ঢাকা , মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বোয়ালমারীতে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ডিজে গ্রেপ্তার। Logo লন্ডনে ফিলিস্তিনের পক্ষে হাজার হাজার মানুষের মিছিল Logo কালুখালীতে বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনের প্রস্তুতি সভা Logo লালপুরে এবি পার্টির নেতা নাসিমের গণসংযোগ ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ফুটবল বিতরণ Logo নাটোরের লালপুরে খেজুর গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মেট্রিক টন Logo গোয়ালন্দে নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে পরিচিতি ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় ছাত্রদল নেতার উপর সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবীতে মানববনব্ধন Logo হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত হোক আলফাডাঙ্গা Logo ভেড়ামারায় সড়ক দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত Logo সদরপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারে ৫শতাধিক জাকেরদের মধ্যে অনুদানের চেক বিতরণ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঝিনাইদহে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মাননা

৫৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ হচ্ছে ৫৩ টি সড়ক

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ-জীবননগর মহা-সড়ক থেকে মহেশপুর প্রবেশ করতে হলে যেতে হবে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান সড়ক দিয়ে। একটু এগিয়ে খাদ্য গুদাম পার হলেই পেয়ে যাবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন সড়ক। হামিদপুর মোড় পেরুলেই যাবেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক সড়ক।

সোনালী ব্যাংকে যেতে হলে যেতে হবে মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান সড়ক দিয়ে। শুধু এই সড়ক গুলো নয় ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভা এলাকার ৫৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরন করা হয়েছে ৫৩ টি সড়কের। যে গুলোর নামফলক স্থাপনের কাজ চলছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিজয়ের এই মাসে তারা পৌর এলাকার সব মুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কের নামকরণ শেষ করবেন। ইতোমধ্যে ২৯ টি সড়কের নামফলক স্থাপন শেষ হয়েছে। বাকি গুলোর কাজ চলছে। পাশাপাশি সব মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা গুলোও পাঁকা করা হবে।

ইতোমধ্যে ১২ জন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি যাওয়া রাস্তা পাঁকা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কারো কারো বাড়ি পিচ রাস্তা, আবার কারো ইট বিছানো রাস্তা করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলার একটি মহেশপুর। ভারত সীমান্তবর্তী এই উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার জানান, এই উপজেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে ৩৬১ জন, যার মধ্যে বেঁচে আছেন ১৯৬ জন। আর মহেশপুর পৌর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ৫৩ জন, যার মধ্যে এখনও জীবিত আছেন ১৯ জন। যাদের প্রত্যেকের নামে সড়কের নামকরন কাজ চলছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানান, ইতোমধ্যে ভালাইপুর ব্রীজ হতে আলম ‘স’ মিল পর্যন্ত বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়ক, হামিদপুর মসজিদ মোড় হতে রামচন্দ্রপুর রাস্তা পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক সড়ক, গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় বটতলা হতে দাসপাড়া পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমান সড়ক, বালিবাজার হতে গাড়াবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সড়ক, সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস মোড় হতে কিয়ামতের বাড়ি পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা মৃত শফি উদ্দিন সড়ক, মহেশপুর কাঁচা বাজার মোড় হতে সন্ন্যাসীর দোকান পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা সড়ক কাজীপাড়া হয়ে মেইন সড়ক পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা আঃ ছালাম সড়ক সহ ২৯ টি সড়কের নামফলক স্থাপন শেষ হয়েছে।

মহেশপুর পৌরসভার মেয়র আবদুর রশিদ খাঁন জানান, পৌরসভার বর্তমান পরিষদ মনে করে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া তাদের দায়িত্ব। তাছাড়া পৌর এলাকার ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বর্তমানে বেঁচে আছেন ১৯ জন, বাকি ৩৪ জন মারা গেছেন। যারা বেঁছে আছেন তারাও মারা যাবেন। দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া এই বীর সন্তানরা মারা যাওয়ার পর তাদের স্মৃতি হারিয়ে যাবে এটা হতে পারে না। তাই তারা পৌরসভায় সভা করে নামকরন চুড়ান্ত করেছেন। চলতি বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নামফলক স্থাপন শুরু করেছেন।

