স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হলেও ঐতিহ্যবাহী মহাম্মমদপুরে এর আগে তেমন একটা উন্নয়ন চোখে পড়েনি। তবে মুজিব জন্মশতবার্ষিকীতে বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় মহম্মদপুরের উন্নয়ন ছোঁয়া এখন চোখে পড়ার মত।
বিশেষ করে মহম্মদপুর ভূমি অফিস। এখানে সেবা নিতে আসা বেশ কিছু মানুষের সাথে কথা বলে যানা গেলো তাদের মনের অনেক কথা।
এ জনপদের উন্নয়ন চিত্র ও মাগুরার মহম্মদপুরের সহকারী ভুমি অফিসের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সহকারী কমিশনার (ভুমি) এসিল্যান্ড হরেকৃষ্ণ অধিকারী সুমনের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা‘র সাথে।
উপজেলাবাসী মুগ্ধ হয়েছে সহকারী কমিশনার (ভুমি) আসার পরে মহম্মদপুরে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সত্যি তা প্রশংসার দাবিদার। বিভিন্ন মহলে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। সত্যিকার অর্থে জনগন মুগ্ধ হয়েছে। তবে এ উন্নয়নের পেছনে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল। মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম এর নির্দেশনায় মহম্মদপুরের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা পরিষদ,উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ।
সময়ের প্রত্যাশাঃ আমি আপনার অনুভূতি টা একটু জানতে চাচ্ছি এবং মহম্মদপুরের ভুমি অফিসের উন্নয়নের সম্পর্কে একটু বলেন।
উত্তরঃ ধন্যবাদ। অনুভুতি বলতে সত্যি এখন অনেক ভালো লাগে। মহম্মদপুর বাসীর সাথে মিশে গেছি। মনে হয় আমি মহম্মদপুরের বাসিন্দা।অন্যদিকে, আমি যখন মহম্মদপুরে আসি তখন অফিসের পরিবেশ আনুষঙ্গিক বিষয় দেখে আমার খারাপ লেগেছিলো। অফিসের পরিবেশ এতটা খারাপ হতে পারে না। আমার কর্মকালীন সময় যেভাবে হোক আমি অফিসের পরিবেশটা সুন্দর করবো। আমি এখানে যোগদান করার পরে প্রায় ১৫ দিন পরে বিভাগীয় কমিশনার মো: ইসমাইল হোসেন, এনডিসি অফিস পরিদর্শনে এসে আমাকে একটা কথা বলছিলেন, তোমাকে মহম্মদপুরে আনা হয়েছে অফিস থেকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার জন্য। মহম্মদপুরবাসীর হয়ে কাজ করার জন্য। হয় তো একদিন পারি নাই। এই তিন মাসে ধীরে ধীরে আমরা এক এক করে শুরু করছি। যার একটা স্ট্রাকচার এখন দাঁড়িয়েছে। আমাদের সামনে আরো কিছু প্ল্যান আছে ধীরে ধীরে সব শেষ করা হবে।
সময়ের প্রত্যাশাঃ মহম্মদপুরে ভুমি অফিসে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কিভাবে দেখবেন?
উত্তরঃ ভূমি অফিসের দীর্ঘদিনের পাবলিক জায়গাটা ভোগান্তির একটা অভিযোগ আমরা পাই। শুরু হয় ভোগান্তি লাঘবের চেষ্টা। তখন আমরা দুই মাসে প্রায় এখানে ২ হাজার নামজারি পেন্ডিং ছিল। সেগুলো কিন্তু দিয়ে দিয়েছি। প্রত্যেকটা মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। তাদের দীর্ঘদিনের একটা ভোগান্তি দুর করতে পেরেছি।
সময়ের প্রত্যাশাঃ জনগণকে আপনি কিভাবে দেখছেন? জনগনের জন্য আপনার নিজের অনুভুতি কি?
