অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত বৃহস্পতিবার দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আসামিরা হলেন, কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আশরাফ উদ্দিন শেখ ওরফে রনি (৪২)। সে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫১ ইকবাল রোডের বাসিন্দা বদরুদ্দিন শেখ ও রিতা শেখের ছেলে।
মামলায় অভিযুক্ত অপর আসামি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নওয়াব আলী (৬২)। সে কুষ্টিয়া পৌরসভার কালিশংকরপুরের কুতুবউদ্দিন সড়কের বাসিন্দা আব্দুল আজিজের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মামলার প্রধান আসামি আশরাফ উদ্দিন শেখ ওরফে রনি কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক পদে কর্মরত রয়েছেন। এ চাকরির তথ্য গোপন করে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগে হিসাব সহকারী পদে যোগদান করে।
২০১৬ সালের পয়লা ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বেতন-ভাতা বাবদ ২৩ লাখ ৭ হাজার ৩২ টাকা সরকারি অর্থ উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করে দন্ডবিধির ৪২০/৪০৯ এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অর্থাৎ আশরাফ উদ্দিন একটি প্রতিষ্ঠানের (কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ) স্থায়ী পদে চাকুরিরত থেকেও তথ্য গোপন করে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে (তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড) স্থায়ী পদে অর্থাৎ একই ব্যক্তি একই সময়ে দুটি প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী পদে চাকরি করেছেন।
উক্ত অপরাধ সংঘটনে আশরাফকে অবৈধভাবে দীর্ঘদিনের স্বাক্ষর একদিনে দেওয়ার সুযোগ দিয়ে সহায়তা করে ইসলামিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নওয়াব আলী দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে। এজন্য আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক মামলাটি দায়ের করেছে।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামিয়া কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমি কোন দিনই তিতাস গ্যাসে চাকুরীর জন্য আবেদন করিনি। আমি ন্যাশনাল টিমের ভলিবল প্লেয়ার ছিলাম। তাদের একটা ভলিবল টিম ছিলো। ওই টিমে আমি ক্যাপ্টেন ছিলাম। আমি ৬ বছর খেলে এই টাকাটা নিয়েছি। আমি একটাই চাকরি করি। আমি এখনো ইসলামিয়া কলেজেই চাকরি করি।
ইসলামিয়া কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ নওয়াব আলী বলেন, আমি দেখে ও জেনে আপনাকে বিস্তারিত জানাবো।
মামলার সত্যতা স্বীকার করে দুর্নীতি দমন কমিশন কুষ্টিয়ার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বলেন, আমাদের যা অভিযোগ তা আমরা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছি। এই মুহুর্তে এর বেশী কিছু বলা সম্ভব না।
প্রিন্ট