ঢাকা , রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo শ্বাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ জামাইয়ের বিরুদ্ধে Logo পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ফরিদপুর সদর উপজেলা আসন্ন নির্বাচনে করণীয় নির্ধারণে আলোচনা সভা Logo নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত যুবক অনুপ পাইন এর মৃত্যু Logo শ্রমিকদের ভিসা সহজ করার জন্য যুক্তরাজ্যর প্রতি আহ্বান প্রবাসী প্রতিমন্ত্রীর Logo কালুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রথম নবজাতকের ঘরে ফেরা Logo ভাঙ্গার আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে চান মোখলেছুর রহমান সুমন Logo ইতালিতে ‘কমিউনিটি মিট উইথ অ্যাম্বাসি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত Logo নরসিংদী সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সুপেয় পানির বুথ স্থাপন Logo রেলপাতের তাপমাত্রা ছড়িয়ে যাচ্ছে ৫৭ ডিগ্রি, বেঁকে যাচ্ছে লাইন Logo খরায় পুড়া পানচাষিদের সাথে সচেতনতামূলক সভা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

অচল নয় তবুও কুষ্টিয়ায় কয়েন জমা নিচ্ছে না ব্যাংক

কুষ্টিয়াতে ভিক্ষুকরাও নিতে চাচ্ছে না এক ও দুই টাকার কয়েন। ছোট-বড় ব্যবসায়ী, হাট বাজার কোথাও চলে না এই কয়েন। গত কয়েক বছর ধরে অজানা কারণেই কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে অচল হয়ে পড়েছে এই কয়েন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনো ব্যাংক নিতে চায় না, ফলে অচল হয়ে পড়েছে কয়েনগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন জনসচেতনতার অভাব, তাছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিলে জেলায় আবারও সচল হবে এক ও দুই টাকার কয়েন।জেলায় কয়েক বছর ধরে লেনদেন নেই এক ও দুই টাকার কয়েনের।

দীর্ঘদিন ধাতব এই কয়েনের লেনদেন না থাকায় এই কয়েনগুলো জেলা থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। পঁচিশ পয়সা ও পঞ্চাশ পয়সার ধাতব মুদ্রা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। এরও বহু আগে পাঁচ ও দশ পয়সা হারিয়ে গেছে এই জেলা থেকে। এক ও দুই টাকার কয়েন লেনদেন না থাকাই ক্রেতা ও বিক্রেতারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অনেক সময় ক্ষুদ্র পণ্য কিনতে গিয়ে এক টাকা বা দুই টাকার কয়েন প্রচলন না থাকায় কথা কাটাকাটিতে জড়াচ্ছেন উভয় পক্ষই। এমন চিত্র কুষ্টিয়ায় অহরহর দেখা যাচ্ছে।

অনেকে আবার অভিযোগ করেন, ব্যাংকে গেলেও ধাতব মুদ্রার কয়েনগুলো নেওয়া হয় না। কুষ্টিয়া জেলায় এক টাকা, দুই টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন এখন অচল। এমনকি ভিক্ষুককে দিতে চাইলেও এক, দুই টাকার কয়েন তারা নেয় না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই কয়েন অচল না হলেও কুষ্টিয়া জেলার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো তা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে রীতিমতো দুর্ভোগে পড়েছেন এ জেলার মানুষ।এদিকে হাটবাজারের দোকানিরাও কেনাবেচায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনীহা দেখানোয় বিপাকে সাধারণ মানুষ।

রিকশা, ভ্যান বা মুদি দোকানদারেরাও কেনাকাটায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনাগ্রহী। হাটবাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক, দুই টাকার কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় তর্ক। কোনও পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি হয় না। জেলায় এক, দুই টাকার মুদ্রা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে এমনই সব তথ্য জানা যায়।
লেনদেন বা কেনাকাটায় কাগজের নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত সরকার অনুমোদিত যেকোনো মূল্যমানের কয়েন যে কেউ নিতে বাধ্য। কিন্তু কুষ্টিয়ায় এক দুই টাকার কয়েন লেনদেন না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে আছে হাজার হাজার টাকার কয়েন।

জেলায় কয়েক বছর ধরে লেনদেন নেই এক ও দুই টাকার কয়েনের। দীর্ঘদিন ধাতব এই কয়েনের লেনদেন না থাকায় এই কয়েনগুলো জেলা থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। পঁচিশ পয়সা ও পঞ্চাশ পয়সার ধাতব মুদ্রা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। এরও বহু আগে পাঁচ ও দশ পয়সা হারিয়ে গেছে এই জেলা থেকে। এক ও দুই টাকার কয়েন লেনদেন না থাকাই ক্রেতা ও বিক্রেতারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অনেক সময় ক্ষুদ্র পণ্য কিনতে গিয়ে এক টাকা বা দুই টাকার কয়েন প্রচলন না থাকায় কথা কাটাকাটিতে জড়াচ্ছেন উভয় পক্ষই। এমন চিত্র কুষ্টিয়ায় অহরহর দেখা যাচ্ছে।

অনেকে আবার অভিযোগ করেন, ব্যাংকে গেলেও ধাতব মুদ্রার কয়েনগুলো নেওয়া হয় না। কুষ্টিয়া জেলায় এক টাকা, দুই টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন এখন অচল। এমনকি ভিক্ষুককে দিতে চাইলেও এক, দুই টাকার কয়েন তারা নেয় না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই কয়েন অচল না হলেও কুষ্টিয়া জেলার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো তা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে রীতিমতো দুর্ভোগে পড়েছেন এ জেলার মানুষ।

এদিকে হাটবাজারের দোকানিরাও কেনাবেচায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনীহা দেখানোয় বিপাকে সাধারণ মানুষ। রিকশা, ভ্যান বা মুদি দোকানদারেরাও কেনাকাটায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনাগ্রহী। হাটবাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক, দুই টাকার কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় তর্ক। কোনও পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি হয় না। জেলায় এক, দুই টাকার মুদ্রা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে এমনই সব তথ্য জানা যায়।

লেনদেন বা কেনাকাটায় কাগজের নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত সরকার অনুমোদিত যেকোনো মূল্যমানের কয়েন যে কেউ নিতে বাধ্য। কিন্তু কুষ্টিয়ায় এক দুই টাকার কয়েন লেনদেন না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে আছে হাজার হাজার টাকার কয়েন।কুষ্টিয়া বড়বাজার, পৌরবাজার, রাজারহাট, চৌড়হাস মোড়, বিআইডিসি বাজার, দবির মোল্লার রেলগেট এলাকা’সহ বিভিন্ন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এক, দুই টাকার কয়েন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এখনো এক টাকার চকলেট থেকে শুরু করে অনেক পণ্য পাওয়া যায় আবার অনেক কোম্পানি তাদের পণ্যের দাম ৯ টাকা, ১৪ টাকা, ১৯ টাকা বা এক দুই টাকার ফিকশন করে দিয়েছে। এই পণ্য বিক্রি করতে গেলে ক্রেতার সাথে সমস্যায় পড়তে হয়।

কয়েন নিতে বাধ্য হওয়া সম্পর্কে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, অসংখ্য পণ্য রয়েছে যেগুলো বিক্রি করতে হলে খুচরা টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এ জেলা শহরে এক, দুই টাকার কয়েন কেউ নিতে চান না। তবে কেন কয়েন নিতে সবার এত অনীহা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কেউ। তারা মনে করেন এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজর নেই বলেই আজ এই অবস্থা।

কুষ্টিয়া শহরে চা বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, চিনি যখন ৩০ টাকা কেজি কিনেছি তখনও এক কাপ চায়ের দাম ৫ টাকা ছিল, এখন ১৪০ টাকা কেজি চিনি কিনেও ৫ টাকায় দেয় মানুষ। ৬ টাকা বা ৭ টাকা চাইলে বলে ৫ টাকা বা ১০ টাকার নোট আছে।তিনি বলেন, এক বা দুই টাকার কয়েন চালু থাকলে আমরা চায়ের দাম এক দুই টাকা বেশি নিতে পারতাম। চিনি, চা পাতা, গ্যাসের দাম বেড়েছে কিন্তু আমরা চায়ের দাম বাড়াতে পারিনা কয়েন চালু না থাকায়, ৫ টাকায় চা বিক্রি করে আমাদের এখন ক্ষতি হচ্ছে।

