রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ইজিপিপি প্রকল্পের কাজ না করে অর্থ হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে ৩ চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগের দায় নিতে নারাজ সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ বছরে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার ৭ ইউনিয়নের রাস্তাঘাট উন্নয়নের জন্য ৮১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৪শ টাকা বরাদ্দ দেয় দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে এই টাকা ব্যয় করার কথা। কিন্তু কালুখালীর মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু,কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব ও মৃগী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ মতিন অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি চালু না করে কাগজে কলমে কাজ দেখায় । তারা প্রকল্পের ৪০ লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করে সবই আত্মসাত করে। এই কাজের তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বিশেষ সুবিধা নিয়ে ৩ চেয়ারম্যানের টাকা আত্মসাতের সুযোগ দিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী ৭ ইউনিয়নে ১৯ টি প্রকল্পের মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন হবার কথা। প্রত্যেক প্রকল্প এলাকায় অতিদরিদ্র মানুষ এই কাজ সম্পন্ন করবে। এজন্য প্রত্যেক শ্রমিকের নামে কাজ চলাকালীন প্রতি বৃহস্পতিবার বিকাশ একাউন্টে বিল আসবে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম ও ৩ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুকৌশলে শ্রমিকদের নামে ৪ শতাধিক বিকাশ একাউন্ট খুলে এসব টাকা উত্তোলন করেছে। যে সব নামে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে তারা বুঝতেই পারেনি যে তাদের নামে কোন বিকাশ একাউন্ট আছে। বিকাশের এসব সিমগুলোর খবর মালিক না জানলেও জানেন ৩ চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম। কারন বিকাশ সীমগুলো ৪ ভাগে ভাগ করে সবাই এর সুবিধা ভোগ করছে।
যে সব মানুষ তাদের নামে বিকাশ একাউন্ট খোলা ও অর্থ উত্তোলন সংক্রান্ত বিষয় জানে না তারা হলো, শফিকুল শেখ, মনছের মিয়া, মুক্তি, শরিফুল ছালেহা বেগম, উছমান শেখ, আমানত মন্ডল, মসলেম মিয়া, মেহেরুন্নেছা, রেজিয়া বেগম, ভানু বিবি, হ্যাপী মৃধা, অসীম মন্ডল, আছিয়া বেগম, মনির,রুমি, মনোয়ারা, নাজমা, ইব্রাহিম, পারুল, ছালমা, জোছনা রানী পাল, মিজান, লিটন, রাসেল, ছবিরুল, রমজান, মর্জিনা, ছালেহা, মনোয়ারা, আব্দুল মান্নান, লক্ষী রানী পাল, সাধনা রানী, অধীর কুমার পাল, রাম প্রসাদ শীল, কামরুল ইসলাম, পার্থ কুমার শীল, মমতাজ বেগম, শেফালি বেগম, সাহান, বিল্টু শেখ, রোকেয়া বেগম, তমছেল বিশ্বাস, ছালেহা বেগম, বাসনা রানী শীল, নিজাম খান, ওহিদ মিয়া নিছার সরদার, সিরাজুল ইসলাম কোরবান মিয়া ,মানিক মোল্যা, সহ অনেকে ।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে,এরা সবাই সচ্ছল পরিবারের সদস্য। এরা কেউই শ্রমিকের কাজ করে না। তারপরও সরকারী তালিকা মোতাবেক এরা অতিদরিদ্র মানের শ্রমিক। তবে ভূয়া প্রকল্প ও ভূয়া শ্রমিক সংক্রান্ত দায় নিতে চায়না তদারকি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, ভূয়া প্রকল্প ও ভূয়া শ্রমিক এর দায় মদাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু,কালিকাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিউর রহমান নবাব ও মৃগী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান এমএ মতিন বহন করবে। কারন টাকা তারাই উত্তোলন করেছে। আমি শুধু তদারকি করেছি ।