ঢাকা , শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo কুষ্টিয়ার পদ্মায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা Logo ৭ মাস ধরে বেতন বন্ধ ৩৩ সিএইচসিপি’র Logo মাগুরা পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবীর অভিযোগ Logo ফরিদপুরে শুরু হয়েছে তাইফুন হিম উৎসব Logo প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ফরিদপুর সদর উপজেলা দল চ্যাম্পিয়ন Logo নাটোরে মাকে হত্যার দায়ে মেয়ের ১০বছরের সাজা প্রদান Logo পুখুরিয়া স্টেশনে ট্রেনের যাত্রাবিরতি বাতিল করায় সদরপুরের যাত্রীদের ভোগান্তি Logo নড়াইলের মিথিল যশোর-বেনাপোল সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত Logo নিহত আসিফের জন্য সদরপুর কলেজ মসজিদে দুআ মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo রূপগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ফলোআপ- আপডেট নিউজ

কুষ্টিয়ায় দাফনের ১৪ দিন পর তোলা হলো কুয়েট শিক্ষক সেলিমের মরদেহ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৪ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ১০মিনিটে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ সাদাত, খুলনা ও কুমারখালী থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিতি ছিলেন।

মরদেহ উত্তোলনের পরপরই ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ প্রহরায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের খবর পেয়ে বাঁশগ্রাম কবরস্থানে শত শত উৎসুক নারী পুরুষ উপস্থিত হন। থানা পুলিশ ও একজন মেডিকেল কর্মকর্তা সেলিমের কবরস্থানের কাছে আসেন। এ সময় ড. সেলিম হোসেনের বাবা শুকুর আলী, তার দুই মেয়ে শিউলী ও শ্যামলীসহ নিকট আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও মরদেহ উত্তোলনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি।

পরবর্তীতে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ফারহান লাবিব উপস্থিত সবাইকে জানান, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে মরদেহ আজ (মঙ্গলবার) কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে না। বুধবার সকাল ৮টায় ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হবে।

৩০ নভেম্বর কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক সেলিমের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর ওই শিক্ষক বাসায় ফিরে মারা যান।

অভিযোগ উঠেছে, সেজানসহ ওই শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক সেলিমকে লাঞ্ছিত করেছিলেন, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। পরদিন ১ ডিসেম্বর বুধবার অধ্যাপক সেলিমকে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় খুলনার খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস অধ্যাপকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য ৫ ডিসেম্বর দুপুরে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন জানান।

খুলনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি কুষ্টিয়ার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আমি বিচার চাই। আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। আমি কেস করবো, আগে আমার কেসটা আগে লিকে নেন, তারপর লাশ তোলেন। কোনো আপত্তি নেই।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নিহত কুয়েট শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের কাছে এমন দাবি করেন তার বাবা শুকুর আলী।

শুকুর আলী অভিযোগ করে বলেন, আমি বলিছি এর আগে, কিন্তু যাতি পারিনি। আমাকে ফোন করেছিলো পুলিশ, অসুস্থ ছিনু তাই যেতে পারিনি। দুই একদিনের মধ্যেই যাওয়ার কথা হয়েছে। কেসটা হেয়া যাক, তারপর পুলিশ লাশ তুলুক বা যা করুক আমার কোনো আপত্তি নেই।

এদিকে, নিহত সেলিম হোসেনের বোন শিউলি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতা নিয়ে আমার ভাইকে মরধর করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাইকে হয়তো কিছু খাইয়ে দিয়েছিলো। আমার ভাবি আমাদের কাছে এসব কথা গোপন করেছে। আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।

উল্লেখ্য, গত (৩০ নভেম্বর) বেলা ৩টায় মারা যান কুয়েট শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) পদে নিজের লোককে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। ঘটনার দিন দাপ্তরিক কক্ষে সাদমান নাহিয়ান ও তার অনুগতদের অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন ড. সেলিম।

তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি বলে নিশ্চিত করে খুলনার খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার। তিনি জানান, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে, পুলিশ কবর থেকে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিয়ে গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে একই কবরে পুনরায় দাফন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানা পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

কুষ্টিয়ার পদ্মায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সাড়ে ৬ লাখ টাকা জরিমানা

error: Content is protected !!

