকারত্ব ও বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের দায়দেনা দিক’টা বিবেচনাকরে জ্বালানি হিসেবে কয়লা বাধ্য করে ১ বছরের জন্য ইট ভাটা পরিচালনা করার সুযোগ করেদেয় তাহলে সমস্ত দায়দেনা, ব্যাংক লোন, শ্রমিকদের বেকারত্ব সমস্যা সমাধান হয়ে সরকারের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী বছর থেকে ব্লগ ইট তৈরি করতে সক্ষম হবে মালিকরা।
প্রিন্ট