আরেক চা বিক্রেতা লিটন একই অভিযোগ করে বলেন, চিনিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে, কুষ্টিয়ায় কয়েন প্রচলন না থাকায় আমাদের চায়ের দাম বাড়াতে পারিনি।তারা বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি কুষ্টিয়া জেলায় কয়েনগুলো চালু করতে পারেন তাহলে আমাদের সবার জন্যই উপকার হয় এবং আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসা করে দুই টাকা আয় করতে পারব।

এদিকে মুদিখানা বা ষ্টেশনারী দোকানগুলোতে দেখা যায় কেনাকাটা শেষে কাস্টমর এক টাকা বা দুই টাকা, পাঁচ টাকা ফেরত পেলে সেই ক্ষেত্রে টাকা বা মুদ্রার পরিবর্তে চকলেট দিয়ে লেনদেন করছে দোকানিরা। অথবা প্রয়োজন না থাকলেও সমপরিমাণ টাকার পণ্য নিতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতা। এতে করে ক্রেতাগণ পড়ছে বিপাকে।শাহিন আলম নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে শহরের এক ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে পণ্য কিনলাম, দুই টাকার পরিবর্তে আমাকে ফেরত হিসেবে একটা চকলেট দিল। কয়েন লেনদেন থাকলে আমি নগদ টাকা পেলে সেটাই আমার উপকার হতো।এই ব্যাপারে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, এক, দুই বা পাঁচ টাকার কয়েন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এবং প্রচলন আছে।

ব্যাংকে আসলে আমরা নিবো, কিন্তু মার্কেটে কেন লেনদেন হচ্ছে না এটা আমি বলতে পারব না।বাস্তবে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার কোন ব্যাংক এ কেউ খুচরা পয়সা বা এক দুই টাকার কয়েন বা টাকার লেনদেন করছে না। এ বিষয়ে কয়েকজন ব্যাংক গ্রাহক জানান, আগে কয়েন আনতাম কিন্তু ব্যাংক তা গ্রহণ না করার জন্য এখন আর আনি না।কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. এহতেশাম রেজা বলেন, কয়েন অচলের ব্যাপারে আমি সকল ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছি তারা জানিয়েছেন ব্যাংকে কয়েন লেনদেন সচল আছে। আমার নির্দেশনা আছে কুষ্টিয়ার সকল দোকানগুলোতে যেন কয়েন লেনদেন করে। তারপরেও যদি কোন দোকানদার কয়েন নিতে বা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন, তাহলে আমরা সেইসব দোকানগুলোতে অভিযান চালাবো।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্বাশুড়িকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ জামাইয়ের বিরুদ্ধে

error: Content is protected !!

অচল নয় তবুও কুষ্টিয়ায় কয়েন জমা নিচ্ছে না ব্যাংক

আপডেট টাইম : ০৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪

কুষ্টিয়াতে ভিক্ষুকরাও নিতে চাচ্ছে না এক ও দুই টাকার কয়েন। ছোট-বড় ব্যবসায়ী, হাট বাজার কোথাও চলে না এই কয়েন। গত কয়েক বছর ধরে অজানা কারণেই কুষ্টিয়া জেলা জুড়ে অচল হয়ে পড়েছে এই কয়েন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনো ব্যাংক নিতে চায় না, ফলে অচল হয়ে পড়েছে কয়েনগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন জনসচেতনতার অভাব, তাছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিলে জেলায় আবারও সচল হবে এক ও দুই টাকার কয়েন।জেলায় কয়েক বছর ধরে লেনদেন নেই এক ও দুই টাকার কয়েনের।

দীর্ঘদিন ধাতব এই কয়েনের লেনদেন না থাকায় এই কয়েনগুলো জেলা থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। পঁচিশ পয়সা ও পঞ্চাশ পয়সার ধাতব মুদ্রা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। এরও বহু আগে পাঁচ ও দশ পয়সা হারিয়ে গেছে এই জেলা থেকে। এক ও দুই টাকার কয়েন লেনদেন না থাকাই ক্রেতা ও বিক্রেতারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অনেক সময় ক্ষুদ্র পণ্য কিনতে গিয়ে এক টাকা বা দুই টাকার কয়েন প্রচলন না থাকায় কথা কাটাকাটিতে জড়াচ্ছেন উভয় পক্ষই। এমন চিত্র কুষ্টিয়ায় অহরহর দেখা যাচ্ছে।

