সরকারপতন পরবর্তী সারাদেশে সংঘটিত ব্যাপক সহিংসতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের তোপ থেকে রক্ষা পেলো না কবি ও অধ্যাপক প্রয়াত আনন্দ মোহন রক্ষিতের বাড়ি। সারাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের আঁচ লেগেছে খোদ চট্টগ্রামেও।
জানা যায়, গত ৯ই আগস্ট ২০২৪ চট্টগ্রামের বেশকিছু জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও উপাসনালয়ে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এদিন আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে বেশকিছু সন্ত্রাসী চট্টগ্রামস্থ মোমিন রোড এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা বিশিষ্ট সমাজকর্মী কবি ও অধ্যাপক প্রয়াত আনন্দ মোহন রক্ষিতের জে. এম. প্যারাডাইসের বাড়ির তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে ও লুটতরাজ চালায়।
এসময় তারা আনন্দ মোহন রক্ষিতের স্ত্রী লাকী দত্ত ও পুত্র শুভ রক্ষিতের খোঁজ করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে স্থানীয় প্রতিবেশীরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। পার্শ্ববর্তী একজন প্রতিবেশী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দুর্বৃত্তরা প্রায় ১৫-১৬ জনের মত ছিল এবং পার্শ্ববর্তী আরও বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। এসময় নিকটস্থ থানায় ফোন করা হলেও তারা কেউ সাড়া দেয়নি। এ ঘটনায় ২ জন গুরুতরভাবে আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রসঙ্গত কবি আনন্দ মোহন রক্ষিত তাঁর লেখনীর মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সর্বদা সেচ্চার ছিলেন। তাছাড়াও তিনি আমৃত্যু স্থানীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ হিন্দু ফাউন্ডশনেরও ধর্ম বিষয়ে সম্পাদক ছিলেন। উল্লেখ্য তিনি ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর ছেলে ডাঃ শুভ রক্ষিত একজন স্বনামখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। শুভ রক্ষিত বর্তমানে সুইডেন প্রবাসী ও আনন্দ মোহন রক্ষিতের স্ত্রী লাকী দত্ত সুইডেনে ছেলের কাছে অবস্থান করছেন। আনন্দ মোহন রক্ষিতের পুরো পরিবার বর্তমানে জীবননাশের হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
প্রিন্ট