ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বরিশালে লাঠি চার্জের ছবি তোলায় সাংবাদিকদের পেটালো পুলিশ

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন বরিশালের সাংবাদিকরা। আহতদের মধ্যে তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আরও ৪-৫ জন স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

 

সাংবাদিকদের দাবি, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

 

আহত সাংবাদিক এসএলটি তুহিন বলেন, আমরা অনেক সাংবাদিক এক সঙ্গেই ছিলাম। শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার সময় আমাদেরও পেটানো শুরু করে। আমি পায়ে আঘাত পেয়েছি। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।

 

যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহম্মেদ বলেন, লাঠিচার্জের সময়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার হাতে ক্যামেরা। তখনো আমাকে লাঠিপেটা করে। আজকের ঘটনায় পুলিশ মোটেও পেশাদার আচরণ করেনি। অপেশাদার ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অন্য দুজন হলেন এনটিভির ক্যামেরাপার্সন গোবিন্দ সাহা ও যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন হৃদয় চন্দ্র শীল।

 

স্থানীয় একটি দৈনিকের সাংবাদিক পাভেল বলেন, পুলিশ গণহারে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। আমার গায়েও লাঠির আঘাত পড়েছে। তবে গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।

 

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, লাঠিচার্জকারী টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) তানভীর আরাফাত। সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যের কাছেই ছিলেন তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের লাঠিচার্জ করতে নিবৃত্ত করেননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের গালিগালাজ করেছেন বলেও জানান তারা।

 

হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়েছে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি। সংগঠনটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা জানাচ্ছি। ঘটনার ভিডিও আমি দেখিছি। আমার মনে হয়েছে বিনা কারণে এবং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিকদের পিটিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা ও তার ইউনিট। এভাবে পুলিশ লাঠিচার্জ করার এখতিয়ার রাখে না। যে পুলিশ কর্মকর্তার ইউনিট সাংবাদিকদের পিটিয়েছে সেই কর্মকর্তাসহ লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার দাবি করছি।

 

বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার বলেন, সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ নিন্দনীয় কাজ করেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের নিরাপত্তা পুলিশকেই নিশ্চিত করতে হবে। তাদের দ্বারা এমন আচরণ আমরা প্রত্যাশা করি না।

 

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে প্রথমে নগরীর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে ও পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে ফজলুল হক এভিনিউতে শিক্ষার্থীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময়ে সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়। এছাড়া আন্দোলনকারী অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

 

 

কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, কিছু লোক জড়ো হয়েছিল। আমরা কয়েকজনকে সেখান থেকে নিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

বরিশালে লাঠি চার্জের ছবি তোলায় সাংবাদিকদের পেটালো পুলিশ

আপডেট টাইম : ০৯:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জুলাই ২০২৪
সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক রিপোর্ট :

‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জের ছবি তুলতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হয়েছেন বরিশালের সাংবাদিকরা। আহতদের মধ্যে তিনজন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আরও ৪-৫ জন স্থানীয় পর্যায়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

 

সাংবাদিকদের দাবি, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।

 

আহত সাংবাদিক এসএলটি তুহিন বলেন, আমরা অনেক সাংবাদিক এক সঙ্গেই ছিলাম। শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার সময় আমাদেরও পেটানো শুরু করে। আমি পায়ে আঘাত পেয়েছি। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।

 

যুগান্তরের ফটো সাংবাদিক শামীম আহম্মেদ বলেন, লাঠিচার্জের সময়ে আমি মাটিতে পড়ে যাই। আমার হাতে ক্যামেরা। তখনো আমাকে লাঠিপেটা করে। আজকের ঘটনায় পুলিশ মোটেও পেশাদার আচরণ করেনি। অপেশাদার ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া অন্য দুজন হলেন এনটিভির ক্যামেরাপার্সন গোবিন্দ সাহা ও যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরাপার্সন হৃদয় চন্দ্র শীল।

 

স্থানীয় একটি দৈনিকের সাংবাদিক পাভেল বলেন, পুলিশ গণহারে সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। আমার গায়েও লাঠির আঘাত পড়েছে। তবে গুরুতর না হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।

 

প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা বলেন, লাঠিচার্জকারী টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) তানভীর আরাফাত। সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যের কাছেই ছিলেন তিনি। এই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের লাঠিচার্জ করতে নিবৃত্ত করেননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিকদের গালিগালাজ করেছেন বলেও জানান তারা।

 

হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহার চেয়েছে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি। সংগঠনটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা জানাচ্ছি। ঘটনার ভিডিও আমি দেখিছি। আমার মনে হয়েছে বিনা কারণে এবং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে সাংবাদিকদের পিটিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা ও তার ইউনিট। এভাবে পুলিশ লাঠিচার্জ করার এখতিয়ার রাখে না। যে পুলিশ কর্মকর্তার ইউনিট সাংবাদিকদের পিটিয়েছে সেই কর্মকর্তাসহ লাঠিচার্জকারী পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহার দাবি করছি।

 

বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন খন্দকার বলেন, সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ নিন্দনীয় কাজ করেছে। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের নিরাপত্তা পুলিশকেই নিশ্চিত করতে হবে। তাদের দ্বারা এমন আচরণ আমরা প্রত্যাশা করি না।

 

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে প্রথমে নগরীর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে ও পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে ফজলুল হক এভিনিউতে শিক্ষার্থীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ সময়ে সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়। এছাড়া আন্দোলনকারী অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

 

 

কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিচুল হক বলেন, কিছু লোক জড়ো হয়েছিল। আমরা কয়েকজনকে সেখান থেকে নিয়ে এসেছি। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।


প্রিন্ট