অনেকে আবার অভিযোগ করেন, ব্যাংকে গেলেও ধাতব মুদ্রার কয়েনগুলো নেওয়া হয় না। কুষ্টিয়া জেলায় এক টাকা, দুই টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন এখন অচল। এমনকি ভিক্ষুককে দিতে চাইলেও এক, দুই টাকার কয়েন তারা নেয় না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই কয়েন অচল না হলেও কুষ্টিয়া জেলার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো তা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে রীতিমতো দুর্ভোগে পড়েছেন এ জেলার মানুষ।এদিকে হাটবাজারের দোকানিরাও কেনাবেচায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনীহা দেখানোয় বিপাকে সাধারণ মানুষ।

রিকশা, ভ্যান বা মুদি দোকানদারেরাও কেনাকাটায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনাগ্রহী। হাটবাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক, দুই টাকার কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় তর্ক। কোনও পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি হয় না। জেলায় এক, দুই টাকার মুদ্রা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে এমনই সব তথ্য জানা যায়।
লেনদেন বা কেনাকাটায় কাগজের নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত সরকার অনুমোদিত যেকোনো মূল্যমানের কয়েন যে কেউ নিতে বাধ্য। কিন্তু কুষ্টিয়ায় এক দুই টাকার কয়েন লেনদেন না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে আছে হাজার হাজার টাকার কয়েন।

জেলায় কয়েক বছর ধরে লেনদেন নেই এক ও দুই টাকার কয়েনের। দীর্ঘদিন ধাতব এই কয়েনের লেনদেন না থাকায় এই কয়েনগুলো জেলা থেকে বিলুপ্ত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। পঁচিশ পয়সা ও পঞ্চাশ পয়সার ধাতব মুদ্রা অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়েছে। এরও বহু আগে পাঁচ ও দশ পয়সা হারিয়ে গেছে এই জেলা থেকে। এক ও দুই টাকার কয়েন লেনদেন না থাকাই ক্রেতা ও বিক্রেতারা একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অনেক সময় ক্ষুদ্র পণ্য কিনতে গিয়ে এক টাকা বা দুই টাকার কয়েন প্রচলন না থাকায় কথা কাটাকাটিতে জড়াচ্ছেন উভয় পক্ষই। এমন চিত্র কুষ্টিয়ায় অহরহর দেখা যাচ্ছে।

অনেকে আবার অভিযোগ করেন, ব্যাংকে গেলেও ধাতব মুদ্রার কয়েনগুলো নেওয়া হয় না। কুষ্টিয়া জেলায় এক টাকা, দুই টাকার ধাতব মুদ্রা বা কয়েন এখন অচল। এমনকি ভিক্ষুককে দিতে চাইলেও এক, দুই টাকার কয়েন তারা নেয় না। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই কয়েন অচল না হলেও কুষ্টিয়া জেলার সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো তা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে রীতিমতো দুর্ভোগে পড়েছেন এ জেলার মানুষ।

এদিকে হাটবাজারের দোকানিরাও কেনাবেচায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনীহা দেখানোয় বিপাকে সাধারণ মানুষ। রিকশা, ভ্যান বা মুদি দোকানদারেরাও কেনাকাটায় এক, দুই টাকার কয়েন নিতে অনাগ্রহী। হাটবাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এক, দুই টাকার কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় তর্ক। কোনও পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি হয় না। জেলায় এক, দুই টাকার মুদ্রা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা হলে এমনই সব তথ্য জানা যায়।

লেনদেন বা কেনাকাটায় কাগজের নোটের পাশাপাশি বাজারে প্রচলিত সরকার অনুমোদিত যেকোনো মূল্যমানের কয়েন যে কেউ নিতে বাধ্য। কিন্তু কুষ্টিয়ায় এক দুই টাকার কয়েন লেনদেন না হওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে পড়ে আছে হাজার হাজার টাকার কয়েন।কুষ্টিয়া বড়বাজার, পৌরবাজার, রাজারহাট, চৌড়হাস মোড়, বিআইডিসি বাজার, দবির মোল্লার রেলগেট এলাকা’সহ বিভিন্ন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এক, দুই টাকার কয়েন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এখনো এক টাকার চকলেট থেকে শুরু করে অনেক পণ্য পাওয়া যায় আবার অনেক কোম্পানি তাদের পণ্যের দাম ৯ টাকা, ১৪ টাকা, ১৯ টাকা বা এক দুই টাকার ফিকশন করে দিয়েছে। এই পণ্য বিক্রি করতে গেলে ক্রেতার সাথে সমস্যায় পড়তে হয়।

