ঢাকা , বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জায়গা পরিদর্শন করলেন ফরিদপুরের ডিসি Logo পাংশায় মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির ভাতাভোগীদের এসবিসিসি প্রশিক্ষণ শুরু Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে বজ্রপাতে ছেলের মৃত্যু, আহত মা Logo তানোরে গলায় ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা Logo বাংলাদেশ কিন্ডার গার্ডেন অ্যাসোসিয়েশনের পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় হুমায়রা তৃতীয় Logo তানোর পৌরসভা দাখিল মাদরাসা সভাপতি মালেককে সংবর্ধনা Logo তিল চাষে আগ্রহ হারিয়েছে আত্রাইয়ের কৃষকরা Logo রাস-আল-খাইমাহ চেম্বার এর চেয়ারম্যান মোঃ আলী আল নুয়াইমির সঙ্গে কনসাল জেনারেলের সাক্ষাৎ Logo নলছিটিতে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতির নামে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ Logo রূপগঞ্জে সাংবাদিক রিয়াজ হোসেনের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

প্রমত্তা গড়াই নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানি শূন্য !

কুষ্টিয়ার মাঝে প্রবাহিত অপরূপ প্রমত্ত গড়াই নদী আজ প্রায় মৃত অবস্থা। বসন্ত শেষ হতে না হতেই পানির খুব একটা অস্তিত্ব নেই কুষ্টিয়ায় প্রবাহিত গড়াই নদীতে। প্রমত্তা গড়াই এখন পরিণত হয়েছে ছোট খালে। সেই সাথে নেমে গেছে পানির স্তর।

এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকাসহ এর আসে পাশের প্রায় লক্ষাধিক নল কুপে উঠছে না পানি। এমনকি ও পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীর এমন করুন পরিণতির কারণে এখানকার মানুষের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য পড়েছে হুমকির মুখে। পানির জন্য চলছে হাহাকার।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে প্রাকৃতিক এই সমস্যা সমাধানে তাদের কিছুই করার নাই। তবে বৃষ্টি হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার দেওয়া তথ্য মোতাবেক পৌর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং সংখ্যা ৩৭ হাজার, যার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিজস্ব নলকূপ আছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেয়া হয়েছে প্রায় ৫ হাজারের ওপরে নলকূপ। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে এসব এলাকার প্রায় সব নলকূপই হয়ে গেছে অকেজো। যেগুলো কাজ করছে সেগুলোতে পানি উঠছে অতি সামান্য। ১ বালতি পানি তুলতে আধা ঘন্টারও বেশি সময় লাগছে।

শুধু পৌর এলাকাই নয়, শহর সংলগ্ন হরিপুর ইউনিয়ন, কয়া, শিলাইদহ ইউনিয়ন সহ আরো অনেক এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার। তবে গড়াই নদীর তীরবর্তী বসবাস কর মানুষের অবস্থা সব চাইতে বেশি খারাপ। পানির সংকট এতটাই প্রকট যে খাবার পানির পাশাপাশি গোসল এবং গবাদি পশুর জন্য পানির ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাওয়া লাগছে। পানির জন্য নদীর চরের প্রায় দেড় দুই কিলোমিটার হেঁটে যেতে হচ্ছে তাদের।

এমন সংকটে এর আগে কখনো পরেননি তারা। গড়াই নদীর উপর অবস্থিত সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতু এবং গড়াই ব্রিজের নিচে ড্রেজিং করার ফলে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও অধিকাংশ পিলার ধূধূ বালির উপর রয়েছে। সাধারণ মানুষ এই গড়াই নদীর অনেক স্থান দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে।

পানি শূন্য এই গড়াই নদী শুধুই এখন স্মৃতি। ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবেই এই গড়াই নদীর করুন দশা বলে অনেকেই মন্তব্য করছে।

কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীগুলোর নাব্যতা না থাকার পাশাপাশি পানির স্তর বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ফিট নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে উঠছে না পানি। পানি সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বিপাকে পড়েছে জনজীবন।

এমনকি পৌরসভার পক্ষ থেকে যে সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা করা আছে তার উৎপাদন ও অনেক কম। এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টি শুরু হলেই এই সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। আর পানির স্তর এভাবে কমে যাওয়ার পেছনে যত্রতত্র গভীর নলকূপ ব্যবহারকে দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

তারা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সাথে সাথে নদীর পানিওয়াদি শুকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে যেসব নলকূপের লেয়ারকম দেয়া সেসব নলকূপে পানি না ওঠারই কথা।

সেক্ষেত্রে নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরো গভীরে লেয়ার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উৎসগুলো থেকে আসা পানি নদীতে সংরক্ষণ করা গেলে অনাবৃষ্টি বা শুষ্ক মৌসুমে যেমন মিটবে পানির চাহিদা।

 

অন্যদিকে বাড়বে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আর এভাবেই সম্ভব এই সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসার, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগী সকলে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

কামালদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জায়গা পরিদর্শন করলেন ফরিদপুরের ডিসি

error: Content is protected !!

