ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কালুখালীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী এনায়েত হোসেনের উঠান বৈঠক Logo গোমস্তাপুরে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায় Logo লালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দোয়া প্রার্থী মোঃ শামীম আহম্মেদ সাগর Logo ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় Logo বোয়ালমারীতে স্বস্তির বৃষ্টি প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ আদায় Logo চরভদ্রাসনে বৃষ্টির প্রার্থনায় ইসতিসকার নামাজ আদায় Logo দৌলতপুর পাকুড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নিয়োগ বানিজ্যের চেষ্টা! Logo পঞ্চপল্লীতে দুই ভাই হত্যায় জড়িতদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বিচার করা হবে – মৎস্য মন্ত্রী Logo কুমারখালীর লাহিনীপাড়ার দৃষ্টিনন্দন গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে, জনমনে ক্ষোভ Logo সিডিএর নতুন চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মিথ্যা ধর্ষন মামলা কারীদের জন্য শাস্তির পরিমান অপ্রতুল এডভোকেট মোঃ কাওসার হোসাইন

ধর্ষন সমাজের নিন্দনীয় অপরাধের মধ্যে একটি।ধর্ষনের মত অপরাধের জন্য একদিকে ভিকটিমের ব্যক্তিগত জীবন,পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি পুরো সমাজে এর নেতিবাচক একটি প্রভাব রয়েছে।তাই ধর্ষন প্রতিরোধে রাষ্ট্র নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকে।তার মধ্যে ধর্ষনের সাথে জড়িত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা একটি অন্যতম পদক্ষেপ।পূর্বে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড নির্ধারিত থাকলেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সর্বশেষ সংশোধনী-২০২০)এর ধারা -৯(১) অনুযায়ী বর্তমানে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড এবং উহার অতিরিক্ত অর্থদন্ড।

ধর্ষনের মত নিন্দনীয় অপরাধ দমনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডই বর্তমান বাস্তবতায় উপযুক্ত শাস্তি কিন্তু এজাতীয় অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়ায় যারা নির্দোষ তারা যেন কোনভাবেই মিথ্যা ধর্ষনের মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করা উচিত।একটি কল্যানমূখী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একদিকে যেকোন অপরাধের সাথে জড়িত অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে যেমন ভিকটিমকে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা দিতে হয় তেমনি আইনের অপপ্রয়োগে বা বিদ্বেষ প্রসূত অভিযোগে কোন নির্দোষ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায় বা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটিকেও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়।

আমাদের দেশে প্রতিপক্ষকে হয়রানী করার জন্য বা প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বা অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য মিথ্যা মামলা দেয়ার প্রবনতা লক্ষ করা যায়।

কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানী বা ক্ষতিসাধরনের অভিপ্রায়ে কেউ যেন কোন মিথ্যা অভিযোগ বা মিথ্যা মামলা দায়ের না করে তা নিশ্চিত করার জন্য বা নিরুৎসাহিত করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ বা মিথ্যা মামলা দায়ের কারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা দেশে বর্তমানে বিদ্যমান অনেক আইনেই রয়েছে।আমাদের দেশে বর্তমানে বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনেও এ ধরনের বিধান রয়েছে।

কিন্ত যেহেতু উল্লেখিত আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড সেক্ষেত্র মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়েরকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি উপযুক্ত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, তাতে মিথ্যা মামলা দায়ের করার প্রবনতা কমবে এবং নির্দোষ কোন ব্যক্তি মিথ্যা ধর্ষন মামলায় হয়রানীর শিকার হলে উপযুক্ত আইনানুগ প্রতিকার পাবে।কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০(সর্বশেষ সংশোধনী-২০২০) এর ধারা -৯(১) পরিবর্তন করে ধর্ষনের পূর্বে থাকা সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড পরিবর্তন করে মৃত্যদন্ড করা হলেও একই আইনের ধারা-১৭ অনুযায়ী এ আইনের অধীনে কোন অপরাধের মিথ্যা মামলা বা ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি যে ৭ (সাত) বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদন্ড তা বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে, এক্ষেত্রে শাস্তি বাড়ানোর কোন সংশোধনী আনা হয়নি।

অর্থাৎ এই আইনের বিধান অনুযায়ী কেউ যদি ভিত্তিহীন বা মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের করেন তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্দোষ প্রমানিত হবার পর মিথ্যা মামলা দায়ের কারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারার অপরাধে মামলা করলে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদন্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে,যা ধর্ষন অপরাধের মত একটি জঘন্য অপরাধের মিথ্যা মামলা দায়ের কারীর জন্য উপযুক্ত শাস্তি নয়।কারন যদি মিথ্যা অভিযোগকারীর মিথ্যা ধর্ষন মামলাটি নিরাপরাধ ব্যক্তি মিথ্যা প্রমান করতে সক্ষম না হয় তাহলে তার মৃত্যুদন্ড হতে পারে অথবা দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় নির্দোষ প্রমানিত হওয়ার জন্য যে সকল

ক্ষয়ক্ষতি,মর্যাদাহানি ও হয়রানীর সন্মূখীন হন সে তুলনায় বর্তমানে বিদ্যমান শাস্তি অপ্রতুল এবং এই কম শাস্তি থাকার সুযোগে অনেকে মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের করে নিরাপদ ব্যক্তিকে হয়রানী করার অপচেষ্টা করতে পারে।

তাই পরিশেষে বলতে চাই ধর্ষনের সাথে জড়িত অপরাধীর যেমন উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব তেমনি নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন মিথ্যা ধর্ষন মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা হয়রানীর শিকার না হয় সেজন্য মিথ্যা ধর্ষন মামলাকে নিরুৎসাহিত করতে মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের কারীদের জন্য উপযুক্ত শাস্তির বিধান করা সময়ের দাবি।

-লেখকঃ
এডভোকেট মোঃ কাওসার হোসাইন
আইনজীবি
সুপ্রিমকোর্ট অব বাংলাদেশ
প্যানেল আইনজীবি,রূপালী ব্যাংক লিমিটেড
আইনজীবি,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কালুখালীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী এনায়েত হোসেনের উঠান বৈঠক

error: Content is protected !!

মিথ্যা ধর্ষন মামলা কারীদের জন্য শাস্তির পরিমান অপ্রতুল এডভোকেট মোঃ কাওসার হোসাইন

আপডেট টাইম : ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

ধর্ষন সমাজের নিন্দনীয় অপরাধের মধ্যে একটি।ধর্ষনের মত অপরাধের জন্য একদিকে ভিকটিমের ব্যক্তিগত জীবন,পারিবারিক জীবন ও সামাজিক জীবন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় তেমনি পুরো সমাজে এর নেতিবাচক একটি প্রভাব রয়েছে।তাই ধর্ষন প্রতিরোধে রাষ্ট্র নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহন করে থাকে।তার মধ্যে ধর্ষনের সাথে জড়িত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা একটি অন্যতম পদক্ষেপ।পূর্বে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড নির্ধারিত থাকলেও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সর্বশেষ সংশোধনী-২০২০)এর ধারা -৯(১) অনুযায়ী বর্তমানে ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড এবং উহার অতিরিক্ত অর্থদন্ড।

ধর্ষনের মত নিন্দনীয় অপরাধ দমনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডই বর্তমান বাস্তবতায় উপযুক্ত শাস্তি কিন্তু এজাতীয় অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়ায় যারা নির্দোষ তারা যেন কোনভাবেই মিথ্যা ধর্ষনের মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সহিত বিবেচনা করা উচিত।একটি কল্যানমূখী রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একদিকে যেকোন অপরাধের সাথে জড়িত অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করে যেমন ভিকটিমকে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা দিতে হয় তেমনি আইনের অপপ্রয়োগে বা বিদ্বেষ প্রসূত অভিযোগে কোন নির্দোষ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায় বা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটিকেও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়।

