ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কুমারখালীর সেই ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করলো বন বিভাগ Logo খোকসায় উপজেলা ক্যাম্পাসে বন বিভাগের গেট ভেঙ্গে চাপা পড়ে শিশুর মৃত্যু Logo দৌলতপুরে ৭৫ বোতল ফেনসিডিলসহ ডিবি পুলিশের হাতে আটক ২ Logo সোনামসজিদ স্থলবন্দরে হিট স্ট্রোকে ট্রাফিক পরিদর্শকের মৃত্যু Logo দৌলতপুরে নারী চিকিৎসককে হয়রানি করে কারাগারে যুবক Logo নাটোরের বাগাতিপাড়া বাউয়েট এর নতুন রেজিস্ট্রার শেখ সানি মোহাম্মদ তালহা Logo বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিক নিয়ে কার্গো জাহাজডুবি Logo দ্বীপ হাতিয়ায় সৈকতে ভেসে এসেছে বিরল প্রজাতির ‘ইয়েলো-বেলিড সি স্নেক’ Logo কালুখালীতে চেয়ারম্যান প্রার্থী এনায়েত হোসেনের উঠান বৈঠক Logo গোমস্তাপুরে বৃষ্টির আশায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পাবনার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা আর নেই

পাবনার তালিকাভুক্ত ও জীবিত একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে জেলার সাঁথিয়া উপজেলার তেঁথুলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
মৃত ভানু নেছার নাতী শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর দশ বছর আগে চলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন ভান নেছা। এরপরগত তিন বছর ধরে একেবারেই শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ সময়ে এসে কথা বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। তরল খাবার ছাড়া কিছু খেতে পারতেন না।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তেঁথুলিয়া কবরস্থানে তার জানাযা নামাজ শেষে দাফন করা হবে। তার আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভানু নেছাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে বলে জানান সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জামাল আহমেদ।

উল্লেখ্য, নারী হয়েও দেশ মাতৃকার স্বাধীকার আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া গ্রামের আব্দুল প্রামাণিকের স্ত্রী ভানু নেছা। মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে গোলাবারুদ সরবরাহ, সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন অসামান্য ভূমিকা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে মহান মক্তিযুদ্ধে পাবনার সাঁথিয়ায় বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা। সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোলা-বারুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে বাঙ্কারে পৌঁছে দিতেন তিনি। একবার তিনি গুলিতে আহতও হয়েছিলেন। যার ফল স্বরুপ তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং নিয়মিত ভাতা প্রাপ্ত পান। ১৯৯৬ সালে পাবনায় ও ঢাকায় সরকারি-বেসরকারিভাকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়।

সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, একাত্তরে নন্দনপুরে যখন পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন আমরা বাঙ্কারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় এই ভানু নেছা আমাদের অনেকভাবে সহযোগিতা করেছিল। আমাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে আমি তাকে চিঠি লিখে সাঁথিয়া থানায় গিয়ে গোলাবারুদ আনতে বলেছিলাম। তখন সে মাজায় কাপড় বেঁধে থানা থেকে গোলাবারুদ নিয়ে আমাদের দিয়েছিল।

নন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস জানান,  মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা ছিলেন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। সাঁথিয়া স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত সতীর্থ পুরুষ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রনাঙ্গণে ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই অকুতোভয় সৈনিক।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কুমারখালীর সেই ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করলো বন বিভাগ

error: Content is protected !!

পাবনার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা আর নেই

আপডেট টাইম : ০৪:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
পাবনার তালিকাভুক্ত ও জীবিত একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে জেলার সাঁথিয়া উপজেলার তেঁথুলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
মৃত ভানু নেছার নাতী শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর দশ বছর আগে চলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন ভান নেছা। এরপরগত তিন বছর ধরে একেবারেই শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ সময়ে এসে কথা বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। তরল খাবার ছাড়া কিছু খেতে পারতেন না।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তেঁথুলিয়া কবরস্থানে তার জানাযা নামাজ শেষে দাফন করা হবে। তার আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভানু নেছাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে বলে জানান সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জামাল আহমেদ।

উল্লেখ্য, নারী হয়েও দেশ মাতৃকার স্বাধীকার আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া গ্রামের আব্দুল প্রামাণিকের স্ত্রী ভানু নেছা। মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে গোলাবারুদ সরবরাহ, সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন অসামান্য ভূমিকা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে মহান মক্তিযুদ্ধে পাবনার সাঁথিয়ায় বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা। সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোলা-বারুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে বাঙ্কারে পৌঁছে দিতেন তিনি। একবার তিনি গুলিতে আহতও হয়েছিলেন। যার ফল স্বরুপ তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং নিয়মিত ভাতা প্রাপ্ত পান। ১৯৯৬ সালে পাবনায় ও ঢাকায় সরকারি-বেসরকারিভাকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়।

সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, একাত্তরে নন্দনপুরে যখন পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন আমরা বাঙ্কারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় এই ভানু নেছা আমাদের অনেকভাবে সহযোগিতা করেছিল। আমাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে আমি তাকে চিঠি লিখে সাঁথিয়া থানায় গিয়ে গোলাবারুদ আনতে বলেছিলাম। তখন সে মাজায় কাপড় বেঁধে থানা থেকে গোলাবারুদ নিয়ে আমাদের দিয়েছিল।

নন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস জানান,  মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা ছিলেন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। সাঁথিয়া স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত সতীর্থ পুরুষ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রনাঙ্গণে ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই অকুতোভয় সৈনিক।