ঢাকা , রবিবার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

তদন্তে ধীরগতিঃ ছুটি নিয়ে তদবিরে ব্যস্ত অভিযুক্ত শিক্ষক

পাংশার ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগ

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউপির ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহ মোঃ হারুন অর রশিদের (৫২) বিরুদ্ধে ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকার লোকজন বিব্রত। তবে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে চলছে ধীরগতি। অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ চাকুরী রক্ষায় ১মাসের ছুটি নিয়ে তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত শিক্ষকের চাকুরী করার অধিকার নেই, চাকুরী থেকে বরখাস্ত করাসহ তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন এলাকার লোকজন।

জানা যায়, শাহ মোঃ হারুন অর রশিদ ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ভাতশালা গ্রামেই তার বাড়ী। ২০২০ সালের ২মার্চ ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন তিনি। চাকুরীতে প্রথম যোগদান ১৯৮৯ সালের ১মার্চ। ছাত্রীর যৌন হয়রানীর প্রতিকার চেয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর অত্র বিদ্যালয়ের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির অন্তত ১৪ জন ছাত্রী এছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর কসবামাজাইল ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি আফছার মল্লিকসহ স্থানীয় অন্তত ২০ জনের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে.এম নজরুল ইসলাম জানান, অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্তের জন্য এটিও আলমগীর হোসেন ও পঙ্কজ কুমার বিশ্বাসকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার ১০অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ কর্তৃক ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা মিলেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরা পারভীন জুঁই বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা বিব্রত। যে শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয় তার শিক্ষকতা করার অধিকার নেই। তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে প্রথমে একজন সহকারী শিক্ষক জানতে পারেন। আমি (প্রধান শিক্ষক) অবগত হয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীদের ডেকে তাদের নিকট থেকে বিষয়টি জেনেছি। নিশ্চিত হওয়ার পর ঘটনার বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আনোয়ারুজ্জামান মহোদয়কে অবহিত করেছি। তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক জহুরা পারভীন জুঁই আরও বলেন, যেহেতু ঘটনার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে, তাই এই মুহুর্তে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এতটুকু বলতে পারি আমরা (বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা) বিব্রত। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় যা যা করণীয় তা করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদের বক্তব্য নিতে ভাতশালা গ্রামের বাড়ীতে গেলে তার সাক্ষাৎ মেলেনি।

অভিযোগকারীদের মধ্যে কসবামাজাইল ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি আফছার মল্লিক বলেন, অনেক আগে থেকেই হারুন মাস্টারের চরিত্রের দোষ আছে। শিক্ষক হিসেবে যে অনৈতিক কাজ করেছে তাতে তার চাকুরী থাকার কথা নয়। তার উপযুক্ত বিচার দাবী করেন তিনি।

এদিকে, ঘটনা জানাজানির পর থেকে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে ২১সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ১ মাসের ছুটি নিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে.এম নজরুল ইসলাম।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

তদন্তে ধীরগতিঃ ছুটি নিয়ে তদবিরে ব্যস্ত অভিযুক্ত শিক্ষক

পাংশার ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুনের বিরুদ্ধে ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগ

আপডেট টাইম : ১০:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর ২০২২

রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউপির ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহ মোঃ হারুন অর রশিদের (৫২) বিরুদ্ধে ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকার লোকজন বিব্রত। তবে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তে চলছে ধীরগতি। অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ চাকুরী রক্ষায় ১মাসের ছুটি নিয়ে তদবিরে ব্যস্ত রয়েছেন। অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত শিক্ষকের চাকুরী করার অধিকার নেই, চাকুরী থেকে বরখাস্ত করাসহ তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন এলাকার লোকজন।

জানা যায়, শাহ মোঃ হারুন অর রশিদ ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ভাতশালা গ্রামেই তার বাড়ী। ২০২০ সালের ২মার্চ ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন তিনি। চাকুরীতে প্রথম যোগদান ১৯৮৯ সালের ১মার্চ। ছাত্রীর যৌন হয়রানীর প্রতিকার চেয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর অত্র বিদ্যালয়ের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির অন্তত ১৪ জন ছাত্রী এছাড়া ২২ সেপ্টেম্বর কসবামাজাইল ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি আফছার মল্লিকসহ স্থানীয় অন্তত ২০ জনের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে.এম নজরুল ইসলাম জানান, অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্তের জন্য এটিও আলমগীর হোসেন ও পঙ্কজ কুমার বিশ্বাসকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার ১০অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ কর্তৃক ছাত্রীর যৌন হয়রানীর অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা মিলেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরা পারভীন জুঁই বলেন, ঘটনার বিষয়ে আমরা বিব্রত। যে শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ নয় তার শিক্ষকতা করার অধিকার নেই। তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে প্রথমে একজন সহকারী শিক্ষক জানতে পারেন। আমি (প্রধান শিক্ষক) অবগত হয়ে সংশ্লিষ্ট ছাত্রীদের ডেকে তাদের নিকট থেকে বিষয়টি জেনেছি। নিশ্চিত হওয়ার পর ঘটনার বিষয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ আনোয়ারুজ্জামান মহোদয়কে অবহিত করেছি। তিনি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক জহুরা পারভীন জুঁই আরও বলেন, যেহেতু ঘটনার বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে, তাই এই মুহুর্তে বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এতটুকু বলতে পারি আমরা (বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা) বিব্রত। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপদে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় যা যা করণীয় তা করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদের বক্তব্য নিতে ভাতশালা গ্রামের বাড়ীতে গেলে তার সাক্ষাৎ মেলেনি।

অভিযোগকারীদের মধ্যে কসবামাজাইল ইউপির ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও ভাতশালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি আফছার মল্লিক বলেন, অনেক আগে থেকেই হারুন মাস্টারের চরিত্রের দোষ আছে। শিক্ষক হিসেবে যে অনৈতিক কাজ করেছে তাতে তার চাকুরী থাকার কথা নয়। তার উপযুক্ত বিচার দাবী করেন তিনি।

এদিকে, ঘটনা জানাজানির পর থেকে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে ২১সেপ্টেম্বর থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ১ মাসের ছুটি নিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক হারুন অর রশিদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাংশা উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে.এম নজরুল ইসলাম।