ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মুজিববর্ষ উপলক্ষে দু্ই পর্বে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মোট ৩শ ২২টি টিনসেড পাকা ঘর।
১ম পর্বে প্রাপ্ত ১শ ৯২টি ঘরের মধ্যে ৯২টি ঘর ইতোমধ্যে ঘরগ্রহীতাদের মধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ১শ ঘর হস্তান্তরের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ২য় পর্বে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর উপহার হিসেবে পাচ্ছেন আরও ১শ ৩০ ভূমিহীন পরিবার। এগুলোর কাজও চলমান। অর্ধেকের বেশি কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ভূমি অফিসের সহযোগিতায় প্রকৃত ভূমিহীনদের চিহ্নিত করে কাজের মান ঠিক রেখে এসব ঘর নির্মিত হচ্ছে। ওইসব ঘরের নির্মাণ কাজের গুণগত মান এবং বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে এসব কথা সাংবাদিকদের জানান ইউএনও ঝোটন চন্দ।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে উপহার হিসেবে দ্বিতীয় দফায় প্রাপ্ত আরও ১শ ৩০টি ঘরের নির্মাণ কাজের অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন হয়েছে।
নির্মাণ কাজ শেষে এসব ঘরে দ্রুততম সময়ে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা এবং পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের ব্যবস্থা করে উপকারভোগীদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।
উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সরকারি খাসজমিতে হতদরিদ্র পরিবারের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে এসব সরকারি ঘর। যাদের থাকার জমি ও ঘর নেই তাদের পুনর্বাসনের জন্য এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে দুই কক্ষ বিশিষ্ট বারান্দাসহ সেমিপাকা ঘর, রান্নাঘর ও বসত ঘরের সঙ্গে থাকছে টয়লেটও।
ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হলে গৃহহীনদের মধ্যে এ গুলো হস্তান্তর করা হবে। ঘরের নির্মাণ কাজের সার্বিক তদারিক করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারিয়া হক, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ।
২য় পর্যায়ের ১৩০টি ঘরের মধ্যে সাতৈর ইউনিয়নে ৩৬টি, চতুল ইউনিয়নে ৮টি, পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে ৬টি, রূপাপাত ইউনিয়নে ১৬ টি, শেখর ইউনিয়নে ১১টি, দাদপুর ইউনিয়নে ২৪টি, বোয়ালমারী ইউনিয়নে ১১টি, ময়না ইউনিয়নে ১৮ টি ঘর নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এসব ঘর নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই জুনের ২য় সপ্তাহের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।
সরকারি ঘর পাওয়া শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার কোন ঘর বাড়ি নাই, আমি আর আমার বউ রাস্তা ঝাড়ু দেই। রাতে টয়লেটে থাকতাম। বোয়ালমারী ইউএনও ঝোটন চন্দ স্যার আমাগো ডাইকে শেখ হাসিনার দেয়া একটা পাকা ঘর দিছেইন। আমি জীবনেও ভাবি নাই এমন একটা ঘর পামু, এহন আর টয়লেটে থাহন লাগত না, আমি শেখ হাসিনার লাগি দুই হাত তুইল্লা দোয়া করি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, ইতোমধ্যে প্রথম দফার ১শ ৯২টি ঘরের মধ্যে ৯২টি পরিবার তাদের ঘরে বসবাস করছেন। বাকি ১শ টি ঘর হস্তান্তরের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া ২য় পর্যায়ের ১শ ৩০টি ঘরের নির্মাণ কাজের অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে তালিকাভূক্ত গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত, দাবদাহ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে মুজিববর্ষের গৃহনির্মাণের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে শ্রমিক সংকট, তারপরও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই জুনের ২য় সপ্তাহ নাগাদ ২য় পর্যায়ে বরাদ্দকৃত ১৩০টি ঘর গ্রহীতাদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।
প্রিন্ট