পৈত্রিক সম্পত্তির একটি জমির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কানু কুন্ডুর পরিবার। কানু কুন্ডু পাংশা পৌরসভার গুধিবাড়ী গ্রামের মৃত সর্ব্বরঞ্জন কুন্ডুর ছেলে। বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে গুধিবাড়ী মৌজার ৩৫ নম্বর দাগের ৬৪ শতাংশ জমির মধ্যে নিজ অংশের ৩২ শতাংশ জমির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন কানু কুন্ডুর পরিবার। এ সময় প্রতিবেশি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আমজাদ হোসেন মন্টু ও ব্যবসায়ী চন্ডীচরণ ঘোষ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গুধিবাড়ী মৌজার ৩৫ নং দাগের ৬৪ শতাংশ জমির অর্ধেক ৩২ শতাংশের মালিক চিত্তরঞ্জন কুন্ডু গং এবং ৩২ শতাংশ জমির মালিক কানু কুন্ডু। কানু কুন্ডু তার অপর দুই ভাই মৃত বেনু কুন্ডু ও ভানু কুন্ডুর অংশ ক্রয় সূত্রে ৩২ শতাংশ জমির মালিক। উক্ত দাগের ৩২ শতাংশ জমির মধ্যে কানু কুন্ডু কয়েক বছর আগে প্রতিবেশী চন্ডীচরণ ঘোষের নিকট সাড়ে ১৪ শতাংশ এবং সাম্প্রতিক সময়ে ১৭.৬৬ শতাংশ জমি ইদ্রিস মন্ডলের কাছে বিক্রি করেছে।
আরও পড়ুনঃ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পাংশায় বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উদযাপন
চন্ডীচরণ ঘোষের নিকট বিক্রি করা সাড়ে ১৪ শতাংশ জমি বুঝে দিতে পারলেও দখল নিয়ে সমস্যা থাকায় ইদ্রিস মন্ডলের কাছে ১৭.৬৬ শতাংশ বিক্রি করা জমি বুঝে দিতে পারছে না কানু কুন্ডু। কানু কুন্ডু আরও জানান, কয়েক বছর আগে বিরোধপূর্ণ জমি মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। জমির উত্তরাংশে চিত্তরঞ্জন কুন্ডু গংদের এবং দক্ষিণাংশে তাদের (কানু কুন্ডু) জমির সীমানা নির্ধারণ করে পিলার দেওয়া হয়। সে মোতাবেক চিত্তরঞ্জন কুন্ডু তাদের সীমানার উত্তারাংশ থেকে ১০ শতাংশ জমি চন্ডীচরণ ঘোষের নিকট বিক্রি করেছে।
চন্ডীচরণ ঘোষ চিত্তরঞ্জন কুন্ডুর নিকট থেকে ক্রয়কৃত ১০ শতাংশ জমির মধ্য থেকে ৩ শতাংশ জমি ঘোষপাড়া মন্দিরের নামে দান করেছেন। বর্তমানে আপন চাচাতো ভাই চিত্তরঞ্জন কুন্ডু গংদের সাথে জমির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ থাকায় ইদ্রিস মন্ডলের কাছে বিক্রি করা ১৭.৬৬ শতাংশ জমি বুঝে দিতে পারছে না কানু কুন্ডু। আর জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। উভয় পরিবার পরস্পর মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি, রাজবাড়ী জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সহ-সভাপতি ও এয়াকুব আলী চৌধুরী স্মৃতি পাঠাগারের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চিত্তরঞ্জন কুন্ডু জানান, পাংশার গুধিবাড়ী মৌজার আরএস ৪৩ নং এসএ খতিয়ানভুক্ত উক্ত দাগের ৬৪ শতাংশ জমির অর্ধেক মালিক মনোরঞ্জন কুন্ডু এবং তার সহোদর ভ্রাতা সর্ব্বরঞ্জন কুন্ডু অরফে ষষ্ঠীরঞ্জন কুন্ডু অর্ধেক। ১৯৭৭ সালে কানু কুন্ডুর পিতা সর্ব্বরঞ্জন কুন্ডু পাংশা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ৬৪ শতাংশের অর্ধেক ৩২ শতাংশসহ অন্যান্য নিজ মালিকানাধীন দাগের সম্পত্তি ঢেকিপাড়া গ্রামের জনৈক ঝড়ু সরদারের নিকট সাফ- কবলামূলে বিক্রি করেন। উক্ত রেজিস্ট্রিকৃত দলিলমূলে মৃত ঝড়ু সরদারের ওয়ারিশগণ বর্তমানে জমির মালিকানা এবং বিএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য বিজ্ঞ রাজবাড়ী জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
আরও পড়ুনঃ সদরপুর এক মহিলা পকেট মার জনতার হাতে গণধোলাই
এরপরও বিএস রেকর্ডের ভিত্তিতে কানু কুন্ডু তার সহোদর ভাইদের নিকট থেকে সালিশি ভাগ বাটোয়ারা মূলে ক্রয়কৃত জমিসহ বিক্রি করার উদ্যোগে নেয়। সে প্রেক্ষিতে চন্ডীচরণ ঘোষের নিকট ওই দাগের নিজ অংশ থেকে ১০ শতাংশ ও ভাইয়ের নিকট থেকে ক্রয়কৃত জমি থেকে কিছু অংশ বিক্রি করেছে। ওই সালিশি ভাগ বাটোয়ারাতে আমাদের সম্মতি রয়েছে এবং ভাগ বাটোয়ারামূলে আমরা পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জমি সরেজমিনে ভোগদখলে আছি। যেখানে ১৯৭৭ সালে কানু কুন্ডুর পিতা সর্ব্বরঞ্জন কুন্ডু নিজে ঝড়ু সরদারের নিকট ওই জমি রেজিস্ট্রি দলিল মূলে বিক্রি করেছে তারপর সে জেনেশুনে একই জমি অন্যান্য লোকের কাছে বিক্রি করে কিভাবে?
প্রিন্ট