গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে তুচ্ছঘটনাকে কেন্দ্র দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২৮ জন আহত হয়েছে। এ সময় ২০ টি বাড়িঘর ভাংচুরের পাশাপাশি টাকা-পয়সা ও গরু-ছাগল লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। রোববার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা হতে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুকরা গ্রামে কয়েক দফায় এ সংঘর্ষ ঘটে।
আহতদের কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য ইনামুল শেখ ও আমিনুর মোল্যা গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এর আগেও এই দুগ্ৰুফের মধ্যে বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকবার মারামারি ও জখমের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার স্যালো মেশিন চুরি হওয়ার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুগ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে রোববার ভোরে আমিনুর মোল্যার সমর্থকদের সাথে এনামুল শেখের সমর্থকদের মারামারি হয়। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ইউপি সদস্য ইনামুল শেখ, মাসুদ শেখ, রফিকুল মোল্লা, শরিফ শেখ ও জাহিদ কাজীর নির্দেশে ঢাল-সড়কি, রামদা, টেঁটাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমিনুর মোল্লার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালায়।
এ সময় মনির মোল্লার মুদি দোকান সহ কমপক্ষে ২০ টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। মনির মোল্লার স্ত্রী রাবেয়া জানান তাদের দোকানের প্রয় তিন লাখ টাকার মালামাল চোখের সামনেই ইনামুল ও মাছুদ শেখের লোকজন লুটপাট করে নিয়ে যায়। তিন ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় এ সংঘর্ষে নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২৮ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এবিষয়ে আমিনুর মোল্লা সাংবাদিকদের জানান, কথা কাটাকাটির তুচ্ছ ঘটনাকে পুঁজি করে ইনামুল ও মাছুদ শেখের লোকজন আমাদের নারী ও শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে গুরুতর জখম করেছে। পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করে মালামাল ও গরু-ছাগল লুটপাট করেছে। আমরা শুধু প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি।
ইউপি সদস্য ইনামুল শেখ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মোল্লা বংশের লোকজন আগে থেকেই বেপরোয়া। একারনে ছোট বংশের লোকজন নিরুপায় হয়ে বর্তমানে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছে। আমিনুর মোল্লার সমর্থকরা আমাদের ঘরবাড়িও ভাংচুর করেছে। আমরা কাশিয়ানী থানায় মামলা করেছি।
কাশিয়ানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিল্লুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমিনুর মোল্যা ও ইউপি সদস্য ইনামুল শেখ গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২৮ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ এড়াতে ঐ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এবিষয়ে রফিকুল মোল্লা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
প্রিন্ট