ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়া সদর আসনে হানিফের ভোটের লড়াইয়ে মেয়রপুত্র তনু

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কুষ্টিয়া পৌরসভার পাঁচবারের নির্বাচিত মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে ক্রীড়া সংগঠক পারভেজ আনোয়ার তনু। গত সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কর্মী-সমর্থক নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শহিদুর রহমানের কাছ থেকে তিনি মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। তিনি কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

 

মনোনয়ন উত্তোলনের পর পারভেজ আনোয়ার তনু উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, এ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের স্বতন্ত্র ভোট করার জন্য বলেছেন। এতে কেউ বাধা দেবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই কথাকে বিশ্বাস করে মানুষের সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে আমি এই আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমি মনে করি কুষ্টিয়ায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে আরও উন্নয়ন হওয়া উচিত।

 

মনোনয়ন উত্তোলনের পরপরই মোটরসাইকেল এবং গাড়ি বহর সহকারে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পারভেজ আনোয়ার তনু শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন।

 

 

এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের আসনে পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনুর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণায় জেলাজুড়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান, মাহবুবউল আলম হানিফের সঙ্গে আনোয়ার আলীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো নয়। জেলার স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে জেলায় আনোয়ার আলীর একটি আলাদা রাজনৈতিক বলয় ছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আনোয়ার আলীর আর কোনো কর্তৃত্ব নেই। তাছাড়া তিনি বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির স্টেয়ারিং মাহবুব উল আলম হানিফের হাতে। পৌরসভার মেয়র পদ ছাড়া জেলার রাজনীতিতে তার আর কোনো প্রভাব নেই।

 

অন্যদিকে মেয়রের ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনুও আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো পদ পদবিতে নেই। তিনি দুইবার জেলা যুবলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। সর্বশেষ জেলা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক।

 

দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মাহবুব উল আলম হানিফের কোনো বিকল্প নেই। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, পর পর দুইবার কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের এমপি নির্বাচিত হওয়া এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে তাঁর হাত ধরে কুষ্টিয়া জেলাজুড়ে যে উন্নয়ন হয়েছে স্বাধীনতা পরবর্তী কোনো নেতা কিংবা সরকার তার সিঁকিভাগ উন্নয়নও কুষ্টিয়ায় করতে পারেনি। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকায় দল-মত নির্বিশেষে সবার আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন মাহবুবউল আলম হানিফ। তৃতীয়বারের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া সদর আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।

 

হানিফ ছাড়া এ আসন থেকে মনোনয়ন তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. এ এফ এম আমিনুল হক রতন, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনজুমান লাইলা বানু এবং ইউকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহাতাবুল হক জয়। তবে তাদের সবাইকে পেছনে ফেলে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন হানিফ।

 

মেয়র পুত্র পারভেজ আনোয়ার তনুর মনোনয়ন উত্তোলন প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, নৌকাকে জেতানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই এর বাইরে আমরা কোনো কিছু ভাবছি না। আর আমাদের নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া জেলার যে উন্নয়ন করেছেন তাতে করে দলের মধ্যেতো বটেই, দলের বাইরেও তার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি।

 

 

এদিকে মনোনয়ন না পাওয়ায় কুষ্টিয়ার আরও দুইটি আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন- কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরী ও কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক এমপি আব্দুর রউফ।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

কুষ্টিয়া সদর আসনে হানিফের ভোটের লড়াইয়ে মেয়রপুত্র তনু

আপডেট টাইম : ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন কুষ্টিয়া পৌরসভার পাঁচবারের নির্বাচিত মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে ক্রীড়া সংগঠক পারভেজ আনোয়ার তনু। গত সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কর্মী-সমর্থক নিয়ে সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শহিদুর রহমানের কাছ থেকে তিনি মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। তিনি কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

 

মনোনয়ন উত্তোলনের পর পারভেজ আনোয়ার তনু উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, এ আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের স্বতন্ত্র ভোট করার জন্য বলেছেন। এতে কেউ বাধা দেবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই কথাকে বিশ্বাস করে মানুষের সেবা করার প্রত্যয় নিয়ে আমি এই আসনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমি মনে করি কুষ্টিয়ায় অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তবে আরও উন্নয়ন হওয়া উচিত।

 

মনোনয়ন উত্তোলনের পরপরই মোটরসাইকেল এবং গাড়ি বহর সহকারে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে পারভেজ আনোয়ার তনু শহরে আনন্দ মিছিল বের করেন।

 

 

এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের আসনে পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনুর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণায় জেলাজুড়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সিনিয়র নেতা জানান, মাহবুবউল আলম হানিফের সঙ্গে আনোয়ার আলীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো নয়। জেলার স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে জেলায় আনোয়ার আলীর একটি আলাদা রাজনৈতিক বলয় ছিল। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আনোয়ার আলীর আর কোনো কর্তৃত্ব নেই। তাছাড়া তিনি বয়সের ভারে অনেকটাই ন্যুয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে জেলায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির স্টেয়ারিং মাহবুব উল আলম হানিফের হাতে। পৌরসভার মেয়র পদ ছাড়া জেলার রাজনীতিতে তার আর কোনো প্রভাব নেই।

 

অন্যদিকে মেয়রের ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনুও আওয়ামী লীগ বা এর অঙ্গ সংগঠনের কোনো পদ পদবিতে নেই। তিনি দুইবার জেলা যুবলীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। সর্বশেষ জেলা ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক।

 

দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে মাহবুব উল আলম হানিফের কোনো বিকল্প নেই। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, পর পর দুইবার কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের এমপি নির্বাচিত হওয়া এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ার কারণে তাঁর হাত ধরে কুষ্টিয়া জেলাজুড়ে যে উন্নয়ন হয়েছে স্বাধীনতা পরবর্তী কোনো নেতা কিংবা সরকার তার সিঁকিভাগ উন্নয়নও কুষ্টিয়ায় করতে পারেনি। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকায় দল-মত নির্বিশেষে সবার আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন মাহবুবউল আলম হানিফ। তৃতীয়বারের মতো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া সদর আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।

 

হানিফ ছাড়া এ আসন থেকে মনোনয়ন তুলেছিলেন বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার খাদ্য প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. এ এফ এম আমিনুল হক রতন, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আনজুমান লাইলা বানু এবং ইউকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহাতাবুল হক জয়। তবে তাদের সবাইকে পেছনে ফেলে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন হানিফ।

 

মেয়র পুত্র পারভেজ আনোয়ার তনুর মনোনয়ন উত্তোলন প্রসঙ্গে মন্তব্য জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, নৌকাকে জেতানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তাই এর বাইরে আমরা কোনো কিছু ভাবছি না। আর আমাদের নেতা মাহবুব উল আলম হানিফ কুষ্টিয়া জেলার যে উন্নয়ন করেছেন তাতে করে দলের মধ্যেতো বটেই, দলের বাইরেও তার কোনো বিকল্প তৈরি হয়নি।

 

 

এদিকে মনোনয়ন না পাওয়ায় কুষ্টিয়ার আরও দুইটি আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন- কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রেজাউল হক চৌধুরী ও কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক এমপি আব্দুর রউফ।