প্রমত্তা গড়াই নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানি শূন্য !

আপডেট টাইম : ১১:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :

কুষ্টিয়ার মাঝে প্রবাহিত অপরূপ প্রমত্ত গড়াই নদী আজ প্রায় মৃত অবস্থা। বসন্ত শেষ হতে না হতেই পানির খুব একটা অস্তিত্ব নেই কুষ্টিয়ায় প্রবাহিত গড়াই নদীতে। প্রমত্তা গড়াই এখন পরিণত হয়েছে ছোট খালে। সেই সাথে নেমে গেছে পানির স্তর।

এর প্রভাবে কুষ্টিয়া পৌর এলাকাসহ এর আসে পাশের প্রায় লক্ষাধিক নল কুপে উঠছে না পানি। এমনকি ও পানির স্তর নেমে যাওয়ায় নদীর এমন করুন পরিণতির কারণে এখানকার মানুষের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্য পড়েছে হুমকির মুখে। পানির জন্য চলছে হাহাকার।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে প্রাকৃতিক এই সমস্যা সমাধানে তাদের কিছুই করার নাই। তবে বৃষ্টি হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।

কুষ্টিয়া পৌরসভার দেওয়া তথ্য মোতাবেক পৌর এলাকার ২১টি ওয়ার্ডে হোল্ডিং সংখ্যা ৩৭ হাজার, যার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই নিজস্ব নলকূপ আছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় দেয়া হয়েছে প্রায় ৫ হাজারের ওপরে নলকূপ। পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে এসব এলাকার প্রায় সব নলকূপই হয়ে গেছে অকেজো। যেগুলো কাজ করছে সেগুলোতে পানি উঠছে অতি সামান্য। ১ বালতি পানি তুলতে আধা ঘন্টারও বেশি সময় লাগছে।

শুধু পৌর এলাকাই নয়, শহর সংলগ্ন হরিপুর ইউনিয়ন, কয়া, শিলাইদহ ইউনিয়ন সহ আরো অনেক এলাকায় চলছে পানির জন্য হাহাকার। তবে গড়াই নদীর তীরবর্তী বসবাস কর মানুষের অবস্থা সব চাইতে বেশি খারাপ। পানির সংকট এতটাই প্রকট যে খাবার পানির পাশাপাশি গোসল এবং গবাদি পশুর জন্য পানির ব্যবস্থা করতে হিমশিম খাওয়া লাগছে। পানির জন্য নদীর চরের প্রায় দেড় দুই কিলোমিটার হেঁটে যেতে হচ্ছে তাদের।

এমন সংকটে এর আগে কখনো পরেননি তারা। গড়াই নদীর উপর অবস্থিত সৈয়দ মাছ উদ রুমী সেতু এবং গড়াই ব্রিজের নিচে ড্রেজিং করার ফলে কিছুটা পানি প্রবাহ থাকলেও অধিকাংশ পিলার ধূধূ বালির উপর রয়েছে। সাধারণ মানুষ এই গড়াই নদীর অনেক স্থান দিয়ে হেঁটে পার হচ্ছে।

পানি শূন্য এই গড়াই নদী শুধুই এখন স্মৃতি। ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবেই এই গড়াই নদীর করুন দশা বলে অনেকেই মন্তব্য করছে।

কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীগুলোর নাব্যতা না থাকার পাশাপাশি পানির স্তর বিগত বছরগুলোর তুলনায় ২৫ থেকে ৩০ফিট নেমে যাওয়ায় হস্তচালিত নলকূপে উঠছে না পানি। পানি সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা সক্রিয় না থাকায় বিপাকে পড়েছে জনজীবন।

এমনকি পৌরসভার পক্ষ থেকে যে সাপ্লাই পানির ব্যবস্থা করা আছে তার উৎপাদন ও অনেক কম। এটি একটি প্রাকৃতিক সমস্যা। বৃষ্টি শুরু হলেই এই সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে। আর পানির স্তর এভাবে কমে যাওয়ার পেছনে যত্রতত্র গভীর নলকূপ ব্যবহারকে দায়ী করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

তারা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নামার সাথে সাথে নদীর পানিওয়াদি শুকিয়ে যায় সেক্ষেত্রে যেসব নলকূপের লেয়ারকম দেয়া সেসব নলকূপে পানি না ওঠারই কথা।

সেক্ষেত্রে নতুন নলকূপ স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক আরো গভীরে লেয়ার দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। উৎসগুলো থেকে আসা পানি নদীতে সংরক্ষণ করা গেলে অনাবৃষ্টি বা শুষ্ক মৌসুমে যেমন মিটবে পানির চাহিদা।

 

অন্যদিকে বাড়বে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আর এভাবেই সম্ভব এই সমস্যা থেকে বেড়িয়ে আসার, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগী সকলে।


প্রিন্ট