ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ Logo ফরিদপুরের ধর্ষণ মামলার আসামী সোহেল গ্রেপ্তার Logo পাংশায় শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সভায় নতুন কমিটি Logo নির্বাচন ছাড়া কোন সরকার দীর্ঘদিন থাকলে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারেরা জন্ম নেয়ঃ -আব্দুস সালাম Logo বালিয়াকান্দিতে বিএনপি নেতাদের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ Logo নারী দালাল হেলেনা আক্তার কে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় ‌জনতা Logo কৃষকের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা থানায় পাল্টা-পালটি অভিযোগ Logo দৌলতপুরে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ভাইয়ের হাতে ভাই গুরুতর জখম Logo বাঘায় শয়নকক্ষ থেকে গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo সদরপুরে সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, জনমনে স্বস্তি
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় ১৭ গ্রাম প্লাবিত, ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন এবং চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বেশিরভাগ জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এসব বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির অভাব।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পানি  বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। যেখানে বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার।  মঙ্গলবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৬টায় কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার পদ্মানদীর চর অঞ্চল ও পদ্মাপাড় ঘেষা রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারী ইউনিয়ন। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে দুই ইউনিয়নের প্রায় ১৭ গ্রামের মানুষেরা পানিবন্দি হয়ে পরেছে। ডুবে গেছে কয়েক হাজার একর জমির উঠতি ফসল। এতে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বানভাসি মকছেদ আলী জানান, ‘পানিতে বাড়ি ঘরে থাকতে পারছি না। ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে গেছে। মাঠের পাট কাটতে পারছি না। কাঁচা মরিচের ক্ষেত তো সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখানে খাবারের সমস্যা, খাবার পানি ও ওষুধের সমস্যা বেশি।’

আকুবার আলী জানান, ‘পানির কারণে কোথাও যেতে পারছি না। কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারছি না। আমরা চরের মানুষ পানিতে ডুবে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

শরিফা খাতুন জানান, ‘পানিতে রান্নাঘর, টয়লেট, টিউবওয়েল ডুবে রয়েছে। ঘরের মধ্যে কোনোরকমে রান্না করছি সিমেন্টের চুলা দিয়ে। পানির কারণে সাপ দেখা যাচ্ছে মাঝে মাঝে। সাপ আতঙ্কে রয়েছি। সেই সঙ্গে আমাদের শুকনো খাবারের সংকট।’

পানিবন্দি রফিকুল ইসলাম জানান, ‘পানিবন্দি হয়ে আমরা খাবারের অভাবে খুবই কষ্টে আছি। সরকার এবং বিত্তবান মানুষ আমাদের পাশে এগিয়ে না আসলে আমরা না খেতে পেয়ে মারা যাবো।’

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, ‘১৭টি গ্রামের ৬০ ভাগ বসত বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছ। তাদের কাজের অভাব, খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ মাঠের ফসল তলিয়ে গেছে। এতে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এসব বানভাসিদের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ তৎপরতা শুরু অনুরোধ জানান।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার জানান, রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরি ত্রাণ নিয়ে বন্যা কবলিত মানুষকে সহায়তা করা হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় ১৭ গ্রাম প্লাবিত, ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

আপডেট টাইম : ০৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ অগাস্ট ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ :

কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন এবং চিলমারী ইউনিয়নের প্রায় ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ওই অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বেশিরভাগ জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এসব বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির অভাব।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পানি  বৃদ্ধি পাচ্ছে। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার। যেখানে বিপৎসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার।  মঙ্গলবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার দশমিক ৪৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বুধবার (১৮ আগস্ট) সকাল ৬টায় কুষ্টিয়ার হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিলো ১৩ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুষ্টিয়ার পদ্মানদীর চর অঞ্চল ও পদ্মাপাড় ঘেষা রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারী ইউনিয়ন। পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে দুই ইউনিয়নের প্রায় ১৭ গ্রামের মানুষেরা পানিবন্দি হয়ে পরেছে। ডুবে গেছে কয়েক হাজার একর জমির উঠতি ফসল। এতে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

বানভাসি মকছেদ আলী জানান, ‘পানিতে বাড়ি ঘরে থাকতে পারছি না। ঘরের মধ্যে পানি ঢুকে গেছে। মাঠের পাট কাটতে পারছি না। কাঁচা মরিচের ক্ষেত তো সব নষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের এখানে খাবারের সমস্যা, খাবার পানি ও ওষুধের সমস্যা বেশি।’

আকুবার আলী জানান, ‘পানির কারণে কোথাও যেতে পারছি না। কেউ অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে পারছি না। আমরা চরের মানুষ পানিতে ডুবে মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

শরিফা খাতুন জানান, ‘পানিতে রান্নাঘর, টয়লেট, টিউবওয়েল ডুবে রয়েছে। ঘরের মধ্যে কোনোরকমে রান্না করছি সিমেন্টের চুলা দিয়ে। পানির কারণে সাপ দেখা যাচ্ছে মাঝে মাঝে। সাপ আতঙ্কে রয়েছি। সেই সঙ্গে আমাদের শুকনো খাবারের সংকট।’

পানিবন্দি রফিকুল ইসলাম জানান, ‘পানিবন্দি হয়ে আমরা খাবারের অভাবে খুবই কষ্টে আছি। সরকার এবং বিত্তবান মানুষ আমাদের পাশে এগিয়ে না আসলে আমরা না খেতে পেয়ে মারা যাবো।’

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল জানান, ‘১৭টি গ্রামের ৬০ ভাগ বসত বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছ। তাদের কাজের অভাব, খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ মাঠের ফসল তলিয়ে গেছে। এতে তাদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এসব বানভাসিদের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ তৎপরতা শুরু অনুরোধ জানান।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আক্তার জানান, রামকৃষ্ণপুর এবং চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরি ত্রাণ নিয়ে বন্যা কবলিত মানুষকে সহায়তা করা হবে।


প্রিন্ট