নাম জটিলতায় হস্তান্তর করা হয়নি রাজধানীর বেইলি রোডে আগুন ঘটনায় মারা যাওয়া সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর লাশ। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তার আসল নাম বৃষ্টি খাতুন। তবে ডিএনএ পরীক্ষার পর অভিভাবকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া। রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বৃষ্টির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃষ্টির ফুফু রোজিনা আক্তার জানান, তিনি সাভারে থাকেন। বৃষ্টি তার সঙ্গেই সাভারে থাকতেন। যাতায়াতের দূরত্ব কমানোর চিন্তা করেই বৃষ্টি হোস্টেলে ওঠেন। এখন নাম জটিলতায় তার লাশটিও পেতে পরিবারের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে প্রশাসন থেকে জানিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টি তার মা বিউটি বেগমকে ফোন করে জানিয়েছিল অনুষ্ঠান শেষ হলো। সে হোস্টেলে ফিরবে। তারপর রাতে কথা বলবে। কিন্তু আর কথা হয়নি। পরের দিন ১ মার্চ খবর এলো বৃষ্টি আর নেই।
বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি। সে ইডেন কলেজে পড়াশোনা করতো। সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি। তার বাবা শাবলুল আলম সবুজ ঢাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি মেয়ের লাশ আনতে মর্গে গেছেন। তারপর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।
বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতির সহকর্মীরা দাবি করেন, তিনি দ্য রিপোর্ট অনলাইন পোর্টালের ইলেকশন কমিশন বিটের রিপোর্টার। এই নামেই সবাই চেনেন তাকে। অন্য একটি অফিসে যে সিভি পাঠিয়েছিলেন সেখানেও তার নাম অভিশ্রুতি শাস্ত্রী।
বৃষ্টি ওরফে অভিশ্রুতির বাবা শাবলুল আলম সবুজ জানান, তিন বোনের মধ্যে বৃষ্টি বড়। তিনি লাশ বুঝে নিতে ঢাকায় রয়েছেন। রাতে লাশ দেওয়া হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষার পর সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন। বৃষ্টির লাশ নিয়ে তিনি কুষ্টিয়ার বাড়িতে ফিরবেন। সেখানে বৃষ্টির জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হবে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে থাকা আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে আসছেন।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়ের প্রকৃত নাম মোছা. বৃষ্টি খাতুন। সে লেখালেখি করে- সেজন্য তাকে সবাই অভিশ্রুতি নামে ডাকে বলে সে জানিয়েছিল। বৃষ্টি ইডেন কলেজের দর্শন বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। গত বছরই ওর পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। দুটি পরীক্ষা বাদ আছে। ওর রোল নম্বর-২৭৬। ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ওকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওর মা চেষ্টা করছিল। আমিও চেষ্টা করেছি। ১ মার্চ জোহরের নামাজ পড়ার পর ওর এক বান্ধবীর ফোনকল পাই। সে বলে, বেইলি রোডের আগুনে অভিশ্রুতি মারা গেছে। এ খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসি।
প্রিন্ট