ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

আলফাডাঙ্গায় আঠাশ দিন পর চার গরু থানা থেকে ফিরে গেলো মালিকের কাছে

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় চুরি সন্দেহে আটককৃত চারটি গরু ২৮দিন পর নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে মূল বাড়ি ফিরেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গরু ৪টি মালিকের নিকট ফেরত দিয়েছে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ। চুরির সাথে সস্পৃক্তা প্রমাণিত না হওয়ায় একই সাথে মামলা থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে গরুর মালিক লিটন শেখকে।
জানা যায়, গত চলতি বছরের ১০ মে দিবাগত রাতে আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের বেলবানা গ্রামের আবু সাইদ মোল্যার একটি গরু বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায়। এর দুইদিন পর একই উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামের বাচ্চু শেখের ছেলে মো. লায়েক শেখের মাংসের দোকান থেকে চুরি হওয়া গরুর চামড়া উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে লায়েক শেখ গরু চুরির কথা স্বীকার করে। এ সময় লায়েক শেখের জিম্মা থেকে আরো ৪টি গরু আটক করা হয়।
গত ১৩ মে এ ঘটনায় আলফাডাঙ্গা থানায় একটি চুরি মামলা করে মো. আবু সাইদ মোল্যা। মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করা হয় জব্দকৃত গরু চারটির মালিক লিটন শেখকেও। কুয়েত প্রবাসী লিটন শেখ চারটি গরু ক্রয় করে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মাংস ব্যবসায়ি লায়েক শেখের নিকট বরগা (পুষার জন্য) দেন।
অবশ্য পরে মামলার বাদি মো. আবু সাইদ মোল্যা থানায় লিখিত অঙ্গীকারনামা দেন যে থানায় জব্দকৃত গরু চারটি  তার নয়। আবু সাইদ মোল্যা ফরিদপুর ৭ নম্বর আমলী আদালতের বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট এই মর্মে আরো লিখিত জবাদবন্দি দেন যে, লিটন শেখ তার মামলার আসামি না। লিটনকে জামিনে মুক্তি দিলে তার কোন আপত্তি থাকবে না।
সূত্র আরো জানায়, আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের জব্দকৃত চারটি গরুর মালিকানা যাচাই করে দাখিলকৃত প্রতিবেদন যথাযথ না হওযায় বিজ্ঞ আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) পুনরায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে লিটন শেখ একজন কুয়েত প্রবাসী। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে নিজেকে বেকারত্ব মনে করে মাংস ব্যবসায়ি লায়েক শেখের অনুরোধে ব্যবসার উদ্দেশ্যে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়ার কালিগঞ্জ গরুর হাট থেকে ওই মামলার জব্দকৃত চারটি গরু কিনে পুষার জন্য দেয়।
জব্দকৃত চার গরুর প্রকৃত মালিক প্রবাসী লিটন শেখ। প্রতিবেদন দাখিলের পর জব্দকৃত চার গরু প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পর অবশেষে গতকাল ১০ জুন জব্দকৃত গরুর মালিক লিটন শেখের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছেন আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় চার গরু লিটন শেখকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে আলফাডাঙ্গার থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন তথ্য ও তদন্ত সাপেক্ষে দুই লাখ টাকা বন্ডে গরু চারটি তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে যদি কেউ এ গরুর দাবি করে সেজন্যই এ আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আবার কেউ গরুর মালিকানা দাবি করলে সেটা তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

আলফাডাঙ্গায় আঠাশ দিন পর চার গরু থানা থেকে ফিরে গেলো মালিকের কাছে

আপডেট টাইম : ০৯:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১
মোঃ ইকবাল হোসেন, আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ :
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় চুরি সন্দেহে আটককৃত চারটি গরু ২৮দিন পর নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে মূল বাড়ি ফিরেছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গরু ৪টি মালিকের নিকট ফেরত দিয়েছে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ। চুরির সাথে সস্পৃক্তা প্রমাণিত না হওয়ায় একই সাথে মামলা থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে গরুর মালিক লিটন শেখকে।
জানা যায়, গত চলতি বছরের ১০ মে দিবাগত রাতে আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের বেলবানা গ্রামের আবু সাইদ মোল্যার একটি গরু বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায়। এর দুইদিন পর একই উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের হেলেঞ্চা গ্রামের বাচ্চু শেখের ছেলে মো. লায়েক শেখের মাংসের দোকান থেকে চুরি হওয়া গরুর চামড়া উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে লায়েক শেখ গরু চুরির কথা স্বীকার করে। এ সময় লায়েক শেখের জিম্মা থেকে আরো ৪টি গরু আটক করা হয়।
গত ১৩ মে এ ঘটনায় আলফাডাঙ্গা থানায় একটি চুরি মামলা করে মো. আবু সাইদ মোল্যা। মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করা হয় জব্দকৃত গরু চারটির মালিক লিটন শেখকেও। কুয়েত প্রবাসী লিটন শেখ চারটি গরু ক্রয় করে ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে মাংস ব্যবসায়ি লায়েক শেখের নিকট বরগা (পুষার জন্য) দেন।
অবশ্য পরে মামলার বাদি মো. আবু সাইদ মোল্যা থানায় লিখিত অঙ্গীকারনামা দেন যে থানায় জব্দকৃত গরু চারটি  তার নয়। আবু সাইদ মোল্যা ফরিদপুর ৭ নম্বর আমলী আদালতের বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট এই মর্মে আরো লিখিত জবাদবন্দি দেন যে, লিটন শেখ তার মামলার আসামি না। লিটনকে জামিনে মুক্তি দিলে তার কোন আপত্তি থাকবে না।
সূত্র আরো জানায়, আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের জব্দকৃত চারটি গরুর মালিকানা যাচাই করে দাখিলকৃত প্রতিবেদন যথাযথ না হওযায় বিজ্ঞ আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) পুনরায় তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
পিবিআই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে লিটন শেখ একজন কুয়েত প্রবাসী। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে নিজেকে বেকারত্ব মনে করে মাংস ব্যবসায়ি লায়েক শেখের অনুরোধে ব্যবসার উদ্দেশ্যে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়ার কালিগঞ্জ গরুর হাট থেকে ওই মামলার জব্দকৃত চারটি গরু কিনে পুষার জন্য দেয়।
জব্দকৃত চার গরুর প্রকৃত মালিক প্রবাসী লিটন শেখ। প্রতিবেদন দাখিলের পর জব্দকৃত চার গরু প্রকৃত মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পর অবশেষে গতকাল ১০ জুন জব্দকৃত গরুর মালিক লিটন শেখের নিকট ফিরিয়ে দিয়েছেন আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় চার গরু লিটন শেখকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করে আলফাডাঙ্গার থানার ওসি মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন তথ্য ও তদন্ত সাপেক্ষে দুই লাখ টাকা বন্ডে গরু চারটি তার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে যদি কেউ এ গরুর দাবি করে সেজন্যই এ আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আবার কেউ গরুর মালিকানা দাবি করলে সেটা তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট