এখন আষাঢ় মাস। চলছে বর্ষাকাল। যখন তখন বৃষ্টি। রিমঝিম রিমঝিম শব্দ। পাশাপাশি আরেকটি শব্দ গ্রামে ব্যাপক শোনা যাচ্ছে। সেটি হলো ব্যাঙের ডাক। ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। ভরা বর্ষায় ডাকটা যথারীতি শোনা যাচ্ছে।
এখন ভরা বর্ষার নতুন জলে নতুন প্রাণ পেয়েছে ব্যাঙ। তাদের চলছে উৎসব। ব্যতিক্রমী উৎসবে নানা নামের হরেক জাত-পাতের ব্যাঙ যোগ দিয়েছে। এদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে বর্ষা।
গত কয়েকদিনের বর্ষায় নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার ডোবা-নালা, খাল-বিল ভরে উঠেছে পানিতে। উৎসব শুরু হয়েছে ব্যাঙের। ডাকাডাকি, লাফালাফি সেকি উৎসব। চারিদিক শুধু ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ শব্দ।
শুধু তাই নয়, এখন প্রজনন মৌসুম। স্ত্রী-পুরুষ একে অন্যের কাছাকাছি আসতে ব্যাকুল। অহর্নিশ ডাকাডাকি মূলত এ কারণেই। মূলত প্রণয় সম্ভাষণ! বর্ষায় প্রায় প্রতিটি গ্রামেই দেখা মিলছে ব্যাঙের। বাড়ির আশপাশের বিল,ঝিল- জলাশয় থেকে জলকেলির শব্দ ভেসে আসছে।
সরেজমিন শুক্রবার (০৭জুলাই) উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরচেঙ্গা গ্রামে, চরচেঙ্গা বাজার সংলগ্ন ডোবায় গিয়ে দেখা যায় হলুদ,সবুজ,কালোসহ বিভিন্ন রকমের ব্যাঙ ডাকাডাকি করছে। করছে লাফালাফি।চারিদিকে ছড়াচ্ছে জল। এ এক অনন্য দৃশ্য। যা না দেখলে এর সৌন্দর্য উপলদ্বি করা যাবেনা। একটি আরেকটির উপর ঝাপিয়ে পড়ছে,ঝাপটে ধরছে।
থেমে থেমে ডাকছে প্রতিটি ব্যাঙ। একযোগে তাদের ডাক মাতোয়ারা করে তুলছে চারিপাশ। পথিক পথ চলতে থেমে যাচ্ছে তাদের মিষ্টি মধুর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাক শুনে।
সব মিলিয়ে বিচিত্র ব্যাঙরাজ্য। এ রাজ্যের প্রায় সবাই এখন বর্ষা উৎসবে মেতেছে। ব্যাঙ এবং বর্ষার এ যুগল উৎসব প্রকৃতির বিরল সৌন্দর্যকে তুলে ধরছে।
৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী নুসরাত জানায়, ব্যাঙের ডাক শোনে তার আব্বুকে নিয়ে এসেছে ব্যাঙ দেখতে। সে বলে আমি এই প্রথম পানিতে ব্যাঙ দেখছি। বিভিন্ন রকমের ব্যাঙ অনেক সুন্দর দেখতে। আমি খুব আনন্দ পাইছি
স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলম বলেন, সত্যিই এক অপরুপ দৃশ্য আজ চোখে পড়লো। ব্যাঙের ডাকাডাকিতে নিজেকে যেন সুরের রাজ্যে হারিয়ে ফেলেছিলাম। রং বেরংয়ের ব্যাঙ যেন চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে তাদের রংয়ের আভা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রহমত উল্যাহ মিষ্টার বলেন, বর্ষাকাল এসেছে বলেই ব্যাঙের ডাক শোনতে পেলাম। বিভিন্ন রকমের ব্যাঙের ডাকাডাকি আর লাফালাফিতে সৃষ্টি হয়েছে এক অপরুপ দৃশ্য।
প্রিন্ট