ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo রায়পুরায় সাঁড়াশি অভিযানে অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার, দুই নারী আটক Logo লালমনিরহাটে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে আটজন আহত, রেল যোগাযোগ বন্ধ Logo মুকসুদপুরে গরুর পায়ের রগ কেটে দিল প্রতিবেশী ! Logo লালপুরে আবারো গুলিবর্ষণ, এলাকায় উত্তেজনা Logo বাংলাদেশী পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা  প্রত্যাহারের দাবিতে পেট্রাপোল বন্দরে শ্রমিকদের আন্দোলন Logo কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল ফুটবল টুর্নামেন্টে ফাইনালে মহম্মদপুর Logo ফরিদপুর জেলা যুবদলের উদ্যোগ ‌ ওমর ফারুকের ‌ দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‌ আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত Logo বাগাতিপাড়ায় কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান Logo বাঘা পৌরসভায় শুরু হওয়া ৫টির কাজের উদ্বোধন Logo হাতিয়ায় বাল্কহেডের ধাক্কায় ট্রলার ডুবে দুইজনের মৃত্যু
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

রাজশাহী গোদাগাড়ী’র মাদক স্পট থেকে ৩০ লাখ টাকা মাসোহারা নেন ডিএনসির রায়হান

মোঃ মনোয়ার হোসেনঃ

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া’র ভিশন, দেশে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অবৈধ পাচাররোধে এনফোর্সমেন্ট, আইনী কার্যক্রম জোরদার, মাদকবিরোধী গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দেশে মাদকের অপব্যবহার কমিয়ে আনার মিশন নিয়ে কাজ করছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এ ভিশন ও মিশন নষ্টে কাজ করছেন কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা। সরকারের অর্জন ও সুনাম বিনষ্টে এসব অসাধু কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত মাদক স্পট থেকে গ্রহণ করছে মাসোহারা। মাদক কারবারি বা গডফাদাররা গ্রেফতার না হলেও সাধারণ মানুষকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

মাসিক মাসোহারা আদায় ও ব্যক্তি আক্রোশে অনেককেই পলাতক মামলায় জড়ানো হচ্ছে। আবার দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় জড়িয়ে পড়ছে মাদক সিন্ডিকেটে। পদ্মা নদী ঘেরা রাজশাহী শহরের কয়েকটি থানা সীমান্তবর্তী ভারতের সংলগ্ন হওয়ায় মাদকে ছয়লাব হয়েছে। রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে দৃশ্যমান বড় মাদক চালান না ধরা হলেও প্রতিনিয়তই মাদক সেবীদের গ্রেফতার করছেন তাঁরা। এদিকে পুলিশ ও র‍্যাবের জালে ধরা পড়ছে মাদকের বড় বড় চালান। আসলে মাদক নিয়ন্ত্রণে বেশিরভাগ কাজ করা উচিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট, বাঘা সিমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমানে মাদক আসছে রাজশাহী শহরে। রাজশাহী শহর হয়ে ওই মাদক চলে যাচ্ছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রাপ্তে। অভিযোগ উঠেছে শুধু রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে ডিএনসি’র পরিদর্শক রায়হান আহমেদ খান প্রায় ৩০ লাখ টাকা মাসোহারা উত্তোলন করেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ সালে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে পরিদর্শক হিসাবে যোগদান করেন রায়হান আহমেদ খান। এরপর থেকে বিরোধী মতের বিএনপি’র রাজনৈতিক ব্যক্তিদের টার্গেট, মামলা ব্যানিজ্যসহ মিথ্যা মামলা প্রদান করেন তিনি। প্রতিমাসে গোদাগাড়ীসহ বিভিন্ন মাদক স্পট থেকে বিপুল পরিমাণের মাসোহারা উত্তোলনও করেন । তিনি প্রতি সপ্তাহে থিম ওমর প্লাজার পাশের একটি দোকান ৯ হাজার টাকার বিদেশি সিগারেট কিনেন। মাসে ২৭ হাজার টাকার বিদেশি সিগারেট কিনেন তিনি।

 

সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল এন্ড কলেজের পাশে মায়াবন নামক বিশাল এক ফ্লাট নিয়ে থাকেন রায়হান। চড়েন নিজস্ব গাড়িতে। গাড়িটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫০ লক্ষ টাকা। এতো টাকা আয়ের উৎস খুঁজে দেখা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

 

দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে গড়ে তুলেছেন মাদকের বড় সিন্ডিকেট। জব্দকৃত অরিজিনাল মাদক উদ্ধার করে আসামি চালান করেন মেডি নামক এক দ্রব্য দিয়ে। পরে অরিজিনাল মাদক গুড়িপাড়ায় বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার এমন কিছু ভুক্তভোগী জানান, মিথ্যা মামলাসহ শুধুমাত্র হয়রানির লক্ষ্যে পলাতক আসামী করা হয়েছে তাঁদের। আটকের পরে মোটা অংকের উৎকোচ দাবি করেছিলেন পরিদর্শক রায়হান। অপর এক ব্যক্তি বলেন, তিনি গাঁজা খেতেন। গাঁজা না পেয়ে তাঁকে হেরোইন মামলা দেওয়া হয়েছে।

 

অন্য আরেক মাদক সেবী বলেন, আমি মাদক সেবন করি এটা সত্য। কিন্তু আমাকে ধরে হেরোইন দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রতিহিংসা ও আক্রোশের শিকার এমন অনেক ভুক্তভোগী বলেন প্রকৃত মাদক কারবারি বা বড় বড় ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করেন না তাঁরা। ওইসব ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বড় অংকের টাকা নেন তিনি।

 

গোদাগাড়ী’র সুমন নামে এক ব্যক্তি বলেন, প্রতিমাসেই একজন সিপাই দিয়ে এসব মাদক কারবারির নিকট থেকে মাসোহারা উত্তোলন করা হয়। মাদক কারবারিদের প্রেসক্রিপশনে কাউকে ফাঁসাতে হলে তাঁর বাড়ির পাশে মাদক লুকিয়ে অভিযানের নাটক সাজানো হয়। এরপর চলে দেনদরবার। টাকা দিলেও আসামী হবে, না দিলেও আসামী হবে। টাকা দিলে মাদকের পরিমান কমে, না দিলে বেড়ে যায় পরিমাণ।

 

সম্প্রতি গোদাগাড়ী’র পরমান্দপুর প্লট ব্যবসায়ী ও কৃষক পিয়ারুলের বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন পরিদর্শক রায়হান। যদিও পিয়ারুল ওই বাসায় থাকেন না। তিনি চরে এলাকায় তার জমি জমা নিয়ে পড়ে থাকেন। তার বিরুদ্ধে পলাতক একটি মাদক মামলা রয়েছে। যদিও পিয়ারুলের দাবি প্রতিহিংসা বশত পলাতক মামলায় আসামী করা হয়েছে তাকে। ওই দিনের অভিযানে পিয়ারুলের বাড়িতে চলে অমানবিক নির্যাতন। শিশু বাচ্চাসহ পিয়ারুলের স্ত্রী ও প্রতিবেশি দুজন ব্যক্তিকেও মারধর করা হয়।

 

পিয়ারুলের স্ত্রী’র দাবি আমার স্বামী যদি অপরাধী হয় তাহলে তাঁকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেন। এর জন্য আমাদেরকে কেনো নির্যাতন করা হলো? ওই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর দু দফায় আবারও পিয়ারুলের বাসায় যায় ডিএনসি’র একটি দল। এরপরও পরিদর্শক রায়হান উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের অনুমতিবিহিন তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানায়। প্রশ্ন থাকে একজন সরকারি কর্মকর্তা উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের অনুমতিবিহিন সংবাদের প্রতিবাদ দিতে পারেন কি না?

