কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দুই ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় দুটি পৃথক হত্যা মামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফসহ ৭০ জনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুল হক চৌধুরী শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে দুটি মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি আরাে বলেন, এখন পর্যন্ত মামলাগুলোর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
স্বর্ণকার বাবু হত্যা মামলার বাদী রাইসুল হক এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করি। আমি, বাবুসহ (নিহত) অনেক লোকজন গত ১৭ জুলাই থেকে কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্নস্থানে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিচ্ছিলাম। সেই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটের দিকে বকচত্বরে অবস্থানকালে আসামিরা হাতে দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁঠা ও ধারালো চাপাতি নিয়ে আমাদের পথরোধ করে।
১,২, ৩ ও ৪নং আসামি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী হুকুম দিয়ে বলেন, ‘শালাদের খুন করে ফেল’। তাদের হুকুম পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আসামিরা তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁঠা ও ধারালো চাপাতি নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাদেরকে ধাওয়া করে। তখন আমরা জীবন বাঁচানোর জন্য ছয় রাস্তার দিকে দৌড় দিই।
এরপর আমরা থানাপাড়ার আড়ংয়ের সামনে রাস্তায় গেলে আসামিরা বাবুর কাঁধে ধারালো চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। এতে বাবু তাৎক্ষণিক রাস্তার ওপর পড়ে যায়। তখন ৫নং আসামি (কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী) বাবুকে হত্যার উদ্দেশ্যে চাপাতি দিয়ে তার মাথার ডান পাশে একটি কোপ মেরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে।
নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের থানাপাড়া এলাকার লুকমান হোসেনের ছেলে আবদুল্লাহ (১৩) এবং সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের শালদাহ গ্রামের মৃত নওশের আলীর ছেলে বাবু (৩২)।
নিহত আবদুল্লাহর পক্ষে তার বাবা লুকমান হোসেন এবং বাবুর পক্ষে কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাইসুল হক মামলা দুটি করেন।
মামলা দুটিতে এজাহার নামীয় অন্য আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সহ-সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতাসহ ৪৯ জন। এসব মামলায় নাম না জানা আসামি ৭০ জন।
প্রিন্ট