উত্তরঃ আমি মনে করি সিভিল সার্জনের প্রত্যেকটা অফিসারের ক্ষেত্রে একি ধরনের। আমরা যে কর্মস্থলে যায়, এলাকাটি আমার নিজের মনে করি। নিজের মনে করে কাজ না করলে কাজটা পরিপূর্ণতা পায় না। এখানে আসার পর থেকে প্রত্যেকটা মানুষের সাথে মিশেছি। মানুষ গুলো অফিসে আসছে আমি নিজের মনে করে তাদের কাজ করেছি। এখানে আমাদের ইউএনও স্যার, জেলা প্রশাসক স্যার, তিনিও একজন ভালো মনের মানুষ। মানবিক একজন অফিসার। স্যারের সদিচ্ছা আছে। স্যারের সদিচ্ছা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি।
সময়ের প্রত্যাশাঃ মহম্মদপুরে জনগণের উন্নয়নের কি কি প্রস্তুতি নিয়েছেন? মানুষের কাছে আপনি একজন প্রিয় মানুষ হয়ে উঠেছেন এ বিষয়ে কিছু বলেন?
উত্তরঃ জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় শুরুতে এসে আমার নিজের অফিসার একটা পরিবেশে চেঞ্জ করেছি। আরোও বেশ কিছু বড় কাজের সাথে জড়িত রয়েছি।শহরের মধ্যে মহম্মদপুর বাসষ্ট্যান্ড থাকায় দীর্ঘদিনের একটা যানজটের সমস্যা ছিলো। নদী পাড়ে প্রায় ১ একর জায়গা জুড়ে নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরী কাজ শুরু হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের অপজিটে ১৬ একর জায়গা জুড়ে একটা পার্ক করার পরিকল্পনা চলছে এবং আমাদের নদের চাঁদের একটা ঘাট আছে সেটাও উন্নয়ন হবে। উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা অল্প সময়ে মহম্মদপুরের উন্নয়নে যুক্ত হতে পারবো।
সময়ের প্রত্যাশাঃ লকডাউনে পরিকল্পনা কিভাবে বাস্তবায়ন করছেন?
উত্তরঃ মানবিক দিক বিবেচনা করে কঠোর ভাবে সরকারি নির্দেশনা পালন করা হচ্ছে। সরকার লকডাউনের সময়সীমা ঘোষণা করছেন। কখন দোকানপাট খোলা থাকবে, সাধারন মানুষ কি কাজে বের হবে সেগুলো একটা সুস্পষ্ট নির্দেশনা কিন্তু আছে। নিয়মিত বাজার গুলো মনিটরিং ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় প্রত্যেকটা বাজার এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।
সময়ের প্রত্যাশাঃ সরকারি ডিউটি পাঁচটা পর্যন্ত, অফিস করেন রাত ৯ টা পযন্ত। আসলেই জনগণের জন্য কিভাবে আপনার এই সময়টা উৎসর্গ করেছেন?
উত্তরঃ সকাল ৯ টায় অফিসে এসে বাইরে যেতে হয়, বাজার পরিদর্শন, জমি পরিমাপ, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দিনের একটা বড় অংশ মাঠ পরিদর্শনে পার হয়। পরে অফিসে ফিরে সব কাজ শেষ করতে অধিকাংশ দিন রাত ৯টা বেজে যায়। আমি অফিস ৫ টায় শেষ করতে চাইলেও সেটা সম্ভব হয় না।
কাজ শেষে যখন দেখি মানুষ সন্তুষ্টির হাসি দিয়ে অফিস থেকে বের হন। তখন এটাই বড় প্রাপ্তি আমার জন্য। পরিশেষে, মহম্মদপুর বাসীর কাছে দোয়া চাই। তারা যেন আমার পাশে থাকেন।
সহকারি কমিশনার (ভুমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী সুমনকে দৈনিক সময়ের প্রত্যাশার পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান প্রতিনিধি মোঃ শফিকুল ইসলাম জীবন।
প্রিন্ট