বাঘায় অপ্রতিরোধ্য সেই কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে জিআই, এসএস পাইপসহ লোহার রড ও ক্রিকেট খেলার কাঠের সামগ্রীসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আবারও বাড়িতে হামলা, মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছে। আহতরা স্থানীয় ও শহরের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গ্যাংয়ের ভয়ে অনেকে মুখ খুলে কথা বলতে রাজি হননি। গত রোববার (৬-৮-২০২৩) এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, এ ঘটনার আগের দিন (৫ আগষ্ট’২৩) রাতে আড়ানি ষ্টেসন এলাকায় ক্যারাম খেলছিল কয়েকজন যুবক। সেখানে গিয়ে অকারনে গালাগালি করেন গ্যাংয়ের এক সদস্য। নিষেধ করলে নাসিরের ছেলে ইলিয়াসকে চড় খাপ্পর মারে গ্যাংয়ের সদস্য জুয়েল হোসেন।
বিষয়টি আড়ানি পৌরসভার মেয়রকে জানান বজলুর জামাই রিয়ন হোসেন। বিষয়টি নিয়ে তাদের কোন একজনকে ফোন দিয়ে বকাবকি করেন মেয়র। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তারা। এ খবর পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন মেয়র। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিশোর গ্যাংয়ের প্রধান হিসেবে খ্যাত নুরনগর গ্রামের নাসির উদ্দীনের ছেলে আশিক হোসেনকে ডেকে নিয়ে পুনরায় অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে নিষেধ করে চলে আসে।
এর পরদিন রোববার (৬আগষ্ট) সংঘবদ্ধ গ্যাংয়ের সদস্যরা একের পর এক হামলা চালিয়ে মারধর করে। এতে আহত হয়-আড়ানি ষ্টেসন এলাকার ফ্ল্যাক্সি-বিকাশ ব্যবসায়ী, নূরনগর গ্রামের আমিরুল ইসলাম, ডেকোরেটর ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম, জুয়েল আলী ও তার গর্ভবতী স্ত্রী মুন্নি বেগম, মনোয়ার হোসেন,বজলুর রহমান ও তার মেয়ে ইতি রহমান, আবিদা রহমান, হামিদকুড়া গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম,ঝিনামধ্য পাড়ার জাহাঙ্গীর আলম,সাহানুর রহমান ও নয়ন আলী। এ মধ্যে আমিরুল ইসলাম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সোমবার (৭ আগষ্ট) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আন্তঃ বিভাগে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শরিফুল ইসলামের স্ত্রী বিথী বেগম আবারও মারধরের ভয়ে কথা বলতে চাচ্ছিলেন না।
তবে শরিফুল ইসলাম জানান, রোববার(৬-৮-২০২৩) দুপুর আড়াই দিকে ঝিনা রেলগেট বাজার এলাকায় গিয়ে দোকান মেলছিলেন। এ সময় নুরনগর গ্রামের নাসির উদ্দীনের ছেলে আশিক রানা (২৮)’র নের্তৃত্বে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে- একই এলাকার সাবান আলীর ছেলে জুয়েল(২৫),নাজিম উদ্দীনের ছেলে মানিক আলী(২৪), জহুরুলের ছেলে মুসা আলী (২২), মুনসুর আলীর ছেলে জাহিদ হাসান(২৪),মহসিন আলীর ছেলে আশা রহমান(২১) বাচ্চু আলীর ছেলে বাঁধন আলী(২২) খায়রুল আলমের ছেলে শাওন আলী(২০),ঝিনা গ্রামের আরজানের ছেলে সাইফুল ইসলাম,বেড়ের বাড়ি গ্রামের মুক্তার আলীর ছেলে নয়ন আলীসহ অনেকে ।
দুপুরে দোকানে শুয়ে ছিলেন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, ওই সময় সংঘবদ্ধ দলের সদস্যরা হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে। বাড়িতে ঢুকে জুয়েল আলীকে মারধরের সময় তাকে বাঁচাতে গেলে মারধরের স্বিকার হয়েছেন তার গর্ভবতী স্ত্রী মুন্নি বেগম। একইভাবে হামলার স্বিকার হয়ে জখম হয়েছে আমিরুল ইসলামসহ অন্যরাও। এর আগে কিশোর গ্যাংয়ের নয়ন নামের এক ছেলেকে মারধর করা হয় বলে জানা গেছে।
ওয়ার্ড আ’লীগের নেতা বজলুর রহমান জানান, একই দিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গ্যাংয়ের সদস্যরা তার বাড়ির সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করছিল। নিষেধ করলে তাকে লক্ষ করে ইট, পাথর, লোহার রড ও দেশীয় বড় অস্ত্র দিয়ে দরজা ও জানালায় আঘাত করে। কাঁচের ভাঙা অংশ ছুড়ে গিয়ে নিজেসহ তার দুই মেয়ে আহত হন।
প্রিন্ট