কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মানদী থেকে নিয়ম না মেনে অপরিকল্পিত ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে। ভাঙন রোধে সেখানে ছোট জি ও ব্যাগ ফেলানো হয়। তার পর ও পদ্মার পাড় ভাঙা থামেনি। এই খানে প্রয়োজন বড় বড় বালু ভর্তি জি ও ব্যাগ।
ইতোমধ্যে ভাঙ্গনের মুখে উপজেলার বারো মাইল টিকটিকি পাড়ার সামনে প্রায় কয়েক শ’ একর ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন হুমকির মুখে টিকটিকি পাড়ার তিন গ্রামের প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বসতবাড়ি ।
ভেড়ামারা পদ্মা ভাঙন থেকে বাহিরচর ইউনিয়নের বার মাইল,টিকটিকিপাড়া,মুন্সিপাড়া পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে তিন গ্রামের বাড়িঘর হুমকির মুখে। ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাজারও নারী-পুরুষ পদ্মানদীর পাড়ে প্রতিকার চেয়ে মাঝে মধ্যে করছে মানববন্ধন।
অবিলম্বে টিকটিকিপাড়া,মুন্সিপাড়া এলাকার মানুষ পদ্মানদীর ভাঙনের টেকসই সমাধান চাই। দ্রুত পদক্ষেপ, নদী ভাঙন রক্ষা করা না হলে কয়েক হাজার পরিবার বাস্তুভিটা হারা হয়ে যাবে। জনস্বার্থে এলাকার সংসদ সদস্যসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জোর দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
কৃষক শহিদুল,হাবিব,আবু বক্কার,হান্নান,মজিবর,শুকটা জানান এ পর্যন্ত আমাদের প্রায় ৫শ’ পরিবারের প্রায় ১৪ শ’ বিঘা জমি ভাঙনে নদীর বুকে চলে গেছে। জমির ধান, কলা, পেঁয়াজ, রসুন করোলা সবজিসহ ফসলি জমি নদীতে ভেঙে গেছে।
জাসদ নেতা আবু হাসান জানায় , ছয়-সাত বছর ধরে এ এলাকা নদীভাঙনের শিকার হচ্ছে। প্রতিবছরই নদীতে চলে যাচ্ছে ফসলি জামি। তবু ও কেউ কোন ব্যবস্থা নেয় না।
ইউপি সদস্য ফারুক বলেন, ভাঙনের বিষয়টি অত্র এলাকার সংসদ সদস্য ,চেয়ারম্যান এমন কি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।
বার মাইল দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাসুদ করিম বলেন, বাহিরচর ইউনিয়নের মসলেমপুর থেকে মুন্সীপাড়া পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকার ভাঙনে ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন বাড়িঘর ভাঙনে হুমকির মধ্যে। ভাঙন থেকে মাত্র দেড় শ মিটার দূরে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার পরিবারের বাড়িঘর।
ভেড়ামারা বাহিরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রওশন আরা সিদ্দীক বলেন, গত বছর নদী ভাঙ্গনের সময় থেকেই আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতৃপক্ষের কাছে জানিয়েছিলাম। তারা ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানিয়ে ছিলাম।সেই সময় তারা কোন পদক্ষেপ নেননি। এইবারও আমরা তাদের জানিয়েছি তারা আশ্বাস দিয়েছে । এই নদী ভাঙ্গনের ফলে সাধারন জনগন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আব্দুল হামিদ বলেন, কয়েকদিন হলো ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সার্ভে করা হয়েছে। জি ও ব্যাগ ফেলানোর পরে ও পদ্মার পাড় ভাঙছে এবিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রিন্ট