ঢাকা , শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo তানোরে কলেজ অধ্যক্ষের আওয়ামী প্রীতি জনমনে ক্ষোভ Logo নাটোরে ঔষধ ব্যবসায়ীদের চার দফা দাবিতে মানববন্ধন Logo লালপুরে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে এক শিশুর মৃত্যু Logo শিবচরে ভুয়া র‍্যাব সেজে প্রতারণার চেষ্টা, সাবেক সেনা সদস্য আটক Logo জয়পুরহাটে দুই দশকের ৫০৬ মামলার আলামত ধ্বংস Logo গুরুদাসপুরে জালনোট প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক ওয়ার্কশপ Logo ফরিদপুরে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতিসভা অনুষ্ঠিত Logo সেফ হোমে অবস্থানরত সামাজিক প্রতিবন্ধী ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিবাসীদের মাঝে জন্ম সনদ বিতরণ Logo শ্যামনগরে নারী কৃষকদের জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রশিক্ষণ শেষে সবজি বীজ ও জৈব সার বিতরণ Logo পদ্মার বালুমহাল দখল নিয়ে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৭, নিখোঁজ ১
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

পাবনার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা আর নেই

পাবনার তালিকাভুক্ত ও জীবিত একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে জেলার সাঁথিয়া উপজেলার তেঁথুলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
মৃত ভানু নেছার নাতী শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর দশ বছর আগে চলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন ভান নেছা। এরপরগত তিন বছর ধরে একেবারেই শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ সময়ে এসে কথা বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। তরল খাবার ছাড়া কিছু খেতে পারতেন না।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তেঁথুলিয়া কবরস্থানে তার জানাযা নামাজ শেষে দাফন করা হবে। তার আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভানু নেছাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে বলে জানান সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জামাল আহমেদ।

উল্লেখ্য, নারী হয়েও দেশ মাতৃকার স্বাধীকার আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া গ্রামের আব্দুল প্রামাণিকের স্ত্রী ভানু নেছা। মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে গোলাবারুদ সরবরাহ, সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন অসামান্য ভূমিকা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে মহান মক্তিযুদ্ধে পাবনার সাঁথিয়ায় বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা। সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোলা-বারুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে বাঙ্কারে পৌঁছে দিতেন তিনি। একবার তিনি গুলিতে আহতও হয়েছিলেন। যার ফল স্বরুপ তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং নিয়মিত ভাতা প্রাপ্ত পান। ১৯৯৬ সালে পাবনায় ও ঢাকায় সরকারি-বেসরকারিভাকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়।

সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, একাত্তরে নন্দনপুরে যখন পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন আমরা বাঙ্কারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় এই ভানু নেছা আমাদের অনেকভাবে সহযোগিতা করেছিল। আমাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে আমি তাকে চিঠি লিখে সাঁথিয়া থানায় গিয়ে গোলাবারুদ আনতে বলেছিলাম। তখন সে মাজায় কাপড় বেঁধে থানা থেকে গোলাবারুদ নিয়ে আমাদের দিয়েছিল।

নন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস জানান,  মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা ছিলেন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। সাঁথিয়া স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত সতীর্থ পুরুষ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রনাঙ্গণে ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই অকুতোভয় সৈনিক।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

তানোরে কলেজ অধ্যক্ষের আওয়ামী প্রীতি জনমনে ক্ষোভ

error: Content is protected !!

পাবনার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা আর নেই

আপডেট টাইম : ০৪:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১
শুভাশীষ ভট্টাচার্য্য তুষার, পাবনা প্রতিনিধিঃ :
পাবনার তালিকাভুক্ত ও জীবিত একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে জেলার সাঁথিয়া উপজেলার তেঁথুলিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
মৃত ভানু নেছার নাতী শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর দশ বছর আগে চলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন ভান নেছা। এরপরগত তিন বছর ধরে একেবারেই শয্যাশায়ী ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ সময়ে এসে কথা বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। তরল খাবার ছাড়া কিছু খেতে পারতেন না।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তেঁথুলিয়া কবরস্থানে তার জানাযা নামাজ শেষে দাফন করা হবে। তার আগে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভানু নেছাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে বলে জানান সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম জামাল আহমেদ।

উল্লেখ্য, নারী হয়েও দেশ মাতৃকার স্বাধীকার আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের তেঁথুলিয়া গ্রামের আব্দুল প্রামাণিকের স্ত্রী ভানু নেছা। মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে গোলাবারুদ সরবরাহ, সম্মুখযুদ্ধে অংশগ্রহণসহ বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধে রেখেছিলেন অসামান্য ভূমিকা।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে মহান মক্তিযুদ্ধে পাবনার সাঁথিয়ায় বিভিন্ন সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেন নারী মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা। সে সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গোলা-বারুদ মাথায় করে মুক্তিযোদ্ধাদের বাঙ্কারে বাঙ্কারে পৌঁছে দিতেন তিনি। একবার তিনি গুলিতে আহতও হয়েছিলেন। যার ফল স্বরুপ তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং নিয়মিত ভাতা প্রাপ্ত পান। ১৯৯৬ সালে পাবনায় ও ঢাকায় সরকারি-বেসরকারিভাকে তাঁকে সম্মানিত করা হয়।

সাঁথিয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুল লতিফ জানান, একাত্তরে নন্দনপুরে যখন পাক বাহিনীর সাথে যুদ্ধ শুরু হয়, তখন আমরা বাঙ্কারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় এই ভানু নেছা আমাদের অনেকভাবে সহযোগিতা করেছিল। আমাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে আমি তাকে চিঠি লিখে সাঁথিয়া থানায় গিয়ে গোলাবারুদ আনতে বলেছিলাম। তখন সে মাজায় কাপড় বেঁধে থানা থেকে গোলাবারুদ নিয়ে আমাদের দিয়েছিল।

নন্দনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস জানান,  মুক্তিযোদ্ধা ভানু নেছা ছিলেন সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। সাঁথিয়া স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত সতীর্থ পুরুষ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে রনাঙ্গণে ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের এই অকুতোভয় সৈনিক।


প্রিন্ট