ঢাকা , বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালমারীতে সেপ্টিক ট্যাঙ্কি খুঁড়তে গিয়ে বালু চাপায় শ্রমিকের মৃত্যু Logo স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হামলার অভিযোগ তুলে ৪ বাড়িতে ভাংচুর Logo কেউ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করতে পাববেনাঃ -আব্দুল হান্নান মাসউদ Logo রাঘববোয়ালদের আটক না করে অস্ত্র উদ্ধারের নামে নাটক করেছে প্রশাসনঃ -আবুল কালাম আজাদ Logo লালপুরে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা Logo বাঘায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের প্রতিবাদে জামায়াতের বিক্ষোভ-সমাবেশ Logo বাঘায় ঈদের আনন্দ শোকে পরিনত বিএনপি নেতা কচির পরিবারে Logo কুষ্টিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ জন আটক Logo হাতিয়ায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন Logo আজ ৩০শে মার্চ লালপুরের ঐতিহাসিক ‘ময়না যুদ্ধ দিবস’
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবারগুলো পাচ্ছেনা কোন সরকারী সহযোগিতা

-ফরিদপুর জেলার সদরপুরের কৃষ্ণপুরে শহীদ ননী সাহার পরিবারের ছবির একাংশ।

স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের খোঁজ খবর রাখেনি কেউ। বর্তমান অব্দি পর্যন্ত শহীদ পরিবারগুলো পায়নি সরকারী থেকে কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা। ঘুঁচেনি তাদের দুঃখ দুর্দশা। অবজ্ঞা, অবহেলা আর দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে চলছে যাদের জীবন সংগ্রাম। তাঁদের কারোই পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যদের খবর রাখেনা কেউ। ভুলে যাচ্ছেন অনেকেই সেই ভয়াল দিনের কথা।

১৯৭১ সালের ১৮ মে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরে পাক হানাদার বাহিনী আক্রমন চালিয়ে নিরীহ ৯ জন হিন্দু ব্যাক্তিকে গনহত্যা করে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন শহীদ ননী সাহা। ১৯৭১ সালের ১৮ মে পাক হানাদার বাহিনী কৃষ্ণপুরের সাহা পাড়ায় ননী সাহাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। তখন ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহার বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর।

শহীদ ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহা কান্না জরিত কন্ঠে প্রতিবেদক কে জানান, বাবা কে পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করার পর আমি ৭ বছর বয়সে কাজের সন্ধানে যশোর চলে যাই। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে অনেক পরিশ্রম করে আজো বেঁচে আছি। এখন আমার বয়স ৫৪ বছর। আমার একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে জয়া সাহা কলেজে পড়ালেখা করে। আমি পরের দোকানে কামলা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

২০২০ সালে কৃষ্ণপুরে গনহত্যায় নিহতদের জন্য বদ্ধভূমি স্থান নির্ধারিত করে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হলেও ভাগ্য ফেরেনি শহীদ পরিবারের। শহীদ ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহার স্ত্রী জানান আমার কন্যা জয়া সাহা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি। তারপরেও সে ভাল ছাত্রী হওয়ার সুবাদে বহু কষ্টে স্থানীয় বাচ্চাদের টিউশনি করিয়ে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়াশুনা করে। তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবার কে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি এবং শহীদ ননী সাহার নাতনি প্রতিবন্ধী জয়া সাহাকে একটি কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থ্যা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

 

 

শহীদ ননী সাহার নাতনি জয়া সাহা বলেন আমার দাদুকে পাক হানাদ বাহিনী ১৯৭১ সালে নির্মম ভাবে হত্যা করে। কিন্তু মহান স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর অতিবাহিত হলে আজো সেই
গন হত্যায় নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হয়নি সরকারি স্বীকৃতি। দেওয়া হয়নি কোন সরকারি অনুদান ও সাহায্য-সহযোগিতা। আমার বাবা একজন দিন মজুর। সে বহু কষ্ট করে আমাদের বড় করেছে। আমি নিজে শারীরিক অক্ষমতার জন্য কিছু করতে পারিনা, তবে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি। করুনা করেও আমাকে যদি একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় তবে, আমি বাবার অসচ্ছল সংসারকে কিছুটা সহযোগীতা করতে পারতাম।

জয়া সাহা বর্তমানে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স এর ফাইনাল বর্ষের ছাত্রী। অনার্স পাস করার পর একটি চাকরির জন্য তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

 


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বোয়ালমারীতে সেপ্টিক ট্যাঙ্কি খুঁড়তে গিয়ে বালু চাপায় শ্রমিকের মৃত্যু

error: Content is protected !!

কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবারগুলো পাচ্ছেনা কোন সরকারী সহযোগিতা

আপডেট টাইম : ১২:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩
মোঃ হুমায়ুন কবির তুহিন, সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের খোঁজ খবর রাখেনি কেউ। বর্তমান অব্দি পর্যন্ত শহীদ পরিবারগুলো পায়নি সরকারী থেকে কোন রকম সাহায্য সহযোগিতা। ঘুঁচেনি তাদের দুঃখ দুর্দশা। অবজ্ঞা, অবহেলা আর দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে চলছে যাদের জীবন সংগ্রাম। তাঁদের কারোই পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্যদের খবর রাখেনা কেউ। ভুলে যাচ্ছেন অনেকেই সেই ভয়াল দিনের কথা।

১৯৭১ সালের ১৮ মে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরে পাক হানাদার বাহিনী আক্রমন চালিয়ে নিরীহ ৯ জন হিন্দু ব্যাক্তিকে গনহত্যা করে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন শহীদ ননী সাহা। ১৯৭১ সালের ১৮ মে পাক হানাদার বাহিনী কৃষ্ণপুরের সাহা পাড়ায় ননী সাহাকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। তখন ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহার বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর।

শহীদ ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহা কান্না জরিত কন্ঠে প্রতিবেদক কে জানান, বাবা কে পাক হানাদার বাহিনী হত্যা করার পর আমি ৭ বছর বয়সে কাজের সন্ধানে যশোর চলে যাই। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে অনেক পরিশ্রম করে আজো বেঁচে আছি। এখন আমার বয়স ৫৪ বছর। আমার একটি প্রতিবন্ধী মেয়ে জয়া সাহা কলেজে পড়ালেখা করে। আমি পরের দোকানে কামলা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

২০২০ সালে কৃষ্ণপুরে গনহত্যায় নিহতদের জন্য বদ্ধভূমি স্থান নির্ধারিত করে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হলেও ভাগ্য ফেরেনি শহীদ পরিবারের। শহীদ ননী সাহার পুত্র সুদাম সাহার স্ত্রী জানান আমার কন্যা জয়া সাহা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধি। তারপরেও সে ভাল ছাত্রী হওয়ার সুবাদে বহু কষ্টে স্থানীয় বাচ্চাদের টিউশনি করিয়ে ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়াশুনা করে। তিনি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট কৃষ্ণপুরের শহীদ পরিবার কে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি এবং শহীদ ননী সাহার নাতনি প্রতিবন্ধী জয়া সাহাকে একটি কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থ্যা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

 

 

শহীদ ননী সাহার নাতনি জয়া সাহা বলেন আমার দাদুকে পাক হানাদ বাহিনী ১৯৭১ সালে নির্মম ভাবে হত্যা করে। কিন্তু মহান স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫৩ বছর অতিবাহিত হলে আজো সেই
গন হত্যায় নিহত মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হয়নি সরকারি স্বীকৃতি। দেওয়া হয়নি কোন সরকারি অনুদান ও সাহায্য-সহযোগিতা। আমার বাবা একজন দিন মজুর। সে বহু কষ্ট করে আমাদের বড় করেছে। আমি নিজে শারীরিক অক্ষমতার জন্য কিছু করতে পারিনা, তবে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি। করুনা করেও আমাকে যদি একটি চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় তবে, আমি বাবার অসচ্ছল সংসারকে কিছুটা সহযোগীতা করতে পারতাম।

জয়া সাহা বর্তমানে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে অনার্স এর ফাইনাল বর্ষের ছাত্রী। অনার্স পাস করার পর একটি চাকরির জন্য তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

 


প্রিন্ট