 

উল্লেখ, ২০২৩ সালের পর থেকে প্রতিমাসের মাদক উদ্ধারসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী শাখার রিপোর্ট অনলাইনে দেওয়া হয় না। শুধু মাত্র প্রতিনিয়তই আটক ব্যক্তিদের নাম ছাড়া তথ্য দেওয়া হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহীর অনলাইনে।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক রায়হান আহমেদ খান বলেন, আমি ফোনে কোনো বক্তব্য দিবো না। স্বাক্ষাতে আসলে বক্তব্য দিবো।

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি এখন জুম মিটিং এ আছি। পরে কথা বলবো। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রায়পুরায় সাঁড়াশি অভিযানে অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার, দুই নারী আটক

error: Content is protected !!

রাজশাহী গোদাগাড়ী’র মাদক স্পট থেকে ৩০ লাখ টাকা মাসোহারা নেন ডিএনসির রায়হান

আপডেট টাইম : ৮ ঘন্টা আগে
মোঃ মনোয়ার হোসেন, রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :

মোঃ মনোয়ার হোসেনঃ

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া’র ভিশন, দেশে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, অবৈধ পাচাররোধে এনফোর্সমেন্ট, আইনী কার্যক্রম জোরদার, মাদকবিরোধী গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দেশে মাদকের অপব্যবহার কমিয়ে আনার মিশন নিয়ে কাজ করছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এ ভিশন ও মিশন নষ্টে কাজ করছেন কতিপয় অসাধু কর্মকর্তারা। সরকারের অর্জন ও সুনাম বিনষ্টে এসব অসাধু কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত মাদক স্পট থেকে গ্রহণ করছে মাসোহারা। মাদক কারবারি বা গডফাদাররা গ্রেফতার না হলেও সাধারণ মানুষকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

মাসিক মাসোহারা আদায় ও ব্যক্তি আক্রোশে অনেককেই পলাতক মামলায় জড়ানো হচ্ছে। আবার দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকায় জড়িয়ে পড়ছে মাদক সিন্ডিকেটে। পদ্মা নদী ঘেরা রাজশাহী শহরের কয়েকটি থানা সীমান্তবর্তী ভারতের সংলগ্ন হওয়ায় মাদকে ছয়লাব হয়েছে। রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিযানে দৃশ্যমান বড় মাদক চালান না ধরা হলেও প্রতিনিয়তই মাদক সেবীদের গ্রেফতার করছেন তাঁরা। এদিকে পুলিশ ও র‍্যাবের জালে ধরা পড়ছে মাদকের বড় বড় চালান। আসলে মাদক নিয়ন্ত্রণে বেশিরভাগ কাজ করা উচিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট, বাঘা সিমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমানে মাদক আসছে রাজশাহী শহরে। রাজশাহী শহর হয়ে ওই মাদক চলে যাচ্ছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রাপ্তে। অভিযোগ উঠেছে শুধু রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা থেকে ডিএনসি’র পরিদর্শক রায়হান আহমেদ খান প্রায় ৩০ লাখ টাকা মাসোহারা উত্তোলন করেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ সালে রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে পরিদর্শক হিসাবে যোগদান করেন রায়হান আহমেদ খান। এরপর থেকে বিরোধী মতের বিএনপি’র রাজনৈতিক ব্যক্তিদের টার্গেট, মামলা ব্যানিজ্যসহ মিথ্যা মামলা প্রদান করেন তিনি। প্রতিমাসে গোদাগাড়ীসহ বিভিন্ন মাদক স্পট থেকে বিপুল পরিমাণের মাসোহারা উত্তোলনও করেন । তিনি প্রতি সপ্তাহে থিম ওমর প্লাজার পাশের একটি দোকান ৯ হাজার টাকার বিদেশি সিগারেট কিনেন। মাসে ২৭ হাজার টাকার বিদেশি সিগারেট কিনেন তিনি।

 

সৃষ্টি সেন্ট্রাল স্কুল এন্ড কলেজের পাশে মায়াবন নামক বিশাল এক ফ্লাট নিয়ে থাকেন রায়হান। চড়েন নিজস্ব গাড়িতে। গাড়িটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫০ লক্ষ টাকা। এতো টাকা আয়ের উৎস খুঁজে দেখা উচিত বলে মনে করেন স্থানীয়রা।

 

দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার সুবাদে গড়ে তুলেছেন মাদকের বড় সিন্ডিকেট। জব্দকৃত অরিজিনাল মাদক উদ্ধার করে আসামি চালান করেন মেডি নামক এক দ্রব্য দিয়ে। পরে অরিজিনাল মাদক গুড়িপাড়ায় বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার এমন কিছু ভুক্তভোগী জানান, মিথ্যা মামলাসহ শুধুমাত্র হয়রানির লক্ষ্যে পলাতক আসামী করা হয়েছে তাঁদের। আটকের পরে মোটা অংকের উৎকোচ দাবি করেছিলেন পরিদর্শক রায়হান। অপর এক ব্যক্তি বলেন, তিনি গাঁজা খেতেন। গাঁজা না পেয়ে তাঁকে হেরোইন মামলা দেওয়া হয়েছে।

 

অন্য আরেক মাদক সেবী বলেন, আমি মাদক সেবন করি এটা সত্য। কিন্তু আমাকে ধরে হেরোইন দিয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে। প্রতিহিংসা ও আক্রোশের শিকার এমন অনেক ভুক্তভোগী বলেন প্রকৃত মাদক কারবারি বা বড় বড় ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করেন না তাঁরা। ওইসব ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বড় অংকের টাকা নেন তিনি।

 

গোদাগাড়ী’র সুমন নামে এক ব্যক্তি বলেন, প্রতিমাসেই একজন সিপাই দিয়ে এসব মাদক কারবারির নিকট থেকে মাসোহারা উত্তোলন করা হয়। মাদক কারবারিদের প্রেসক্রিপশনে কাউকে ফাঁসাতে হলে তাঁর বাড়ির পাশে মাদক লুকিয়ে অভিযানের নাটক সাজানো হয়। এরপর চলে দেনদরবার। টাকা দিলেও আসামী হবে, না দিলেও আসামী হবে। টাকা দিলে মাদকের পরিমান কমে, না দিলে বেড়ে যায় পরিমাণ।

 

সম্প্রতি গোদাগাড়ী’র পরমান্দপুর প্লট ব্যবসায়ী ও কৃষক পিয়ারুলের বাসায় অভিযান পরিচালনা করেন পরিদর্শক রায়হান। যদিও পিয়ারুল ওই বাসায় থাকেন না। তিনি চরে এলাকায় তার জমি জমা নিয়ে পড়ে থাকেন। তার বিরুদ্ধে পলাতক একটি মাদক মামলা রয়েছে। যদিও পিয়ারুলের দাবি প্রতিহিংসা বশত পলাতক মামলায় আসামী করা হয়েছে তাকে। ওই দিনের অভিযানে পিয়ারুলের বাড়িতে চলে অমানবিক নির্যাতন। শিশু বাচ্চাসহ পিয়ারুলের স্ত্রী ও প্রতিবেশি দুজন ব্যক্তিকেও মারধর করা হয়।

 

পিয়ারুলের স্ত্রী’র দাবি আমার স্বামী যদি অপরাধী হয় তাহলে তাঁকে বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি দেন। এর জন্য আমাদেরকে কেনো নির্যাতন করা হলো? ওই ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর দু দফায় আবারও পিয়ারুলের বাসায় যায় ডিএনসি’র একটি দল। এরপরও পরিদর্শক রায়হান উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের অনুমতিবিহিন তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানায়। প্রশ্ন থাকে একজন সরকারি কর্মকর্তা উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের অনুমতিবিহিন সংবাদের প্রতিবাদ দিতে পারেন কি না?

 

উল্লেখ, ২০২৩ সালের পর থেকে প্রতিমাসের মাদক উদ্ধারসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহী শাখার রিপোর্ট অনলাইনে দেওয়া হয় না। শুধু মাত্র প্রতিনিয়তই আটক ব্যক্তিদের নাম ছাড়া তথ্য দেওয়া হয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রাজশাহীর অনলাইনে।

 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক রায়হান আহমেদ খান বলেন, আমি ফোনে কোনো বক্তব্য দিবো না। স্বাক্ষাতে আসলে বক্তব্য দিবো।

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি এখন জুম মিটিং এ আছি। পরে কথা বলবো। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।


প্রিন্ট