আব্দুল হামিদ মিঞাঃ
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে এবারের প্রতিপাদ্য-“তামাক কোম্পানির কুট কৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি”। শনিবার(৩১ মে’২০২৫) রাজশাহীর বাঘায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাম্মী আক্তারের সভাপতিত্বে র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভাটি মডেল মসজিদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
–
জাইকার উপজেলা প্রতিনিধি আলপনা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন,উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ আশাদুজ্জামান আশাদ, এসআই শহিদুল হক,শিক্ষক রফিকুল ইসলাম,সাংবাদিক আব্দুল লতিফ মিঞা,শিক্ষার্থী সিরাজুম মনিরা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন,উপজেলা মৎস্য অফিসার তহুরা হক। কোরআন তেলায়াত করেন জনস্বাস্থ্য দপ্তরের উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুল মমিন। গীতা পাঠ করেন শিক্ষক পরিমল চন্দ্র।
–
বক্তারা বলেন, বিপুল জনগোষ্ঠীকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা জরুরি। সে ক্ষেত্রে কিশোর-তরুণদের ধূমপাণ থেকে বিরত রাখা সম্ভব হবে। ব্যাপক জনসচেতনতার মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
–
ডাঃ আশাদুজ্জামান বলেন, গর্ভবতী ও শিশুরা ধূমপাণ না করেও প্রতিনিয়ত তামাকজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নারী ও শিশুদের পরোক্ষ ধূমপাণের হাত থেকে রক্ষা করা জরুরি। তাই জনসচেতনতা তৈরি করতে হবে।
–
উপজেলা নির্বাহি শাম্মী আক্তার বলেন, তামাক কোম্পানি গুলো নানা কৌশলে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করছে। ধুমপাণ ও তামাক দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রন) আইনে তিনশত টাকা অর্থদন্ডের বিধান রয়েছে। অর্থদন্ডে দন্ডিত একই ব্যক্তি পুনরায় একই অপরাধ করলে দ্বিগুন অর্থে দন্ডিত হবেন। পাবলিক প্লেসে ধূমপাণ নিষিদ্ধ থাকলেও অধিকাংশ ধূমপায়ী আইনটি এড়িয়ে চলছেন। আইনটি কার্যকর করতে সচেতনতার পাশাপাশি পাবলিক প্লেসে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হবে। সভায় উপস্থিত ছিলেন-উপজেলার দপ্তর প্রধান,শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
–
এদিকে ধূমপায়ীদের অনেকে আইন সর্ম্পকে জানেন না। পাবলিক প্লেসে ধুমপাণের বিষয় জানতে চাইলে অনেকেই বলেছেন, সবাই খাচ্ছে তাই আমরাও খাচ্ছি। কেউ কখনো কিছু বলেনি। আইন হইছে,একথা শুনেছেন। জরিমানার বিষয়ে কিছু জানেন না। তাই অনায়াসে ও দাম্ভিকতার সাথে ধুমপাণ করছেন। গাড়ী চালানো অবস্থায় ধূমপাণে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে চালকদের। সাথে আছে রিক্সা-ভ্যান চালকরাও। বাস ষ্ট্যান্ড,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপণী বিতান সহ সবখানেই ধূমপায়িরা ধূমাপাণ করছেন। এতে অধূমপায়িরা পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বলতে পারছেনা কিছূই।
–
অভিজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে জনসমাগমস্থল ও যানবাহনে প্রকাশ্যে ধুমপাণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ধূমপাণ ও তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ সক্রান্ত আইনও রয়েছে। আইনে জরিমানা করার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগ,প্রচরণার অভাব এবং কার্যকরে যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় নিষিদ্ধ স্থানে ধুমপাণ পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
সরকারি বিধান মতে পাবলিক প্লেস এবং পরিবহনে বাংলা ও ইংরেজিতে “ধুমপান হতে বিরত থাকুন, ইহা শাস্তি যোগ্য অপরাধ” এ সংক্রান্ত নোটিশ টানানোর কথা থাকলেও তার বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেই।
–
জানা গেছে, আইনটি পাশ হওয়ার পর বাঘায় সীমিত কয়েকেজনের জরিমানা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ আইনে কাউকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি।
শাহদৌলা সরকারি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হানিফ মিঞা বলেন, ব্যাপক জনসচেতনতার মাধ্যমে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার দিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
প্রিন্ট