ইতোমধ্যে ২৯ টি সড়কের নামফলক স্থাপন শেষ হয়েছে। মেয়র আরো জানান, এই ডিসেম্বরেই ৫৩ টি নামফলক করা হবে, পাশাপাশি পৌরসভা এলাকার আলোচিত চা-বাজারে মুজিব চত্তর এর উদ্বোধন করা হবে। প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে সড়কের নামকরণের বিষয়ে জানান, এ বিষয়ে সরকারি পরিপত্র দেখে করতে হবে। তাছাড়া ইউনিয়ন বা পৌরসভা এলাকার কোনো সড়কের নামকরণ করতে হলে প্রথমেই স্ব-স্ব পরিষদ তাদের সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে নামকরণ করার প্রস্তাব করবেন। তারপর সেটা উপজেলা পরিষদের সভায় আলোচনা শেষে অগ্রগামী করে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে যাবে। জেলা প্রশাসন এর দপ্তর থেকে অনুমোদন শেষে যাবে মন্ত্রনালয়ে। এরপর সেটার সরকারি স্বীকৃতি মিলবে।

মহেশপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পৌরসভার সাবেক কমান্ডার মুক্তিযেদ্ধা আবদুস সাত্তার জানান, ৭১ সালে যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশের মাটিতে প্রথম পাঁ রেখে যে আনন্দ পেয়েছিলেন, তার নামের রাস্তার উপর দিয়ে চলার সময় সেই আনন্দ মনে করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, বেঁচে থাকতে তারা এই নামকরন দেখে যেতে পারলেন এতে আরো মেশি খুশি। তিনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে সড়কের নাম মুক্তিযোদ্ধার নামে করার দাবি করেন।

আরেক মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বলেন, অনেকদিন পর হলেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানান। তাছাড়া মেয়র সহ অন্যান্যের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, তাদের এই উদ্যোগ মুক্তিযোদ্ধারা মনে রাখবেন। এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্বাশতী শীল জানান, তারাও সরকারি নিয়ম মেনে চেষ্টা করছেন প্রতিটি ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়কের নামকরন। মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়কের নামকরন হবে এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ বলে তিনি জানান।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

বোয়ালমারীতে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ডিজে গ্রেপ্তার।

error: Content is protected !!

ঝিনাইদহে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্মাননা

৫৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরণ হচ্ছে ৫৩ টি সড়ক

আপডেট টাইম : ০৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২০
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ :

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ-জীবননগর মহা-সড়ক থেকে মহেশপুর প্রবেশ করতে হলে যেতে হবে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমান সড়ক দিয়ে। একটু এগিয়ে খাদ্য গুদাম পার হলেই পেয়ে যাবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন সড়ক। হামিদপুর মোড় পেরুলেই যাবেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক সড়ক।

সোনালী ব্যাংকে যেতে হলে যেতে হবে মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান সড়ক দিয়ে। শুধু এই সড়ক গুলো নয় ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভা এলাকার ৫৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে নামকরন করা হয়েছে ৫৩ টি সড়কের। যে গুলোর নামফলক স্থাপনের কাজ চলছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিজয়ের এই মাসে তারা পৌর এলাকার সব মুক্তিযোদ্ধার নামে সড়কের নামকরণ শেষ করবেন। ইতোমধ্যে ২৯ টি সড়কের নামফলক স্থাপন শেষ হয়েছে। বাকি গুলোর কাজ চলছে। পাশাপাশি সব মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে প্রবেশের রাস্তা গুলোও পাঁকা করা হবে।

ইতোমধ্যে ১২ জন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি যাওয়া রাস্তা পাঁকা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে কারো কারো বাড়ি পিচ রাস্তা, আবার কারো ইট বিছানো রাস্তা করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলার একটি মহেশপুর। ভারত সীমান্তবর্তী এই উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সাত্তার জানান, এই উপজেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে ৩৬১ জন, যার মধ্যে বেঁচে আছেন ১৯৬ জন। আর মহেশপুর পৌর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন ৫৩ জন, যার মধ্যে এখনও জীবিত আছেন ১৯ জন। যাদের প্রত্যেকের নামে সড়কের নামকরন কাজ চলছে।

