ভোলা সদর উপজেলায় ইলিশা-১ নামের নতুন কূপ থেকে দৈনিক ২০ মিলিয়ন বা ২ কোটি ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন সম্ভব বলে মনে করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বাপেক্স)। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে, ২০০ বিসিএফ বা তারও বেশি গ্যাসের মজুদ রয়েছে এ কূপটিতে। এটি হতে যাচ্ছে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র। কূপটিতে গত ২৮ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম স্তরের গ্যাস উত্তোলন শুরু করা হয়।
আর গত রবিবার দ্বিতীয় স্তরের ডিএসটি পরীক্ষা শুরু হয়। আগামী সপ্তাহে শুরু হবে তৃতীয় স্তরের ডিএসটি। এর আগে গত ৯ মার্চ সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের মালেরহাট সংলগ্ন এলাকায় ইলিশা-১ কূপের খনন কাজ শুরু হয়।
বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক (ভূ-তাত্ত্বিক বিভাগ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, প্রথম ডিএসটিতে আমরা মাটির গভীরের সবচেয়ে নিচের স্তর ৩ হাজার ৪৩৩ থেকে ৩ হাজার ৪৩৬ মিটারে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সফল হয়েছি। দ্বিতীয় ডিএসটিতে ৩ হাজার ২৬৮ থেকে ৩ হাজার ২৭৫ মিটার গভীরে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছি। তারপরই গ্যাসের পরিমাণ সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই। এছাড়া তৃতীয় লেয়ারে ৩ হাজার ২৫০ থেকে ৩ হাজার ২৫৫ মিটার গভীরে ডিএসটি করা হবে। মাটির নিচে গ্যাসের প্রেসারও বেশ ভালো রয়েছে।
বাপেক্সের কর্মকর্তারা জানান, নতুন এ গ্যাস ক্ষেত্রের কূপ নিয়ে জেলায় মোট ৩টি গ্যাস ক্ষেত্রের ৯টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। এগুলো হলো- বোরহানউদ্দিন উপজেলার শাহাবজপুর গ্যাস ক্ষেত্রে ৬টি কূপ, সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভোলা নর্থে ২টি ও সর্বশেষ ইলিশা ক্ষেত্রের ইলিশা ১ কুপ যা থেকে দৈনিক মোট ১৮০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের সক্ষমতা রয়েছে। বাপেক্সের ভূকম্পন জরিপের ওপর ভিত্তি করে ভূতাত্ত্বিক ম্যাপের মাধ্যমে এ গ্যাসের মজুদ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে। সিলেটের পর একমাত্র জেলা ভোলা যেখানে ৩টি গ্যাস ফিল্ড রয়েছে।
এদিকে নতুন গ্যাস কূপ থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন এর মাধ্যমে গ্যাস ভিত্তিক শিল্প কল কারখানা তৈরি হবে। কর্মসংস্থান হবে বিপুল জনগোষ্ঠীর। অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হবে ভোলা। তাই তারা গ্যাসভিত্তিক শিল্পায়নের দাবি জানান।
বাপেক্সের মহাব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন আরো জানান, জেলায় নতুন করে আরো ৫টি গ্যাস কূপ খননের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাপেক্স। এগুলো হবে শাহাবাজপুর গ্যাস ফিল্ডে ২টি কূপ, ভোলা নর্থে ২টি ও অন্যটির স্থান নির্ধারণের কাজ চলছে। আমাদের সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। এছাড়া জেলায় প্রায় ১ পয়েন্ট ৭ টিসিএফ গ্যাস মজুত রয়েছে। এর পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।
প্রিন্ট