ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন লাভ

জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদন বিষয়ে আজ রোববার আদেশ হয়। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তিনি জামিন পান।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, এই মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর মামলা। এই মামলার আসামি রোজিনা ইসলাম যদি তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা দেন সে ক্ষেত্রে রোজিনার জামিনে কোনো আপত্তি নাই। পরে রোজিনা ইসলামের পক্ষ থেকে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জানান, রাষ্ট্রপক্ষ যে শর্ত দিয়েছেন তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আদালত বলেন, গণমাধ্যম শক্তিশালী মাধ্যম। সবাই যেন দায়িত্বশীল আচরণ করেন।

কারাগারের পথে রোজিনা ইসলাম

কারাগারের পথে রোজিনা ইসলাম।   -ফাইল ছবি।

আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আমিনুল গনি টিটো, আশরাফ-উল আলম, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, প্রশান্ত কুমার কর্মকার,আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রশীদ।

রোজিনার পক্ষে আইনি সহায়তা দেন, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইনজীবী মশিউর রহমান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) মিজানুর রহমান, মহিলা পরিষদের দিপ্তী সিকদার, শাম্মী আক্তার। এ ছাড়া আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন সুমন কুমার রায়, মাহবুবুল হক, আবদুর রহীম।

আদালতে নেওয়া হয় রোজিনা ইসলামকে।

আদালতে নেওয়া হয় রোজিনা ইসলামকে।   -ফাইল ছবি।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী তাপস কুমার পাল, হেমায়েত উদ্দিন খান।

জামিন আবেদনের শুনানির পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় কিছু তথ্যউপাত্ত আদালতে জামা দেওয়া হয়েছে। তবে কী তথ্য তা তিনি বিস্তারিত জানাননি।

গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আজ আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভেতরে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান রোজিনা ইসলাম।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভেতরে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান রোজিনা ইসলাম।   – ছবি সংগৃহীত।

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। শুনানিতে রোজিনা ইসলামের আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সৃজিত ও উদ্দেশ্যমূলক। জামিন পাওয়ার অধিকার তিনি সংরক্ষণ করেন। এটা তাঁর প্রাপ্য।

শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৮ মে রোজিনা ইসলামকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ তাঁকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন। এই আদেশের পর রোজিনা ইসলামকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবিতে কয়েক দিন ধরেই প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রতিবাদ হয়েছে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন লাভ

আপডেট টাইম : ১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মে ২০২১
সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক : :

জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদন বিষয়ে আজ রোববার আদেশ হয়। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে তিনি জামিন পান।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, এই মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর মামলা। এই মামলার আসামি রোজিনা ইসলাম যদি তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা দেন সে ক্ষেত্রে রোজিনার জামিনে কোনো আপত্তি নাই। পরে রোজিনা ইসলামের পক্ষ থেকে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জানান, রাষ্ট্রপক্ষ যে শর্ত দিয়েছেন তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে জামিন মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে আদালত বলেন, গণমাধ্যম শক্তিশালী মাধ্যম। সবাই যেন দায়িত্বশীল আচরণ করেন।

কারাগারের পথে রোজিনা ইসলাম

কারাগারের পথে রোজিনা ইসলাম।   -ফাইল ছবি।

আদালতে রোজিনা ইসলামের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আমিনুল গনি টিটো, আশরাফ-উল আলম, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, প্রশান্ত কুমার কর্মকার,আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী আব্দুর রশীদ।

রোজিনার পক্ষে আইনি সহায়তা দেন, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইনজীবী মশিউর রহমান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) মিজানুর রহমান, মহিলা পরিষদের দিপ্তী সিকদার, শাম্মী আক্তার। এ ছাড়া আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন সুমন কুমার রায়, মাহবুবুল হক, আবদুর রহীম।

আদালতে নেওয়া হয় রোজিনা ইসলামকে।

আদালতে নেওয়া হয় রোজিনা ইসলামকে।   -ফাইল ছবি।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী তাপস কুমার পাল, হেমায়েত উদ্দিন খান।

জামিন আবেদনের শুনানির পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিকদের জানান, এই মামলায় কিছু তথ্যউপাত্ত আদালতে জামা দেওয়া হয়েছে। তবে কী তথ্য তা তিনি বিস্তারিত জানাননি।

গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়। জামিন আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী শুনানিতে দুই পক্ষের আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়ালি অংশ নেন। তবে আদালত সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। রাষ্ট্রপক্ষের তথ্য উপস্থাপন ও জামিন বিষয়ে আজ আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভেতরে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান রোজিনা ইসলাম।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভেতরে দীর্ঘ সময় আটকে রাখার একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে যান রোজিনা ইসলাম।   – ছবি সংগৃহীত।

পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে ১৭ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। শুনানিতে রোজিনা ইসলামের আইনজীবীরা বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সৃজিত ও উদ্দেশ্যমূলক। জামিন পাওয়ার অধিকার তিনি সংরক্ষণ করেন। এটা তাঁর প্রাপ্য।

শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৮ মে রোজিনা ইসলামকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ তাঁকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। শুনানি নিয়ে আদালত রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর জামিন আবেদনের ওপর অধিকতর শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রাখেন। এই আদেশের পর রোজিনা ইসলামকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে পাঠানো হয়।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবিতে কয়েক দিন ধরেই প্রতিবাদ ও আন্দোলন চলেছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রতিবাদ হয়েছে।


প্রিন্ট