ঝালকাঠির নলছিটিতে এক বিএনপি নেতা স্থগিত হওয়া পদ ফিরে পেতে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার সকাল ১১টায় নলছিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান কুশঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শাকিল হাওলাদার। সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম গাজীর বিরুদ্ধে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবিরও অভিযোগ করেন। এ টাকা না দেওয়ার কারণে তাঁর পদ স্থগিত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এই বিএনপি নেতা। তবে এ সংক্রান্ত তিনি কোন প্রমানপত্র দেখাতে পারেননি।
সংবাদ সম্মেলনে কুশঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপির পদ সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত হওয়া) শাকিল হাওলাদার দাবি করেন, তিনি ১৯৯০ সাল থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। তবুও তিনি দল ছেড়ে কোথাও যাননি। দলের দুঃসময়ে হাল ধরে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। ৫ আগস্ট ২০২৪ শেখ হাসিনার পদত্যাগের পদে পেক্ষাপট পাল্টে যায়। বিএনপি নেতাকর্মীরা কুশঙ্গল ইউনিয়নে শাকিল হাওলাদারের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আছে। এতে একটি মহল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে।
তিনি রাজনীতির পাশাপাশি নলছিটি শহরের সেবা ক্লিনিকের একজন শেয়ারহোল্ডার। সম্প্রতি নলছিটি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম গাজী তাঁর ক্লিনিকে গিয়ে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে ফোনেও তিনি চাঁদার টাকা দিতে চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় দলীয়পদে কিভাবে থাকেন, তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে মানপাশা বাজারে পানি সাপ্লাইয়ের কাজ শুরু হলে যুবলীগের সাবেক নেতা বর্তমানে যুবদলের নেতা দুলাল খানের নেতৃত্বে শহিদ ও খোকনসহ কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে গিয়ে ঠিকাদারের লোকজনের কাছে ৫% টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি (শাকিল হাওলাদার) এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে চাঁদাবাজদের প্রতিহত করার ঘোষণা দেন। এতে দুলাল খানসহ কয়েকজন নেতাকর্মী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দল থেকে বহিস্কার করার হুমকি দেন। গত ৩১ আগস্ট রাতে নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিসুর রহমান খান হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম গাজী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কুশঙ্গল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের পদসহ সকল সদস্য পদ স্থগিত করার নির্দেশ দেন।
শাকিল হাওলাদার বলেন, আমি দলের শৃঙ্খলা রক্ষার্থে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলাম। উল্টো আমার পদ স্থগিত করা হলো। মূলত আমি চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াতে এবং উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম গাজীকে টাকা না দেওয়ার কারণে আমার পদ স্থগিত করা হয়েছে। আমি কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, আমার পদ ফিরিয়ে দিয়ে পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম গাজী বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমি কখনো কারো কাছে চাঁদা দাবি করিনি। সেবা ক্লিনিকের অন্য শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে আপনারা জেনে নিন আমি চাঁদা চেয়েছি কিনা। একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমার সুনাম নষ্ট করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ পাওয়ায় তার পদ স্থগিত করা হয়েছে। এখানে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই রয়েছে। অথচ সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে, এতেই প্রমানিত হয় এটা উদ্দেশ্যপ্রনোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুস হাওলার, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এবায়দুল হাওলাদার, ইউনিয়ন বিএনপি নেতা জলিল মোল্লা, জুয়েল জোমাদ্দার, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি টিপু হাওলাদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সাইফুল ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্ট