কয়েন নিতে বাধ্য হওয়া সম্পর্কে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, অসংখ্য পণ্য রয়েছে যেগুলো বিক্রি করতে হলে খুচরা টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এ জেলা শহরে এক, দুই টাকার কয়েন কেউ নিতে চান না। তবে কেন কয়েন নিতে সবার এত অনীহা এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি কেউ। তারা মনে করেন এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজর নেই বলেই আজ এই অবস্থা।

কুষ্টিয়া শহরে চা বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, চিনি যখন ৩০ টাকা কেজি কিনেছি তখনও এক কাপ চায়ের দাম ৫ টাকা ছিল, এখন ১৪০ টাকা কেজি চিনি কিনেও ৫ টাকায় দেয় মানুষ। ৬ টাকা বা ৭ টাকা চাইলে বলে ৫ টাকা বা ১০ টাকার নোট আছে।তিনি বলেন, এক বা দুই টাকার কয়েন চালু থাকলে আমরা চায়ের দাম এক দুই টাকা বেশি নিতে পারতাম। চিনি, চা পাতা, গ্যাসের দাম বেড়েছে কিন্তু আমরা চায়ের দাম বাড়াতে পারিনা কয়েন চালু না থাকায়, ৫ টাকায় চা বিক্রি করে আমাদের এখন ক্ষতি হচ্ছে।

আরেক চা বিক্রেতা লিটন একই অভিযোগ করে বলেন, চিনিসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে, কুষ্টিয়ায় কয়েন প্রচলন না থাকায় আমাদের চায়ের দাম বাড়াতে পারিনি।তারা বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি কুষ্টিয়া জেলায় কয়েনগুলো চালু করতে পারেন তাহলে আমাদের সবার জন্যই উপকার হয় এবং আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসা করে দুই টাকা আয় করতে পারব।

এদিকে মুদিখানা বা ষ্টেশনারী দোকানগুলোতে দেখা যায় কেনাকাটা শেষে কাস্টমর এক টাকা বা দুই টাকা, পাঁচ টাকা ফেরত পেলে সেই ক্ষেত্রে টাকা বা মুদ্রার পরিবর্তে চকলেট দিয়ে লেনদেন করছে দোকানিরা। অথবা প্রয়োজন না থাকলেও সমপরিমাণ টাকার পণ্য নিতে বাধ্য হচ্ছে ক্রেতা। এতে করে ক্রেতাগণ পড়ছে বিপাকে।শাহিন আলম নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে শহরের এক ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে পণ্য কিনলাম, দুই টাকার পরিবর্তে আমাকে ফেরত হিসেবে একটা চকলেট দিল। কয়েন লেনদেন থাকলে আমি নগদ টাকা পেলে সেটাই আমার উপকার হতো।এই ব্যাপারে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম জানান, এক, দুই বা পাঁচ টাকার কয়েন সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এবং প্রচলন আছে।

ব্যাংকে আসলে আমরা নিবো, কিন্তু মার্কেটে কেন লেনদেন হচ্ছে না এটা আমি বলতে পারব না।বাস্তবে সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার কোন ব্যাংক এ কেউ খুচরা পয়সা বা এক দুই টাকার কয়েন বা টাকার লেনদেন করছে না। এ বিষয়ে কয়েকজন ব্যাংক গ্রাহক জানান, আগে কয়েন আনতাম কিন্তু ব্যাংক তা গ্রহণ না করার জন্য এখন আর আনি না।কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. এহতেশাম রেজা বলেন, কয়েন অচলের ব্যাপারে আমি সকল ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে কথা বলেছি তারা জানিয়েছেন ব্যাংকে কয়েন লেনদেন সচল আছে। আমার নির্দেশনা আছে কুষ্টিয়ার সকল দোকানগুলোতে যেন কয়েন লেনদেন করে। তারপরেও যদি কোন দোকানদার কয়েন নিতে বা দিতে অনীহা প্রকাশ করেন, তাহলে আমরা সেইসব দোকানগুলোতে অভিযান চালাবো।