ঢাকা , শনিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

সালথায় নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতিকের বর্তমান চেয়ারম্যান সোহাগ খাঁনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন ও তার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার ভুক্তভোগীরা। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি, ২০২০ইং) দুপুরে স্থানীয় গোয়ালপাড়া বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

এ সময় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, জমি দখল, আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে এলাকার নিরহী মানুষকে হয়রানি, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এছাড়া একাধিক হত্যা ঘটনার সাথে জড়িত থেকেও তাদের লাশ নিয়ে এলাকায় লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজী করেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের মোল্যা লিখিত বক্তব্যে বলেন, কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আলী খা’র নাতি ও লিয়াকত আলী খাঁ-এর পুত্র বর্তমান আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ খান এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। এই সোহাগ খার নের্তৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আটঘর ইউনিয়নের নিরহী, নিরাপরাধ জনসাধারণ, এমনকি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছে। তার অত্যাচার থেকে বাদ পড়িনি আমি নিজেও। আমাকে লাঞ্চিত করেছে, মিথ্যা মামলাও দিয়েছে। আমার অপরাধ আমি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও রাজাকারদের বিপক্ষে বলে।

তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গের এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী এনকাউন্টারের ৮নং তালিকায় থাকা এবং শত শত মামলার আসামীর প্রধান সহযোগী ছিলো এই সোহাগ খা। তারা বাবা ও দাদার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অভিযোগ রয়েছে। যার অভিযোগ নং- ২৭৮।

এই সোহাগ খা সবসময় সরকারি দলের ক্ষমতাশীন ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এই রাজাকার পুত্র গত ইউপি নির্বাচনে সন্ত্রাসী প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামীলীগের কাউকে নৌকার নমিনেশন পাওয়ার জন্য আবেদন করতে দেয়নি। এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই রাজাকারের পুত্র কিভাবে নৌকা প্রতিক পায়? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রাজাকারের পুত্র ও নাতীদের নৌকা প্রতিক দেওয়ার আগে মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যু দেখবেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, এই এলাকায় সন্ত্রাসী সোহাগ অপর সন্ত্রাসীকে খুন করে তার লাশ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করে। সেই লাশকে পুজি করে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজী করেছে। এমনকি আইনের প্যাচে ফেলে এলাকার নিরহী মানুষদের জেল হাজতে রেখেছে। এই সন্ত্রাসী সোহাগ আরো দুটি লাশ নিয়ে মামলার আসামী করার হুমকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজী করেছে।

এই এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক মহিউদ্দিনকে কৌশলে ঢাকা নিয়ে তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যা করে। তার লাশ নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজী করে। এছাড়া ২০১৭ সালে চাঁদার টাকা ফেরতের দাবিতে তার বাড়ি ঘেরাও করলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে তার সহযোগী জিয়াকে ঘরের ভেতরে হত্যা করে। ফের তার লাশ নিয়ে চাঁদাবাজী করে এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মামলা করেছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, এই সন্ত্রাসী সোহাগ খানকে আইনের আওতায় আনা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পিকুল খান, রাজ্জাক মোল্লা, সৈয়দ আলী মোল্লা, সাহিদ মাতুব্বর, আলেক শেখ, বারেক শেখ, বতু শেখ, আদেল মাতুব্বর, মুশা খানসহ অনেকে।

এ সময় ভুক্তভোগীরা বলেন, তার দলে না মেশার কারনে বিভিন্ন সময় তার বাহিনী দিয়ে হামলা করেছে এবং মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা নিয়েছে। তার চেম্বারে ধরে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক বৃদ্ধের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। পরে তিনি তার গরু বিক্রি করে চাঁদার টাকা দেন বলে অভিযোগ করেন। তার সন্ত্রাসী খাতায় নাম না লেখায় এক যুবকের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বলে এক যুবক অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি তার উপর হামলার ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানগুলো দেখান।

এ সময় একবৃদ্ধ অভিযোগ করে বলেন, আমরা এলাকায় বিত্তশালী হওয়ায় আমার ছেলে রিপনের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে সন্ত্রাসী সোহাগ খা, ভয়ে নগত ২ লক্ষ টাকা দিয়ে দেই। আর ৩ লক্ষ টাকা না দেওয়ায় আমার ছেলেকে কুপিয়ে পুঙ্গ করে ফেলেছে।

এছাড়া ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী বলেন, এই সোহাগ খা ফের এলাকায় তান্ডব সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিশৃঙ্খলা করার জন্য বিতর্কিতমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াদুদ মাতুব্বরকে প্রতিপক্ষ করার চেষ্টা করছেন। আসলেই ওয়াদুদ মাতুব্বর এই এলাকা থেকে ১০ কিঃমিঃ দুরে গট্টি গ্রামে। সে এই এলাকার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না। তৃত্বীয় পক্ষের ইন্ধনে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাবি করে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সোহাগ খাকে আইনের আওয়াতায় এনে বিচার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

সালথায় নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন

আপডেট টাইম : ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২১
এফ.এম.আজিজুর রহমান, সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ :

ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের দলীয় নৌকা প্রতিকের বর্তমান চেয়ারম্যান সোহাগ খাঁনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন ও তার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার ভুক্তভোগীরা। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি, ২০২০ইং) দুপুরে স্থানীয় গোয়ালপাড়া বাজারে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।

এ সময় তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী, জমি দখল, আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে এলাকার নিরহী মানুষকে হয়রানি, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এছাড়া একাধিক হত্যা ঘটনার সাথে জড়িত থেকেও তাদের লাশ নিয়ে এলাকায় লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজী করেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদের মোল্যা লিখিত বক্তব্যে বলেন, কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আলী খা’র নাতি ও লিয়াকত আলী খাঁ-এর পুত্র বর্তমান আটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহাগ খান এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছেন। এই সোহাগ খার নের্তৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী আটঘর ইউনিয়নের নিরহী, নিরাপরাধ জনসাধারণ, এমনকি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার নির্যাতন করছে। তার অত্যাচার থেকে বাদ পড়িনি আমি নিজেও। আমাকে লাঞ্চিত করেছে, মিথ্যা মামলাও দিয়েছে। আমার অপরাধ আমি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও রাজাকারদের বিপক্ষে বলে।

তিনি বলেন, দক্ষিণবঙ্গের এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী এনকাউন্টারের ৮নং তালিকায় থাকা এবং শত শত মামলার আসামীর প্রধান সহযোগী ছিলো এই সোহাগ খা। তারা বাবা ও দাদার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী ও মানবতা বিরোধী অভিযোগ রয়েছে। যার অভিযোগ নং- ২৭৮।

এই সোহাগ খা সবসময় সরকারি দলের ক্ষমতাশীন ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এই রাজাকার পুত্র গত ইউপি নির্বাচনে সন্ত্রাসী প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামীলীগের কাউকে নৌকার নমিনেশন পাওয়ার জন্য আবেদন করতে দেয়নি। এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই রাজাকারের পুত্র কিভাবে নৌকা প্রতিক পায়? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রাজাকারের পুত্র ও নাতীদের নৌকা প্রতিক দেওয়ার আগে মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যু দেখবেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, এই এলাকায় সন্ত্রাসী সোহাগ অপর সন্ত্রাসীকে খুন করে তার লাশ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করে। সেই লাশকে পুজি করে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজী করেছে। এমনকি আইনের প্যাচে ফেলে এলাকার নিরহী মানুষদের জেল হাজতে রেখেছে। এই সন্ত্রাসী সোহাগ আরো দুটি লাশ নিয়ে মামলার আসামী করার হুমকি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজী করেছে।

এই এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবক মহিউদ্দিনকে কৌশলে ঢাকা নিয়ে তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যা করে। তার লাশ নিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজী করে। এছাড়া ২০১৭ সালে চাঁদার টাকা ফেরতের দাবিতে তার বাড়ি ঘেরাও করলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে তার সহযোগী জিয়াকে ঘরের ভেতরে হত্যা করে। ফের তার লাশ নিয়ে চাঁদাবাজী করে এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য মামলা করেছে। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, এই সন্ত্রাসী সোহাগ খানকে আইনের আওতায় আনা হোক।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পিকুল খান, রাজ্জাক মোল্লা, সৈয়দ আলী মোল্লা, সাহিদ মাতুব্বর, আলেক শেখ, বারেক শেখ, বতু শেখ, আদেল মাতুব্বর, মুশা খানসহ অনেকে।

এ সময় ভুক্তভোগীরা বলেন, তার দলে না মেশার কারনে বিভিন্ন সময় তার বাহিনী দিয়ে হামলা করেছে এবং মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা নিয়েছে। তার চেম্বারে ধরে নিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক বৃদ্ধের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। পরে তিনি তার গরু বিক্রি করে চাঁদার টাকা দেন বলে অভিযোগ করেন। তার সন্ত্রাসী খাতায় নাম না লেখায় এক যুবকের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বলে এক যুবক অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি তার উপর হামলার ভয়াবহ বর্ণনা দিয়ে শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত স্থানগুলো দেখান।

এ সময় একবৃদ্ধ অভিযোগ করে বলেন, আমরা এলাকায় বিত্তশালী হওয়ায় আমার ছেলে রিপনের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে সন্ত্রাসী সোহাগ খা, ভয়ে নগত ২ লক্ষ টাকা দিয়ে দেই। আর ৩ লক্ষ টাকা না দেওয়ায় আমার ছেলেকে কুপিয়ে পুঙ্গ করে ফেলেছে।

এছাড়া ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী বলেন, এই সোহাগ খা ফের এলাকায় তান্ডব সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিশৃঙ্খলা করার জন্য বিতর্কিতমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে এবং সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ওয়াদুদ মাতুব্বরকে প্রতিপক্ষ করার চেষ্টা করছেন। আসলেই ওয়াদুদ মাতুব্বর এই এলাকা থেকে ১০ কিঃমিঃ দুরে গট্টি গ্রামে। সে এই এলাকার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না। তৃত্বীয় পক্ষের ইন্ধনে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাবি করে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সোহাগ খাকে আইনের আওয়াতায় এনে বিচার ও ফাঁসির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।