মাগুরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় উঠে এসেছে আওয়ামীলীগ ও এ দলের সাথে সংশ্লিষ্ট বিদ্রোহী তিন প্রার্থী নিয়ে।
তিন প্রার্থীর মধ্যে একজন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক।
তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয় বারের মত চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। অপর দুইজন ছাত্রলীগ নেতা ও আওয়ামী লীগ পরিবারের। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন হবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে। এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৯২জন। ৩৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সহ মাগুরা পৌরসভার জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধরা ভোট দিতে পারবেন। তবে যারা প্রার্থী তারা কাউকে ভোট দেয়ার বিধান নেই বলে নিবাচন অফিস থেকে জানা গেছে।
|
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার মাগুরা জেলা পরিষদ নিবাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের পর চেয়ারম্যান পদে সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত পঙ্কজ কুমার কুন্ডু পেয়েছেন আনারস প্রতিক। শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের শ্রীপুর বাহিনীর প্রধান আকবর হোসেন মিয়ার ছেলে শরিয়ত উল্লাহ হোসেন মিয়া রাজন পেয়েছেন ঘোড়া এবং শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিহাদ মিয়া কাপপিরিচ প্রতিক পেয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে এই তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও দ্বিমুখি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনজনের রাজনৈতিক পরিচয় আওয়ামীলীগের হওয়ায় নিবার্চন ত্রিমুখি লড়াইয়ের সম্ভবনা আছে বলেও ধারণা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও স্ব স্ব প্রার্থীর পক্ষের নেতাকর্মীরা। তবে এখনো প্রর্যন্তু দল থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুন্ডু জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এবং তিনিই মুলত প্রচার প্রচারণা ও কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোটের মাঠে দখল করে রেখেছেন।
শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শ্রীপুর বাহিনীর প্রধান আকবর হোসেন মিয়ার ছেলে শরিয়ত উল্লাহ হোসেন মিয়া রাজন নিজ উপজেলা শ্রীপুরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কারন, আকবর হোসেনের অপর ছেলে কুতুবুল্লাহ হোসেন কুটি মিয়া বর্তমান শ্রীপুর উপজেলার শ্রীকোল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। ওই ইউনিয়ন থেকে তিনি গত ইউপি নিবাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করেছিলেন। আর এ কারনেই তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের হলেও নানা কারনে কোনঠাসা হওয়ায় তারা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন বলে তার স্বপক্ষের নেতাকমীরা জানিয়েছে। তিনি শ্রীপুর ব্যতিত অন্য তিন উপজেলায় তার পদচারণা উল্লেখযোগ্য নয়। তবে তিনি নীরবে ভোট বিপ্লব ঘটাতে চান বলে ধারণা করছেন অনেকে।
আওয়ামীলীগের মনোয়নপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রার্থী পঙ্কজ কুমার কুন্ডু জানান, আমি জননেত্রী শেখা হাসিনা ও আজকের প্রধানমন্ত্রী তিনি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি গত পাচ বছরে মানুষের জন্য কাজ করেছি। কাজ করতে গিয়ে ষোল আনা কাজ এক মেয়াদে কখনো সম্ভব হয় না। প্রথমত এটা শিখতে শিখতে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। এবার নির্বাচিত চলে অসমাপ্ত কাজগুলো সঠিকভাবে শেষ করা যাবে। এবং জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী।
নিবাচন কেমন হবে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন নির্বাচনের মতোই হবে। যারা এই নিবাচনে যারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তারা প্রত্যেকেই সাধারন মানুষের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। এটা প্রত্যক্ষ ভোট নয়, পরোক্ষ ভোট। আর জনপ্রতিনিধিরা সচেতন মানুষ। তারা প্রার্থীর যোগ্যতা বিবেচনা করে ভোট প্রদানে অংশ নিবেন। আর যেহেতু ইভিএম পদ্ধতি ভোট হবে সেহেতু ভোটে কারচুপির কোন সুযোগ থাকবে না।
অপর চেয়ারম্যান প্রাার্থী শরিয়ত উল্লাহ হোসেন মিয়া রাজন জানান, যারা মুল আওয়ামীলীগ তারা দলীয় সকল সুভিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই আমি নিবাচনে অংশ নিয়েছি। আমি নিবাচিত হলে মুল আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের মাঠে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করবো।
মাগুরা জেলা নির্বাচন অফিসার মো. দাউদ হোসেন বলেন, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ন করতে তারা প্রস্তুতি গ্রহন করছেন। তিনি আরো জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর নিবাচনকে সামনে রেখে প্রতীক বরাদ্দের পর নিবাচনের আচরনবীধি প্রাথীদের প্রতি বলবৎ করা হয়েছে। জেলা পরিষদ নিবাচনে ভোটার রয়েছে ৪৯২জন। ৩৬ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য সহ মাগুরা পৌরসভার জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধরা ভোট দিতে পারবেন। তবে যারা প্রার্থী তারা কাউকে ভোট দেয়ার বিধান নেই বলে নিবাচন অফিস থেকে জানা গেছে।
এ নিবাচনে সদস্য পদে প্রাথী হয়েছেন ১ নং সদর উপজেলা থেকে ৬ জন,২ নং শ্রীপুর উপজেলা থেকে ৫ জন, ৩ নং শালিখা উপজেলা থেকে ২ জন, ৪ নং মহম্মদপুর উপজেলা ৭ জন। এছাড়া মাগুরা সদর ও শ্রীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত ১নং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বতায় থাকছেন ৩ জন । মহম্মদপুর-শালিখা নিয়ে গঠিত ২নং সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ডে নাজনীন রব্বানী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রিন্ট