ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সালথায় ভেকুমেশিন দিয়ে মাটি কাটার অপরাধে রাতের বেলায় ৩ জনের কারাদণ্ড

ফরিদপুরের সালথায় ভেকু দিয়ে তিন ফসলি জমির টপসয়েল কাটার ও পুকুর খননের মহা উৎসব চলছে। ফসলি জমির টপসয়েল কাটার ও জমিতে পুকুর খননের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রকাশ্যে মাটিকাটা হচ্ছে। উপজেলার একাধিক ইউনিয়নে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ও পরিবেশ আইন অমান্য করে কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে মাটিদস্যুরা। বিশেষ করে বল্লভদী ইউনিয়নের অন্তত ১০ জায়গায় রাত-দিন ২৪ ঘন্টা ভেকু দিয়ে মাটি কেটে হাজার হাজার ট্রাক মাটি রেললাইনে ও ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ফসলি জমি হারাচ্ছে উর্বরতা ও কমে যাচ্ছে ফসলি জমি।

অভিযোগ রয়েছে, একটি চক্র লাখ লাখ টাকার বিনিময় মাটিখেকো ব্যবসায়ীদের মাটিকাটার সুযোগ করে দিচ্ছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তিনজন মাটি ব্যবসায়কে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কশিনার (ভূমি) মো. সালাউদ্দীন আইয়ুবী। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বল্লভদী ইউনিয়নের কামাইদিয়া গ্রামের নরেশ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে মাটি ব্যবসায়ী সমীর চন্দ্র বিশ্বাস (৪২), একই গ্রামের বিল্লাল শেখের ছেলে আব্দুস শুকুর শেখ (২১) ও সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বিজয় কুমার বিশ্বাসের ছেলে দুর্জয় কুমার বিশ্বাস (২০)।

তবে অভিযান চালানোর পরেও ওই ইউনিয়নে আরও অন্তত ৭টি জায়গায় প্রকাশ্য ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে রেললাইনে বিক্রি করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্নস্থানে একইভাবে মাটিকাটার উৎসব চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করছে জায়গা বুঝে, দুই/একটা জায়গায় অভিযান পরিচালনা করলেও অদৃষ্য কারনে বন্ধ হচ্ছে না মাটিকাটা। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রকশ্যেই ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে। কোনোভাবেই ফসলি জমির মাটিকাটা ঠেকানো যাচ্ছে না। এদিকে যে স্থানে রাতে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন সেখানে কোন লোক না পেয়ে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তাদেরকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংস্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার লিটু ফকির। তিনি বলেন, এই এলাকায় কমপক্ষে ৫/৭ টি ভেকু চলমান রয়েছে। এ্যাসিল্যান্ড মহোদয় শুধু আমার সাইডে অভিযান পরিচালনা করলেন কেন? এমন প্রশ্নও তিনি রেখেছেন!

ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সালাউদ্দীন আইয়ুবী বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে বল্লভদী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটিকাটার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ভ্রম্যমান আদালতের মাধ্যমে মাটিকাটার অপরাধে তাদের প্রত্যেককে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। জনস্বার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে বাকি যেসব জায়গায় মাটিকাটা হচ্ছে সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

সালথায় ভেকুমেশিন দিয়ে মাটি কাটার অপরাধে রাতের বেলায় ৩ জনের কারাদণ্ড

আপডেট টাইম : ০১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ মার্চ ২০২৩
এফ.এম.আজিজুর রহমান, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ :

ফরিদপুরের সালথায় ভেকু দিয়ে তিন ফসলি জমির টপসয়েল কাটার ও পুকুর খননের মহা উৎসব চলছে। ফসলি জমির টপসয়েল কাটার ও জমিতে পুকুর খননের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও প্রকাশ্যে মাটিকাটা হচ্ছে। উপজেলার একাধিক ইউনিয়নে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ও পরিবেশ আইন অমান্য করে কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে বিক্রি করছে মাটিদস্যুরা। বিশেষ করে বল্লভদী ইউনিয়নের অন্তত ১০ জায়গায় রাত-দিন ২৪ ঘন্টা ভেকু দিয়ে মাটি কেটে হাজার হাজার ট্রাক মাটি রেললাইনে ও ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ফসলি জমি হারাচ্ছে উর্বরতা ও কমে যাচ্ছে ফসলি জমি।

অভিযোগ রয়েছে, একটি চক্র লাখ লাখ টাকার বিনিময় মাটিখেকো ব্যবসায়ীদের মাটিকাটার সুযোগ করে দিচ্ছে। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে তিনজন মাটি ব্যবসায়কে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারি কশিনার (ভূমি) মো. সালাউদ্দীন আইয়ুবী। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, বল্লভদী ইউনিয়নের কামাইদিয়া গ্রামের নরেশ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে মাটি ব্যবসায়ী সমীর চন্দ্র বিশ্বাস (৪২), একই গ্রামের বিল্লাল শেখের ছেলে আব্দুস শুকুর শেখ (২১) ও সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বিজয় কুমার বিশ্বাসের ছেলে দুর্জয় কুমার বিশ্বাস (২০)।

তবে অভিযান চালানোর পরেও ওই ইউনিয়নে আরও অন্তত ৭টি জায়গায় প্রকাশ্য ভেকু দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে রেললাইনে বিক্রি করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্নস্থানে একইভাবে মাটিকাটার উৎসব চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করছে জায়গা বুঝে, দুই/একটা জায়গায় অভিযান পরিচালনা করলেও অদৃষ্য কারনে বন্ধ হচ্ছে না মাটিকাটা। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রকশ্যেই ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে। কোনোভাবেই ফসলি জমির মাটিকাটা ঠেকানো যাচ্ছে না। এদিকে যে স্থানে রাতে অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন সেখানে কোন লোক না পেয়ে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তাদেরকে কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংস্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার লিটু ফকির। তিনি বলেন, এই এলাকায় কমপক্ষে ৫/৭ টি ভেকু চলমান রয়েছে। এ্যাসিল্যান্ড মহোদয় শুধু আমার সাইডে অভিযান পরিচালনা করলেন কেন? এমন প্রশ্নও তিনি রেখেছেন!

ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সালাউদ্দীন আইয়ুবী বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খবর পেয়ে বল্লভদী ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে খননযন্ত্র (ভেকু) দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটিকাটার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে ভ্রম্যমান আদালতের মাধ্যমে মাটিকাটার অপরাধে তাদের প্রত্যেককে ১৫ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। জনস্বার্থে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে বাকি যেসব জায়গায় মাটিকাটা হচ্ছে সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে।


প্রিন্ট