দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি ০১ (রাজাপুর –কাঠালিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের এম মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন। মঙ্গলবার বিকাল চারটায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষণা দেন তিনি। তার বিপরীতে ছিলেন বিএনপি থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ওমর বীর উত্তম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার জন্মে আওয়ামী লীগের রক্ত, এই রক্ত কখনো বেইমানি শিখেনি,এই রক্ত শিখিয়েছে এই জনপদের ত্যাগি ও নির্যাতিত আওয়ামী লীগ পরিবারের অধিকার আদায়ে কথা বলার। আমি এই অবহেলিত রাজাপুর কাঁঠালিয়ার আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে ১৯৮৬ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হই। সেদিন সাতটি ছাত্রলীগের ছেলেদের নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশের সাথে সংগ্রাম করতে করতে আজকের রাজাপুর কাঁঠালিয়ায় আওয়ামী লীগের এই বিশাল কর্মী বাহিনী গঠিত হয়েছে। আমি ২০০৮ সালে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। তখন আমাকে কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন না দিয়ে বজলুল হক হারুনকে মনোনয়ন দেয়া হয়। আমি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে আমার অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে মেনে ‘নেই। পরবর্তীতে হারুন সাহেব এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর যখন তিনি এই জনপদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে নিজের ব্যক্তিগত লোকদেরকে নিয়ে মনের মত কর্মকান্ড শুরু করেছিলেন ঠিক তখনই আমি এখানকার আওয়ামী লীগের অসহায় নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়াই। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি এখানকার মানুষের কাঙ্খিত প্রার্থী হওয়া সত্বেও আমি দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করে যাই। আপনারা জানেন এখানকার আওয়ামী লীগ কতটা অসহায় ছিল সেই অসহায় আওয়ামী লীগকে সুসংঘটিত করতে ব্যক্তিগতভাবে আমি তাদের পাশে থেকে আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি যার ফলে আজকে রাজাপুর কাঠালিয়ার আওয়ামীলীগ বিগত দিনের থেকেও অনেক বেশি শক্তিশালী।
আমি কখনো নেত্রীর সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ছিলাম না আর ভবিষ্যতেও থাকবো না। আমি এবারের নির্বাচনে মাননীয় নেত্রী যখন গণভবনে আমাদেরকে ডেকে বলেছেন নৌকার মনোনয়ন যাদেরকে দিতে পারিনি ইচ্ছা করলে তারা দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন। তখন আমি আমার এই আসনের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্তে মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করি। আমার এই মনোনয়ন ফরম গ্রহণ, জমাদান ও নির্বাচন ছিল এখানকার আওয়ামী লীগ ও সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের নির্বাচন।
তিনি বলেন,আপনারা জানেন এই আসনে নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, দলের স্বার্থে যে ঘটনাটি ঘটে যেটা কারোর কল্পনায়ও ছিলনা।
তিনি বলেন, আমি যদি নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হতাম তাহলে তো আমি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করিনি কারণ আমার চিন্তা চেতনা ছিল নৌকা । আমি কখনো নেত্রীর সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নৌকার বিপক্ষে ছিলাম না এবং ভবিষ্যতেও থাকবো না। আমি ঝালকাঠি- ০১, রাজাপুর – কাঠালিয়া সংসদীয় আসনের একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আজ আমি আমার ব্যক্তিগত কারণে সজ্ঞানে, সেচ্ছায় আমার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। সাথে সাথে আমার শুভাকাঙক্ষী ও সম্মানিত ভোটারদের অনুরোধ জানাচ্ছি সবাই আগামী ৭ তারিখের নির্বাচনে অবশ্যই কেন্দ্রে যাবেন এবং জননেত্রীর শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন এবং আগামী দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন,ঝালকাঠি জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. খান সাইফুল্লাহ পনির, রাজাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যাড. খায়রুল আলম সরফরাজসহ জেলা উপজেলার আওয়ামীলীগের নেত্রীবৃন্দ।
প্রিন্ট