এখন ইলিশের প্রজনন মৌসুম চলছে। মা ইলিশ রক্ষায় টানা ১২ অক্টোবব থেকে ২নভেম্বর পর্যন্ত এই ২২ দিনের জন্য সরকার মাছধরা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তবুও অসাধু কিচ্ছু জেলেরা আইন অমান্য করে ভেড়ামারার পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ শিকার করছে। তারা প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে জাটকা থেকে শুরু করে দেড় কেজি পর্যন্ত ওজনের ইলিশ ধরছে। এর মধ্যে ডিমওয়ালা ইলিশ চোখে পরার মত।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, পদ্মা নদীতে ইলিশ মাছ শিকার বন্ধে প্রতি বছর যে ধরনের কার্যক্রম চালানো হয় এ বছর তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। নদীতে অভিযানের পরিবর্তে নামমাত্র সভা-সেমিনার করেই দায়িত্ব শেষ করেছেন ভেড়ামারা মৎস্য কর্মকর্তা। এবার পদ্মা নদীতে প্রশাসনের তেমন কার্যক্রম না থাকায় অনায়াসেই ইলিশ শিকার করে যাচ্ছে জেলেরা।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানাগেছে, ভেড়ামারা উপজেলার চরাঞ্চলের চার ইউনিয়নের ইলিশ মাছ শিকারের জেলের সংখ্যা মোট ৮৮৬ জন । তারমধ্যে তালিকাভূক্ত জেলের সংখ্যা ৩৪০ জন।
ভেড়ামারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরীন বলেন, ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে দুই নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছেন সরকার। এছাড়া জেলেদের সচেতন করার লক্ষ্যে আমরা বেশ কিছু মতবিনিময় সভা করেছি। ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা, জেলেরা পাচ্ছেন ২৫ কেজি করে চাল।
তবে জেলেদের অভিযোগ- অভিযানের আগে বা অভিযানের সময় তাদের যে ভিজিএফ চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হয় তা পর্যাপ্ত নয়। যাদের তালিকাভূক্ত করা হয়েছে,অনেকেই জেলে না। মূল জেলেরা এই তালিকার বাইরে থাকার কারণে তারা কোনো সাহায্য-সহযোগিতা পান না।
মোকারিমপুর ইউনিয়নের জেলে সুরুজ মিয়া বলেন, নাম নিবন্ধন আছে, তার পরও তাকে চাল দিয়ে হয়নি। চেয়ারম্যানের তালিকা অনুযায়ী চাল পায় বেশীর ভাগ ভ্যানচালক, ও রিকশাচালকরা। তাই মেটের দায়ে অভিযানের সময় তাদের বাধ্য হয়ে মাছ ধরতে নামতে হয় নদীতে।
একই এলাকার আরেক জেলে সুরমা আলী বলেন, বিগত সময়ে ৮০ কেজি করে চাল দেওয়া হলেও এখন দিচ্ছে ২৫ কেজি। এই সামান্য চালে ২২ দিন কীভাবে চলে? পরিবার পরিজন নিয়ে ধার-দেনা করে খুব কষ্টে চলতে হচ্ছে। সহযোগিতা না পেয়ে মাছ ধরছি।
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শাম্মী শিরীন জানান, নদীপাড়ের জেলেদের নিয়ে সচেতনতা সভা করা হয়েছে। নদীতে দু’একটি অভিযানও চালানো হয়েছে। কম লোকবল থাকার পরও ইলিশ শিকার বন্ধে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মা-ইলিশ রক্ষায় এবং অসাধু জেলেদের ধরতে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, নদীতে মোবাইল টিম কাজ করছে। মা-ইলিশ নিধনে কারো কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না। পদ্মায় নিয়মিত অভিযান চালছে। এই অভিযান নিষেধ্যজ্ঞা সময় পযন্ত অব্যাহত থাকবে।
প্রিন্ট