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানান, ইতোমধ্যে ভালাইপুর ব্রীজ হতে আলম ‘স’ মিল পর্যন্ত বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়ক, হামিদপুর মসজিদ মোড় হতে রামচন্দ্রপুর রাস্তা পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক সড়ক, গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় বটতলা হতে দাসপাড়া পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমান সড়ক, বালিবাজার হতে গাড়াবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান সড়ক, সাব-রেজিষ্ট্রি অফিস মোড় হতে কিয়ামতের বাড়ি পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা মৃত শফি উদ্দিন সড়ক, মহেশপুর কাঁচা বাজার মোড় হতে সন্ন্যাসীর দোকান পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা সড়ক কাজীপাড়া হয়ে মেইন সড়ক পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা আঃ ছালাম সড়ক সহ ২৯ টি সড়কের নামফলক স্থাপন শেষ হয়েছে।

মহেশপুর পৌরসভার মেয়র আবদুর রশিদ খাঁন জানান, পৌরসভার বর্তমান পরিষদ মনে করে মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দেওয়া তাদের দায়িত্ব। তাছাড়া পৌর এলাকার ৫৩ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে বর্তমানে বেঁচে আছেন ১৯ জন, বাকি ৩৪ জন মারা গেছেন। যারা বেঁছে আছেন তারাও মারা যাবেন। দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া এই বীর সন্তানরা মারা যাওয়ার পর তাদের স্মৃতি হারিয়ে যাবে এটা হতে পারে না। তাই তারা পৌরসভায় সভা করে নামকরন চুড়ান্ত করেছেন। চলতি বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নামফলক স্থাপন শুরু করেছেন।

ইতোমধ্যে ২৯ টি সড়কের নামফলক স্থাপন শেষ হয়েছে। মেয়র আরো জানান, এই ডিসেম্বরেই ৫৩ টি নামফলক করা হবে, পাশাপাশি পৌরসভা এলাকার আলোচিত চা-বাজারে মুজিব চত্তর এর উদ্বোধন করা হবে। প্রশাসনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে সড়কের নামকরণের বিষয়ে জানান, এ বিষয়ে সরকারি পরিপত্র দেখে করতে হবে। তাছাড়া ইউনিয়ন বা পৌরসভা এলাকার কোনো সড়কের নামকরণ করতে হলে প্রথমেই স্ব-স্ব পরিষদ তাদের সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে নামকরণ করার প্রস্তাব করবেন। তারপর সেটা উপজেলা পরিষদের সভায় আলোচনা শেষে অগ্রগামী করে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে যাবে। জেলা প্রশাসন এর দপ্তর থেকে অনুমোদন শেষে যাবে মন্ত্রনালয়ে। এরপর সেটার সরকারি স্বীকৃতি মিলবে।

মহেশপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পৌরসভার সাবেক কমান্ডার মুক্তিযেদ্ধা আবদুস সাত্তার জানান, ৭১ সালে যুদ্ধ শেষে স্বাধীন দেশের মাটিতে প্রথম পাঁ রেখে যে আনন্দ পেয়েছিলেন, তার নামের রাস্তার উপর দিয়ে চলার সময় সেই আনন্দ মনে করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, বেঁচে থাকতে তারা এই নামকরন দেখে যেতে পারলেন এতে আরো মেশি খুশি। তিনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে সড়কের নাম মুক্তিযোদ্ধার নামে করার দাবি করেন।

আরেক মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান বলেন, অনেকদিন পর হলেও পৌরসভা কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানান। তাছাড়া মেয়র সহ অন্যান্যের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, তাদের এই উদ্যোগ মুক্তিযোদ্ধারা মনে রাখবেন। এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্বাশতী শীল জানান, তারাও সরকারি নিয়ম মেনে চেষ্টা করছেন প্রতিটি ইউনিয়নে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়কের নামকরন। মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সড়কের নামকরন হবে এটা অবশ্যই ভালো উদ্যোগ বলে তিনি জানান।