ঢাকা , শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বিএনপি’র ৩১ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ Logo কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে ওয়ান শুটারগান উদ্ধার Logo লালপুরে ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন Logo মধুখালীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিন মাদক কারবারী আটক,মাদক ধ্বংস Logo নাটোরে ১২ বছরের শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার Logo ফরিদপুরে মধুমতী চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে এক যাত্রী আহত Logo বেনাপোলের পুটখালী ইউনিয়ন বিএনপির কর্মী সভা Logo বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের তীব্রতা, নিঃশ্ব মধুমতি পাড়ের শতশত পরিবার Logo জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ : সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকের মামলা Logo গ্রাম আদালতের মাসিক জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। মধুমতী নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়ার কৃতী সন্তান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা। দিনটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাণীতে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে কাল তার যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা রয়েছে।

 

শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তার জন্ম দিন উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচিতে উদ্যাপন করবে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। বাদ আসর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি এবং শেখ হাসিনার জন্ম দিন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ হবে। একই সঙ্গে সকাল ৯টায় মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধমন্দিরে বৌদ্ধ সম্প্রদায়, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে এবং বেলা ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনাসভার আয়োজন করবে।

 

আওয়ামী লীগ ঘোষিত দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন কাল বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনার জন্ম দিন উপলক্ষ্যে আলোচনাসভার আয়োজন করা হবে। এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে সব সহযোগী সংগঠন আলোচনাসভা, আনন্দ র‌্যালি, শোভাযাত্রা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ দিবসটির তাৎপর্য অনুযায়ী বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচি পালনে সহযোগী সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাগুলোর সব স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

 

শেখ হাসিনা টানা তিন মেয়াদে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে প্রথমবার ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসাবে পরিচিত করেছেন তিনি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের দেশের মাটিতে আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

 

দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি সায়েরা খাতুনের আদরের নাতনি শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে টুঙ্গিপাড়ায়। শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা, শেখ রাসেলসহ তারা পাঁচ ভাই-বোন। তবে দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া কেউই এখন আর জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে বাবা বঙ্গবন্ধু এবং মা বেগম ফজিলাতুন নেছাসহ সবাই ঘাতকদের নির্মম বুলেটে নিহত হন। সেদিন বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান দুই বোন। সঙ্গে ছিলেন শেখ হাসিনার স্বামী ওয়াজেদ মিয়া আর তাদের দুই শিশু সন্তান জয় ও পুতুল। এরপর বঙ্গবন্ধু পরিবারে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা। তিনি পশ্চিম জার্মানি হয়ে ভারতের দিলি­তে আসেন এবং দেশে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত ছয় বছর নির্বাসন জীবন কাটে দেশটিতে।

 

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তখন পুরান ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা। বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টু রোডের বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি করা হয়। এখন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শেরেবাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে পরিচিত।

 

তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্না তক ডিগ্রি লাভ করেন।

 

পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে ১৯৬৮ সালে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়। বদরুন্নেসার ছাত্রী থাকা অবস্থায় ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং কলেজছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। দিলি­তে ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেন তিনি।

 

পরবর্তীকালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এরশাদ সরকারবিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৯০ সালে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় অবস্থান নিয়ে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের ভ‚মিকায় আসে। ১৯৯৬ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বামপন্থি দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। এতে মাথা নত করতে বাধ্য হয় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়। এরপর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এবং সরকার গঠন করে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বিএনপি’র ৩১ দফা দাবিতে লিফলেট বিতরণ

error: Content is protected !!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ

আপডেট টাইম : ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। মধুমতী নদীবিধৌত টুঙ্গিপাড়ার কৃতী সন্তান হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা। দিনটি উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাণীতে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে উঠবে উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে কাল তার যুক্তরাজ্য যাওয়ার কথা রয়েছে।

 

শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তার জন্ম দিন উৎসবমুখর পরিবেশে নানা কর্মসূচিতে উদ্যাপন করবে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে। বাদ আসর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি এবং শেখ হাসিনার জন্ম দিন উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ হবে। একই সঙ্গে সকাল ৯টায় মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধমন্দিরে বৌদ্ধ সম্প্রদায়, খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে এবং বেলা ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনাসভার আয়োজন করবে।

 

আওয়ামী লীগ ঘোষিত দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন কাল বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ হাসিনার জন্ম দিন উপলক্ষ্যে আলোচনাসভার আয়োজন করা হবে। এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে সব সহযোগী সংগঠন আলোচনাসভা, আনন্দ র‌্যালি, শোভাযাত্রা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ দিবসটির তাৎপর্য অনুযায়ী বিভিন্ন উপযোগী কর্মসূচি পালন করবে। এসব কর্মসূচি পালনে সহযোগী সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাগুলোর সব স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

 

শেখ হাসিনা টানা তিন মেয়াদে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে প্রথমবার ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসাবে পরিচিত করেছেন তিনি। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের দেশের মাটিতে আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

 

দাদা শেখ লুৎফর রহমান ও দাদি সায়েরা খাতুনের আদরের নাতনি শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর কেটেছে টুঙ্গিপাড়ায়। শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা, শেখ রাসেলসহ তারা পাঁচ ভাই-বোন। তবে দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া কেউই এখন আর জীবিত নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাত্রিতে বাবা বঙ্গবন্ধু এবং মা বেগম ফজিলাতুন নেছাসহ সবাই ঘাতকদের নির্মম বুলেটে নিহত হন। সেদিন বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান দুই বোন। সঙ্গে ছিলেন শেখ হাসিনার স্বামী ওয়াজেদ মিয়া আর তাদের দুই শিশু সন্তান জয় ও পুতুল। এরপর বঙ্গবন্ধু পরিবারে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা। তিনি পশ্চিম জার্মানি হয়ে ভারতের দিলি­তে আসেন এবং দেশে ফিরে আসার আগ পর্যন্ত ছয় বছর নির্বাসন জীবন কাটে দেশটিতে।

 

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে পরিবারকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তখন পুরান ঢাকার রজনী বোস লেনে ভাড়া বাসায় ওঠেন তারা। বঙ্গবন্ধু যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সপরিবারে ৩ নম্বর মিন্টু রোডের বাসায় তারা বসবাস শুরু করেন। শেখ হাসিনাকে ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি করা হয়। এখন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শেরেবাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে পরিচিত।

 

তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্না তক ডিগ্রি লাভ করেন।

 

পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে ১৯৬৮ সালে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়। বদরুন্নেসার ছাত্রী থাকা অবস্থায় ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং কলেজছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। দিলি­তে ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেন তিনি।

 

পরবর্তীকালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এরশাদ সরকারবিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৯৯০ সালে এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় অবস্থান নিয়ে সংসদে প্রধান বিরোধী দলের ভ‚মিকায় আসে। ১৯৯৬ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বামপন্থি দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে। এতে মাথা নত করতে বাধ্য হয় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকার। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেয়। এরপর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় এবং সরকার গঠন করে।


প্রিন্ট