রাজশাহীর তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি)হরিপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মকর্তা (হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার) মোস্তাফিজুর রহমান সজিবের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এখানে কমর্রত স্বাস্থ্য সেবাদানকারী সজিবের স্বেচ্ছাচারিতায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে।গত ২২ মার্চ শনিবার গ্রামবাসি ক্লিনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজশাহী জেলা প্রশাসক(ডিসি), জেলা সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার (টিএইচও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) ৯, ৮, ৩, ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত হরিপুরে অবস্থিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার কমিউনিটি ক্লিনিক। এই ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার হিসাবে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ধানোরা গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান সজিব। সে একজন সরকারী কর্মচারী সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ক্লিনিক প্রতিদিন সকাল ০৯:৩০ ঘটিকায় থেকে বিকেল ৩:০০ ঘটিকায় পর্যন্ত ক্লিনিক খোলা রাখার কথা। কিন্তু দায়িত্বরত মোস্তাফিজুর রহমান সজিব তার নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী সকাল ১০:০০ ঘটিকার সময় খোলে এবং দুপুর ১:০০ ঘটিকার সময় বন্ধ করে এবং শনিবার দিন সরকারী ছুটি বলে বন্ধ রাখেন। এ কারণে অনেক মানুষ চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পাচ্ছেন না হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন। গত ২৩ মার্চ শনিবার সকাল ১০টার সময় গ্রামের লোকজন ক্লিনিকে ওষুধ নিতে গিয়ে দেখেন ক্লিনিক বন্ধ। সেখানে তারা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও তার দেখা পাননি। ফলে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে (টিএইচও) ০১৭৬৯-৯৬১৬৬১ মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করেন। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় ক্লিনিকের সভাপতি ও ইউপি সদস্য মতিউর রহমান মোবাইল ফোনে ক্লিনিক বন্ধের বিষয়ে অবগত করা হয়।
গ্রামবাসি জানান, প্রায়দিন ক্লিনিক বন্ধ থাকে এমনকি সরকারি ওষুধ পাওয়া যায় না। মোস্তাফিজুর রহমান সজিব কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে তার নিজস্ব লোক দ্বারা কমিটি করে নিজের সম্পত্তির মতো ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছে। সে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও সরকারি ওষুধ বিক্রি করে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। সে একজন কর্মচারী, সে কত টাকা বেতন পাই। সে ক্লিনিকের সামনে হরিপুরের জৈনক ব্যাক্তির নিকট হইতে ৩২ লাখ টাকা দিয়ে ১০ বিঘা জমি বন্ধকী নিয়েছে, তার দুইটা মটরসাইকেল এবং একটি প্রাইভেটকার আছে। সে সরকারকে কত টাকা কর দেন এবং তার আয়ের উৎস্য ও সম্পদের বিষয়ে দুদুকের অনুসন্ধান দাবি করেছেন গ্রামবাসি।
এদিকে প্রতি বৃহস্পতিবার সরকারী বরাদ্দকৃত ওষুধ কমিটির কমপক্ষে ৩ জন সদস্যের সামনে খোলা আবশ্যক কিন্তু মোস্তাফিজুর রহমান সজিব নিজেই সেটা করে থাকে কাউকে কিছু বলে না।এছাড়াও এখানে ৩২ প্রকার ওষুধ সরকার দিয়ে থাকেন কিন্তু সে ৪ থেকে ৫ প্রকার ওষুধ মানুষকে দেয় আর বাঁকী ওষুধ দেয় না। সে সরকারী কর্ম ঘন্টা ফাকি দেয় ও ওষুধ বিক্রয় করে সরকারী অর্থ আত্মাসাত করে কালোটাকার পাহাড় গড়িয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসি জানান, মোস্তাফিজুর রহমান সজিব রোগী ধরা দালাল হিসেবে কাজ করে। গ্রামের অশিক্ষিত বা স্বশিক্ষিত সহজ সরল মানুষ সাধারণ কোনো রোগ আক্রান্ত হয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে আসলে, তাদের বড় ধরণের রোগের কথা বলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিয়ে নিদ্রিষ্ট ক্লিনিকে পাঠিয়ে কমিশন আদায় করেন। এভাবে রোগী বাণিজ্যে করে সে কোটিপতি হয়েছেন।
তারা বলেন, এসব বিষয়ে গোপণে অনুসন্ধান করা হলে অভিযোগের সত্যতা মিলবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান সজিব এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) বার্নাবাস হাসদাক বলেন, এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।
প্রিন্ট