ভোট প্রচারনায় গিয়ে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করে ভোটারদের দৃষ্টি কেড়েছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে,আ’লীগ দলীয় প্রার্থী পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহ্রিয়ার আলম এমপি। মঙ্গলবার(২ জানুয়ারি) বাঘা উপজেলার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রচারনায় গিয়ে পথসভা ও গন সংযোগ কালে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে আদর করেন তিনি। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রতিমন্ত্রী তার নিজস্ব ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন- মা তুলে দিলেন তার শিশুকে আমার কোলে। বাচ্চাটাও কেন যেন তাকিয়ে থাকলো আমার দিকে। চকরাজাপুরের ভবিষ্যৎ নৌকার ভোটার। তারা বড় হয়ে হয়তো জানবেই না তার বাবা-মা কত কষ্ট করে জীবনযাপন করেছেন। আলাদা ইউনিয়ন হয়েছে, সোলার ছেড়ে বিদুৎ হয়েছে, রাস্ত হয়েছে, বড় একটা অংশের নদী ভাংগন থামানো হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী-ওরাই স্মার্ট চকরাজাপুরের প্রথম প্রজন্ম! হয়তো সে বড় হযে চর বা ডাঙার পার্থক্য বুঝবে না। কিন্তু আমি চাইব সে জানুক তার পূর্বসূরিরা সংগ্রাম করেছে নদীভাঙনের সাথে, অন্ধকারের সাথে, কাদা-মাটির মাঝে..। আর স্মৃতিতে রাখুক আমাকেও, লড়েছিলাম আমিও এই চরের অবহেলিত মানুষের জন্য..। ভাগ্য বদলের চেষ্টা করেছি, পূর্ণাঙ্গ ইউর্নিয়নে রূপ দিয়েছি, শহরের এমন কোনও উন্নয়ন নেই, যার ছোঁয়া এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করিনি! তিনি লিখেছেন, নাম চকরাজাপুর ইউনিয়ন হলেও ভালবেসে এখানকার মানুষ নাম দিয়েছে “চর শাহরিয়ার”। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এই এলাকার সাথে মিশে আছে আবেগ ও ভালোবাসা । সবসময় ভেবেছি চরের এই মানুষদের নিয়ে। ১৫ বছরের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন শাহ্রিয়ার আলম।
দোয়া ও ভালোবাসা জানিয়ে অনেকের মধ্যে মোঃ সাব্বির হোসেন কমান্ডে লিখেছেন, মায়ের কাছে যেমন শিশু নিরাপদ,ঠিক তেমনি আপনার কাছে আমরা চারঘাট বাঘা বাসী নিরাপদ লিডার।
প্রচারনার অংশ হিসেবে ভোটারদের কাছে টানতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন প্রার্থী ও সমর্থকরা। কখনো পায়ে হেটে,কখনো ভ্যানে চড়ে আবার কখনো বিভিন্ন যানবাহনে গ্রামে গামে গিয়ে গনসংযোগ-পথসভা করছেন।
এদিন সমর্থিত লোকজন নিয়ে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে গনসংযোগ ও পথসভা করে ভোট প্রার্থনা করেন,স্বতন্ত্র প্রার্থী রাহেনুল হক । কাঁচি প্রতীকে ভোট দিয়ে বিজয় নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এলাকার সন্তান হিসেবে ভালবাসার মাধ্যমে কাঁচি প্রতীকে ভোট দিয়ে আপনাদের সেবার করার সুযোগ তৈরি করে দিবেন। এবার আপনাদের ঐক্যবদ্ধ সমর্থনে বাঘা-চারঘাটে নের্তৃত্বের পরিবর্তন আসবে আপনাদের ভোট প্রদানের মাধ্যমে।
প্রচারনায় অংশ নেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এ্যাড.লায়েব উদ্দীন লাভলু, বাঘা পৌর মেয়র ও জেলা আ’লীগের সদস্য আক্কাছ আলী, পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ।
আসনটিতে ৬ জন প্রার্থী থাকলেও সরব প্রচারনায় এগিয়ে রয়েছেন- উপজেলা আ’লীগের সভাপতি, তিনবারের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী- জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রাহেনুল হক রায়হান।
প্রচারনায় নিরব অপর ৪ প্রার্থী- জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন রিন্টু (লাঙ্গল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মহসিন আলী (আম), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের জুলফিকার মান্নান জামী (মশাল), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অধ্যক্ষ (অবঃ) আব্দুস সামাদ (নোঙ্গর)। তবে শেষ সময়ে পোষ্টার সাঁটিয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন- নোঙ্গর, আম ও মশাল প্রতীকের প্রার্থীরা।
নতুন ভোটার হাপসা খাতুন জানান, শাহরিয়ার আলম ও রাহেনুল হক রায়হান ছাড়া অন্য প্রার্থীদের চেনেননা। তবে এলাকার মানুষ হিসেবে শামসুদ্দিন রিন্টু ও অধ্যক্ষ (অবঃ) আব্দুস সামাদের নাম শুনেছেন।
আব্দুল হালিম নামের একজন ভোটার বলেন, সব দলের অংশ গ্রহনে নির্বাচন দেখেছি। নির্বাচনের ওই সময়ে ঈদের মতো একটা আমেজ ছিল। এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করায়, ভোটের প্রচারনায় শুধু নৌকা ও কাঁচি প্রার্থীকের প্রার্থী সমর্থকদের দেখা যাচ্ছে। তার ভাষ্য, একই দলের দু’জন প্রার্থী হওয়ায় নেতা কর্মীরা বিভক্ত হয়ে প্রচারনা চালাচ্ছে।
বাঘা-চারঘাট মিলে রাজশাহী-৬ আসন। মোট ভোটার ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ৫২৭ ভোট। এরমধ্যে পুরুষ ১ লক্ষ ৭০ হজার ৫২৮ ও নারী ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৯৯৯ ভোট। ১১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে বাঘা উপজেলায় ৬১ ও চারঘাট উপজেলায় ৫৭টি কেন্দ্র রযেছে।
বাঘায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৬১ ভোট। পুরুষ ৮১ হাজার ৪৭২ ও নারী ৮১ লক্ষ ৩৮৯ ভোট। চারঘাটে ১ লক্ষ ৭৭ হাজার ৬৬৬ ভোট। পুরুষ ৮৯ হাজার ৫৫ ও নারী ৮৮ হাজার ৬১০ ভোট।
প্রিন্ট