ফলোআপ- আপডেট নিউজ

কুষ্টিয়ায় দাফনের ১৪ দিন পর তোলা হলো কুয়েট শিক্ষক সেলিমের মরদেহ

আপডেট টাইম : ০৫:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ :
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ১৪ দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ১০মিনিটে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহম্মেদ সাদাত, খুলনা ও কুমারখালী থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিতি ছিলেন।

মরদেহ উত্তোলনের পরপরই ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ প্রহরায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

এর আগে, মঙ্গলবার দুপুরে ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের খবর পেয়ে বাঁশগ্রাম কবরস্থানে শত শত উৎসুক নারী পুরুষ উপস্থিত হন। থানা পুলিশ ও একজন মেডিকেল কর্মকর্তা সেলিমের কবরস্থানের কাছে আসেন। এ সময় ড. সেলিম হোসেনের বাবা শুকুর আলী, তার দুই মেয়ে শিউলী ও শ্যামলীসহ নিকট আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও মরদেহ উত্তোলনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা অন্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি।

পরবর্তীতে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ফারহান লাবিব উপস্থিত সবাইকে জানান, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে মরদেহ আজ (মঙ্গলবার) কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে না। বুধবার সকাল ৮টায় ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হবে।

৩০ নভেম্বর কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক সেলিমের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর ওই শিক্ষক বাসায় ফিরে মারা যান।

অভিযোগ উঠেছে, সেজানসহ ওই শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক সেলিমকে লাঞ্ছিত করেছিলেন, যা তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। পরদিন ১ ডিসেম্বর বুধবার অধ্যাপক সেলিমকে তার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রামে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় খুলনার খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস অধ্যাপকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য ৫ ডিসেম্বর দুপুরে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন জানান।

খুলনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি কুষ্টিয়ার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানোর পরিপ্রেক্ষিতে ড. সেলিম হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দেওয়া হয়।

আমি বিচার চাই। আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। আমি কেস করবো, আগে আমার কেসটা আগে লিকে নেন, তারপর লাশ তোলেন। কোনো আপত্তি নেই।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে নিহত কুয়েট শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের কাছে এমন দাবি করেন তার বাবা শুকুর আলী।

শুকুর আলী অভিযোগ করে বলেন, আমি বলিছি এর আগে, কিন্তু যাতি পারিনি। আমাকে ফোন করেছিলো পুলিশ, অসুস্থ ছিনু তাই যেতে পারিনি। দুই একদিনের মধ্যেই যাওয়ার কথা হয়েছে। কেসটা হেয়া যাক, তারপর পুলিশ লাশ তুলুক বা যা করুক আমার কোনো আপত্তি নেই।

এদিকে, নিহত সেলিম হোসেনের বোন শিউলি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতা নিয়ে আমার ভাইকে মরধর করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ভাইকে হয়তো কিছু খাইয়ে দিয়েছিলো। আমার ভাবি আমাদের কাছে এসব কথা গোপন করেছে। আমার ভাইকে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচার চাই।

উল্লেখ্য, গত (৩০ নভেম্বর) বেলা ৩টায় মারা যান কুয়েট শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) পদে নিজের লোককে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। ঘটনার দিন দাপ্তরিক কক্ষে সাদমান নাহিয়ান ও তার অনুগতদের অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন ড. সেলিম।

তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি বলে নিশ্চিত করে খুলনার খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার। তিনি জানান, মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এদিকে, পুলিশ কবর থেকে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য উত্তোলন করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিয়ে গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে একই কবরে পুনরায় দাফন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানা পুলিশের ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার।


প্রিন্ট