আমাদের দেশে প্রতিপক্ষকে হয়রানী করার জন্য বা প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বা অন্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য মিথ্যা মামলা দেয়ার প্রবনতা লক্ষ করা যায়।

কোন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানী বা ক্ষতিসাধরনের অভিপ্রায়ে কেউ যেন কোন মিথ্যা অভিযোগ বা মিথ্যা মামলা দায়ের না করে তা নিশ্চিত করার জন্য বা নিরুৎসাহিত করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ বা মিথ্যা মামলা দায়ের কারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা দেশে বর্তমানে বিদ্যমান অনেক আইনেই রয়েছে।আমাদের দেশে বর্তমানে বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনেও এ ধরনের বিধান রয়েছে।

কিন্ত যেহেতু উল্লেখিত আইনে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড সেক্ষেত্র মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়েরকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি উপযুক্ত হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি, তাতে মিথ্যা মামলা দায়ের করার প্রবনতা কমবে এবং নির্দোষ কোন ব্যক্তি মিথ্যা ধর্ষন মামলায় হয়রানীর শিকার হলে উপযুক্ত আইনানুগ প্রতিকার পাবে।কিন্তু নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০(সর্বশেষ সংশোধনী-২০২০) এর ধারা -৯(১) পরিবর্তন করে ধর্ষনের পূর্বে থাকা সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদন্ড পরিবর্তন করে মৃত্যদন্ড করা হলেও একই আইনের ধারা-১৭ অনুযায়ী এ আইনের অধীনে কোন অপরাধের মিথ্যা মামলা বা ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করলে তার সর্বোচ্চ শাস্তি যে ৭ (সাত) বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং এর অতিরিক্ত অর্থদন্ড তা বর্তমানেও বিদ্যমান রয়েছে, এক্ষেত্রে শাস্তি বাড়ানোর কোন সংশোধনী আনা হয়নি।

অর্থাৎ এই আইনের বিধান অনুযায়ী কেউ যদি ভিত্তিহীন বা মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের করেন তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্দোষ প্রমানিত হবার পর মিথ্যা মামলা দায়ের কারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারার অপরাধে মামলা করলে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদন্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে,যা ধর্ষন অপরাধের মত একটি জঘন্য অপরাধের মিথ্যা মামলা দায়ের কারীর জন্য উপযুক্ত শাস্তি নয়।কারন যদি মিথ্যা অভিযোগকারীর মিথ্যা ধর্ষন মামলাটি নিরাপরাধ ব্যক্তি মিথ্যা প্রমান করতে সক্ষম না হয় তাহলে তার মৃত্যুদন্ড হতে পারে অথবা দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় নির্দোষ প্রমানিত হওয়ার জন্য যে সকল

ক্ষয়ক্ষতি,মর্যাদাহানি ও হয়রানীর সন্মূখীন হন সে তুলনায় বর্তমানে বিদ্যমান শাস্তি অপ্রতুল এবং এই কম শাস্তি থাকার সুযোগে অনেকে মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের করে নিরাপদ ব্যক্তিকে হয়রানী করার অপচেষ্টা করতে পারে।

তাই পরিশেষে বলতে চাই ধর্ষনের সাথে জড়িত অপরাধীর যেমন উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব তেমনি নিরাপরাধ ব্যক্তি যেন মিথ্যা ধর্ষন মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বা হয়রানীর শিকার না হয় সেজন্য মিথ্যা ধর্ষন মামলাকে নিরুৎসাহিত করতে মিথ্যা ধর্ষন মামলা দায়ের কারীদের জন্য উপযুক্ত শাস্তির বিধান করা সময়ের দাবি।

-লেখকঃ
এডভোকেট মোঃ কাওসার হোসাইন
আইনজীবি
সুপ্রিমকোর্ট অব বাংলাদেশ
প্যানেল আইনজীবি,রূপালী ব্যাংক লিমিটেড
আইনজীবি,তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর।