ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo আলমডাঙ্গার কানাইনগর-শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া Logo কুষ্টিয়ায় জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তি করায় সেই পুলিশ সদস্য ক্লোজড Logo যশোরে নির্মাণাধীন ভবনের ব্যালকনি ভেঙে প্রকৌশলীসহ নিহত ৩ Logo শিবপুরে কাবিখা ও টিআর প্রকল্পের ৫২ লাখ টাকাসহ দুই কর্মকর্তা গোয়েন্দার জালে আটক Logo বেনাপোলের বাহাদুরপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র জরুরি কর্মীসভা অনুষ্টিত Logo সিংড়ায় ছাত্রশিবিরের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি Logo জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফুলবাড়ীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দোয়া মাহফিল Logo কাফনের কাপড় পরে কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও Logo তানোরে পানিতে ডুবে এক যুবকের মৃত্যু Logo তানোরে ফসলি জমি জবরদখল চেষ্টার অভিযোগ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায়- মেহেরপুর সড়কে ৪দিন বাস চলাচল বন্ধ

বাস ও সিএনজিচালকের মধ্যে  চরম দ্বন্দ্বের জেরে কুষ্টিয়া মেহেরপুর ও প্রাগপুর-মহিষকুন্ডি রুটে বাস চলাচল ৪ দিন  যাবত বন্ধ রয়েছে। এসব রুটে বন্ধ রয়েছে সিএনজি চলাচলও। পরিবহন শ্রমিকদের মারধর ও বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করবেন জেলার পরিবহন শ্রমিকরা। জেলার পরিবহন মালিক সংগঠনগুলোও এ কর্মবিরতিতে সমর্থন জানিয়েছে।
এতে অভ্যন্তরীণ রুটে বাস বন্ধ থাকলেও শুধু শুক্রবার ঢাকাগামী বাস চলাচল করবে। কারণ ঢাকাগামী বাসগুলো টিকিট বিক্রি করেছে, তাই সেগুলো শুধু একদিন শুক্রবার চলাচল করবে।
এর আগে চলমান দ্বন্দ্বের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের মিরপুর উপজেলার আমলাতে সিএনজি অটোরিকশার চালকরা দুটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুল হক বলেন, গত মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় হিসনা পরিবহন বাসের গ্লাস ভাঙচুরসহ চারজন শ্রমিককে মারধর করে স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশার চালকরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ রুটের বিভিন্ন জায়গায় মারধর ও বাসের গ্লাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয়। পরে বিকেলে আমলাতে আবারও দুটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধর করে সিএনজি অটোরিকশার চালকরা। এর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মালিক শ্রমিক যৌথভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেয়।
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল আদালত নিষিদ্ধ করেছে। আইন না মেনে তারা যেমন-তেমনিভাবে মহাসড়কে চলাচল করে। তাছাড়া বাসের স্টপেজ থেকেও তারা সিএনজি অটোরিকশায় যাত্রী তুলে নেয়। এর প্রতিবাদ করলে তারা পরিবহন শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয়। তাই মারধর ও নিরাপত্তার অভাবে শ্রমিকরা কাজে যেতে চাইছে না।
গত(৩ সেপ্টেম্বর)মঙ্গলবার বিকেলে অটোরিকশাচালকেরা মারধর করে এক বাস চালককে। তারপর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল।  এদিকে হঠাৎ করে বাস ও সিএনজি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। অতিদ্রুত  সমাধান চান তারা।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে তাদের একমাত্র ভরসা ইজিবাইক ও ভ্যান। জরুরি কাজ ও চিকিৎসার জন্য অনেকেই কুষ্টিয়া পৌঁছাতে পারছে না। আবার ইজিবাইক যেতে চাইলেও সময় লাগছে বেশি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
কুষ্টিয়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল হামিদ মুকুল বলেন, ভেড়ামারায় যাত্রী ওঠানো নিয়ে সিএনজি চালকদের সঙ্গে বাস চালকরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন এবং সিএনজি চালকরা আমাদের কয়েকজন চালকসহ শ্রমিকদের মারধর করে। এরই জের ধরে নিরাপত্তার অভাবে কুষ্টিয়া মেহেরপুর ও প্রাগপুর-মহিষকুন্ডি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা অতিদ্রুত  বিষয়টি সমাধানের  করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাস চালক খোকন আলী জানান, সকালে কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও বিভিন্ন জায়গায় বাধার মুখে পড়ে। বিশেষ করে কুষ্টিয়ার মধ্যে খলিশাকুণ্ডি পার হলে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছে অটোরিকশাচালকেরা। নিরাপত্তা না থাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রুট পারমিট ছাড়াও অটোরিকশাচালকেরা সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ বাস চলাচল করতে পারছে না। এখন উভয় জেলার প্রশাসনের বিষয়। সড়কে নিরাপত্তা পেলেই বাস চলাচল শুরু হবে।
কুষ্টিয়া বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আক্তারুজ্জামান বলেন, শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি পালন করবেন।
ভেড়ামারা সিএনজি স্ট্যান্ডের নেতা সানোয়ার বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য শ্রমিকরা উঠে-পড়ে লেগেছে। উল্টো কুষ্টিয়ায় সিএনজি অটোরিকশার চালকরা গেলে চাবি কেড়ে নিয়ে মারধর করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতার বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতির বিষয়টি আমিও জেনেছি। এ নিয়ে একবার বসাও হয়েছে। তারপরও কেন এমনটা করল সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান জানিয়েছেন, বিষয়টি কুষ্টিয়া প্রশাসনের ব্যাপার। তারা কি করছে আমাদের জানা নেই। তবে কুষ্টিয়া প্রশাসন ও বাস মালিকেরা বসে বিষয়টি সমাধান করতে পারেন।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আলমডাঙ্গার কানাইনগর-শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায়- মেহেরপুর সড়কে ৪দিন বাস চলাচল বন্ধ

