ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পাওনা টাকা চাওয়ায় এক আবাসিক হোটেল মালিকের নিকট উল্টো চাঁদাদাবি করেছে কথিত এক যুবলীগ নেতা। সাবেক ছাত্রদলের ক্যাডার যুবলীগে অনুপ্রবেশকারী এই কথিত নেতা ঢাকা থেকে বোয়ালমারী এসে হোটেল আলীশাহ প্যালেসে ১৮ দিন অবস্থান করে এ সময় নানা অনৈতিক সুবিধা দাবি করে হোটেল কর্মচারীদের নিকট। হোটেল কর্মচারীরা অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ হয়ে ভাড়া না দিয়ে কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারধর, হোটেল মালিককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে হোটেল ত্যাগ করে এই নেতা।
এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়িয়ে হেয়প্রতিপন্ন করা সহ নানা ভাবে হেনস্তার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্সের স্বত্বাধিকারী ও হোটেল আলীশাহ প্যালেসের মালিক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল রশিদ।
সোমবার (৮ জুলাই) পৌর সদরের ওয়াপদা মোড়স্থ কাজী হারুন শপিং কমপ্লেক্স ভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে লিখিত বক্তব্যে কাজী আব্দুল্লাহ বলেন, বোয়ালমারী পৌর সদরের উত্তর শিবপুর নিবাসী মৃত নুরুল ওহাবের ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে মাসুদ রানা একজন মাদকাসক্ত, বখাটে, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ প্রকৃতির লোক। সাবেক ছাত্রদলের ক্যাডার মাসুদ কৌশলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে। সে গত ১ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত তিনি আমার নিজ মালিকানাধীন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আবাসিক হোটেল আলিশাহ প্যালেস এর একটি কক্ষে ভাড়া থাকেন। এক পর্যায়ে ভাড়া বাবদ ২৩ হাজার ২ শত টাকা পরিশোধ না করে মাসুদ রানা কৌশলে হোটেল ত্যাগ করে চলে যান। পরবর্তীতে হোটেল ম্যানেজার আকিদুল ইসলাম যোগাযোগ করে মাসুদ রানার নিকট পাওনা টাকা চাইলে তিনি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং টাকা দিতে অস্বীকার করাসহ ম্যানেজারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন। শুধু তাই নয়, বোয়ালমারীতে হোটেল ব্যবসা চালাতে হলে উল্টো প্রতি মাসে মাসুদ রানাকে দশ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। ঘটনা অবহিত হয়ে হোটেল মালিক কাজী আব্দুল্লাহ এ বিষয়ে মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তাঁর (আব্দুল্লাহর)সঙ্গেও চরম দূরব্যবহার করেন। কথা কাটা-কাটির এক পর্যায়ে মাসুদ আব্দুল্লাহকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনা স্থল ত্যাগ করেন।
এর পর থেকেই কাজী আব্দুল্লাহ ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক মিথ্যা, মনগড়া তথ্য প্রচার করে সমাজে ভুক্তভোগীদের চরম ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে চলেছেন অভিযুক্ত মাসুদ রানা। এ পর্যন্ত তিনি তার নিজের ফেসবুক আইডিতে ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধ শতাধিক আপত্তি জনক, কুরুচিপূর্ণ ও মানহানি কর পোস্ট করেছেন বলে অভিযোগ করেন আব্দুল্লাহ।
এ ঘটনায় স্থানীয় থানা পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলনে কাজী আব্দুল্লাহ বলেন, মাসুদ রানার বিরুদ্ধে আমি বোয়ালমারী থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু পুলিশ কোনটিতেই কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে মাসুদ রানা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তাই উৎকন্ঠা, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন কাজী আব্দুল্লাহ ও তার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন সহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন কাজী আব্দুল্লাহ। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কাজী হারুনর রশীদ, আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আব্দুল হান্নান, মোঃ কামরুল ইসলাম, শ্রমিক লীগ নেতা মোঃ আইয়ুব আলী ও মোঃ বাবুল শেখ প্রমুখ ।