আপডেট টাইম : ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :
বাস ও সিএনজিচালকের মধ্যে  চরম দ্বন্দ্বের জেরে কুষ্টিয়া মেহেরপুর ও প্রাগপুর-মহিষকুন্ডি রুটে বাস চলাচল ৪ দিন  যাবত বন্ধ রয়েছে। এসব রুটে বন্ধ রয়েছে সিএনজি চলাচলও। পরিবহন শ্রমিকদের মারধর ও বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদে কুষ্টিয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে এ কর্মবিরতি শুরু করবেন জেলার পরিবহন শ্রমিকরা। জেলার পরিবহন মালিক সংগঠনগুলোও এ কর্মবিরতিতে সমর্থন জানিয়েছে।
এতে অভ্যন্তরীণ রুটে বাস বন্ধ থাকলেও শুধু শুক্রবার ঢাকাগামী বাস চলাচল করবে। কারণ ঢাকাগামী বাসগুলো টিকিট বিক্রি করেছে, তাই সেগুলো শুধু একদিন শুক্রবার চলাচল করবে।
এর আগে চলমান দ্বন্দ্বের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের মিরপুর উপজেলার আমলাতে সিএনজি অটোরিকশার চালকরা দুটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
কুষ্টিয়া জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহাবুল হক বলেন, গত মঙ্গলবার কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় হিসনা পরিবহন বাসের গ্লাস ভাঙচুরসহ চারজন শ্রমিককে মারধর করে স্থানীয় সিএনজি অটোরিকশার চালকরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ রুটের বিভিন্ন জায়গায় মারধর ও বাসের গ্লাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয়। পরে বিকেলে আমলাতে আবারও দুটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধর করে সিএনজি অটোরিকশার চালকরা। এর প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মালিক শ্রমিক যৌথভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দেয়।
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কে থ্রি-হুইলার চলাচল আদালত নিষিদ্ধ করেছে। আইন না মেনে তারা যেমন-তেমনিভাবে মহাসড়কে চলাচল করে। তাছাড়া বাসের স্টপেজ থেকেও তারা সিএনজি অটোরিকশায় যাত্রী তুলে নেয়। এর প্রতিবাদ করলে তারা পরিবহন শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয়। তাই মারধর ও নিরাপত্তার অভাবে শ্রমিকরা কাজে যেতে চাইছে না।
গত(৩ সেপ্টেম্বর)মঙ্গলবার বিকেলে অটোরিকশাচালকেরা মারধর করে এক বাস চালককে। তারপর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল।  এদিকে হঠাৎ করে বাস ও সিএনজি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। অতিদ্রুত  সমাধান চান তারা।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীরা গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে তাদের একমাত্র ভরসা ইজিবাইক ও ভ্যান। জরুরি কাজ ও চিকিৎসার জন্য অনেকেই কুষ্টিয়া পৌঁছাতে পারছে না। আবার ইজিবাইক যেতে চাইলেও সময় লাগছে বেশি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
কুষ্টিয়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল হামিদ মুকুল বলেন, ভেড়ামারায় যাত্রী ওঠানো নিয়ে সিএনজি চালকদের সঙ্গে বাস চালকরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন এবং সিএনজি চালকরা আমাদের কয়েকজন চালকসহ শ্রমিকদের মারধর করে। এরই জের ধরে নিরাপত্তার অভাবে কুষ্টিয়া মেহেরপুর ও প্রাগপুর-মহিষকুন্ডি রুটে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা সেনাবাহিনী, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা অতিদ্রুত  বিষয়টি সমাধানের  করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাস চালক খোকন আলী জানান, সকালে কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস কুষ্টিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও বিভিন্ন জায়গায় বাধার মুখে পড়ে। বিশেষ করে কুষ্টিয়ার মধ্যে খলিশাকুণ্ডি পার হলে বিভিন্ন জায়গায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছে অটোরিকশাচালকেরা। নিরাপত্তা না থাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। রুট পারমিট ছাড়াও অটোরিকশাচালকেরা সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অথচ বাস চলাচল করতে পারছে না। এখন উভয় জেলার প্রশাসনের বিষয়। সড়কে নিরাপত্তা পেলেই বাস চলাচল শুরু হবে।
কুষ্টিয়া বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আক্তারুজ্জামান বলেন, শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তারা কর্মবিরতি পালন করবেন।
ভেড়ামারা সিএনজি স্ট্যান্ডের নেতা সানোয়ার বলেন, পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের উচ্ছেদ করার জন্য শ্রমিকরা উঠে-পড়ে লেগেছে। উল্টো কুষ্টিয়ায় সিএনজি অটোরিকশার চালকরা গেলে চাবি কেড়ে নিয়ে মারধর করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতার বলেন, শ্রমিকদের কর্মবিরতির বিষয়টি আমিও জেনেছি। এ নিয়ে একবার বসাও হয়েছে। তারপরও কেন এমনটা করল সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক শামীম হাসান জানিয়েছেন, বিষয়টি কুষ্টিয়া প্রশাসনের ব্যাপার। তারা কি করছে আমাদের জানা নেই। তবে কুষ্টিয়া প্রশাসন ও বাস মালিকেরা বসে বিষয়টি সমাধান করতে পারেন।

প্রিন্ট